মনের দুয়ারে দাঁড়িয়ে দ্যাখা আকাশ
ঘর বলতে একটা ছোট্ট কুঁড়ে ঘর৷সব আমি দিয়েই আমার ঘরামিতেই বানানো৷ সকাল নেই, সন্ধ্যা নেই৷ অনর্গল বসে থাকা৷ দরজার কোনো প্রয়োজন নেই অর্থাৎ নট অ্যাপ্লিক্যাবল৷
তাই আমার কুঁড়ে ঘরের সব জায়গাতেই দুয়ার কাটা৷ আর প্রত্যেক দুয়ারে মন ভেজানো মাটির দাওয়ার মত পথ৷ যে দুয়ারে দাঁড়াই না কেন যেন আকাশটা আমার দুয়ারেই আছে৷
আকাশ দেখার বড়ো সাধ ছিল ছোটো বেলায়, তাই পড়ার খাতা নষ্ট করে কত যে ঘুড়ি বানিয়েছি তা আমার খাতা না দেখলে মিথ্যা মনে হবে৷সে রকম মিথ্যা মনে হয়েছিল আমার যখন আকাশের দিকে না তাকিয়ে ঘুড়ি হাতে ছুটতে ছুটতে হোঁচট খেয়ে খেয়ে পড়ে যেতাম আর কাগজের ঠোক্কর খাওয়ার ব্যাথায় মাঠের কোনে বমি করতাম কষ্টগুলো৷যখন দুহাতের ভর পিছনে ফেলে আকাশের কোণে সূর্যডোবা রঙে ক্রমে ক্রমে অন্ধকারের ভেতর তলিয়ে যাচ্ছিল তখন ভেবেছিলাম হয়তো এমনভাবেই আমি তলিয়ে যাবো৷
দেখতে আমার ভেতর আমির সাবালকত্ব টের পাচ্ছি, এদিকে সংগ্রামের অষ্টম প্রহর নিয়ে সবাই ব্যস্ত৷মায়ের মুখে,বাবার চোখে বিছালি ভরা দুঃখের কর্কশ জ্যামিতি পড়ার খাতায় সম্পাদ্যের মত আমি বিষম বাহুর ভেতর অন্তর্বৃত্ত এঁকে সব বাহতে না মেলানোর মত অবস্থায়৷ তারপর আর কোনো জ্যামিতি আঁকতে যাই নি৷আঁকতে শুরু করলাম জীবন৷জীবনের রং দেখতে আকাশ খুঁজতে লাগলাম৷আর আকাশ খুঁজতে গিয়ে একটা কুঁড়ে ঘর বানালাম৷
নিজেই নিজের ঘরের ঘরামি হয়ে দুয়ায় খুলে দাঁড়িয়ে রইলেম৷ আকাশের বিশাল উদারতায় নিজের মনের রেনস্পটগুলো বাতাসে উড়িয়ে আকাশের বলাকার সারিতে মিশিয়ে দিতে লাগলাম---
" ঐ যে আকাশের গায়
দূরের বলাকা ভেসে যায়
ওরা বাসা বাঁধে না
ওরা চঞ্চল ওরা উদ্দাম
................................."
ওদের চঞ্চলতায় আকাশ দেখার স্বপ্ন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি মনের দুয়ারে৷ সেই দুয়ারে সবার সম্পর্কের সারি দিয়েই
সাজিয়ে নিতে চাই আমাদের নির্মল আকাশ....
" আকাশ ভরা সূর্যতারা বিশ্বভরা প্রাণ
তাহারি মাঝখানে আমি পেয়েছি মোর স্থান৷"
----------
হরেকৃষ্ণ দে
গ্রাম পোঃপিড়রাবনী
জেলাঃ বাঁকুড়া
পিনঃ ৭২২২০৩
চলভাষ ঃঃ ৯৫৬৪৮৮৩৩২০
------