পারমিতা রাহা হালদারের গল্প - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

Friday, January 17, 2020

পারমিতা রাহা হালদারের গল্প



 অতর্কিতে হামলা

            

ছুটি কাটাতে জন্মুতে আউট হাউসে বেড়াতে এলো সৌরভ তার স্ত্রী  আর পাঁচ বছরের মেয়ে সুরশ্রী কে নিয়ে । আউটহাউস উঁচু টিলারের উপরে থাকায় সেই অঞ্চলের পার্শ্ববর্তী বেশির ভাগ জায়গা দেখা যেত।

সৌরভদের দুদিন  হৈ চৈ করে কাটলো কিন্তু তৃতীয় দিনের দিল জঙ্গিরা আচমকা হামলা চালিয়ে বন্দি করলো আউটহাউসেই। তাদের অন্যতম শর্ত সরকারের কাছে বন্দি তাদের সর্দারের মুক্তি । জঙ্গিদের প্রধান সেলিম ,তার  বিশ্বস্ত নাসিম সেলিমের হুকুম তামিল  করতো। আউটহাউস দখলের পরেই  সরকার কে আবেদন পাঠানো হলো।

সরকারের হয়ে কমিশনার জঙ্গিদের সাথে সাক্ষাৎ করতে এসে সর্দারের মুক্তির দাবি গ্রহণ করে।

গৃহবন্দি দুদিনের পর সুরশ্রী ক্ষিদে সহ্য করতে না পেরে কান্নাকাটি  শুরু করলে  নাসিম ভয় দেখাবার জন্য  বন্দুকের নলটা মাথায় ছুঁয়াতেই আতঙ্কে সুরশ্রীর মায়াবী মুখটায় দুর্বল হয়ে পরে । ফ্রিজে থাকা কিছু ফল এনেও দেয় এরপরেই দুজনের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে।

 ছদিন কেটে যাওয়ার পরেও সরকার থেকে সর্দারের মুক্তি খবর আসে না ।এদিকে খাবারের অভাবে    সবাই দুর্বল হয়ে পড়ছে। সেলিম বুঝতে পারে সরকার তাদের মিথ্যা আশায় ঠকাচ্ছে।  নাসিম কে হুকুম দেয় বাড়িতে টাইমবোম অ্যাক্টিভ করে  সরকার কে সবক শেখাতে। 

দশ দিনের দিন সরকারি সৈন্য উদ্ধারের জন্য   এসে পৌঁছালে  দুর্বল জঙ্গিদের পক্ষে যুদ্ধ করা সম্ভব হয় না । অনায়াসে  সৈন্যরা ধরে ফেলে জঙ্গিদের। আউটহাউসে বোমা অ্যাক্টিভের জন্য সবাই কে বাইরে নিয়ে আসে। 

সবাই বাইরে আসলেও সুরশ্রী ভেতরেই থেকে যায়  । ওর খোঁজ করাতেই সেলিম হেসে বলে ওকে শোয়ার  ঘরে বেঁধে রেখে এসেছে । সেই সময় সৌরভ ছুটে যায় ঘরের ভিতর আর কোন ভাবেই সুরশ্রী কে উদ্ধার করতে পারে না । দিশেহারা হয়ে  বাইরে এসেই এক সৈন্যর কাছ থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নাসিম আর সেলিমকে গুলি করে। দুটো রক্তাক্ত দেহ লুটিয়ে পড়ে মাটিতে । সৈন্যরা শান্ত করতে হেডডাউন করে সৌরভ, দুর্বলতায় অজ্ঞান হয়।

 হসপিটালের বেডে সুরশ্রীর ডাকে জ্ঞান ফেরে সৌরভের। মেয়ের দিকে তাকাতেই মেয়ে প্রশ্ন করে নাসিম চাচা কোথায় ?

কমিশনার জানায় নাসিম বোমা ফিট করলেও  অ্যক্টিভ করে নি সেটা।  শুনেই সৌরভ চমকে উঠে!
অপরাধবোধ মনকে স্পর্শ করে,  নিজেকেই প্রশ্ন করে নাসিমের মৃত্যুটার কি আদৌও প্রয়োজন ছিল?