Featured Post
অণুগল্প । । উন্নয়ন ।। চন্দন মিত্র
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
উন্নয়ন
চন্দন মিত্র
প্রথমে যমুনোত্রী, অতঃপর গঙ্গোত্রী, কেদারনাথ হয়ে শেষে বদ্রীনাথ— এই হল অধুনা চারধাম। যাত্রাপথ দুর্গম, বিপদসংকুল। পুণ্য অর্জনের পথ, পরকালের পাথেয় সঞ্চয়ের পথ যদি সুগম না-হয় তাহলে কীসের উন্নয়ন ! ভিখারির মতো কাঁধে ঝোলা আর হাতে দণ্ড নিয়ে প্রবোধ সান্যালের মতো মহাপ্রস্থানের পথে যাত্রার যুগ শেষ হয়েছে। মনে রাখতে হবে এটা একবিংশ শতাব্দী।
পানাই পোখরির দেহাতি লোকজন একদিন সকালে উঠে দেখে তাদের গ্রামের নীচে লোকজনের তাঁবু পড়েছে। লোহালক্কড়, যন্ত্রপাতি সাজসরঞ্জাম দেখে তারা অবাক হয়ে যায়। পড়াশোনা জানা ছেলেরা গিয়ে জানতে পারে, দেশের প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুসারে রেলদপ্তর চারধাম রেলওয়ে প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে— সুড়ঙ্গ কাটা হচ্ছে; রেলপথ জুড়ে দেবে পবিত্র চারধামকে।
পানাই পোখরির নীচ থেকে সুড়ঙ্গ এগিয়ে চলে। মাত্র পঞ্চাশটি পরিবারের বাস এই পার্বত্য গ্রামে। চাষবাস, পশুপালনের মাধ্যমে তারা জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। পবিত্র একটি ঝরনা থেকে তারা পানের জল, কৃষিকাজের জল সংগ্রহ করে সারাবছর। ঝরনাটি যেন তাদের মা। যে-কোনো মাঙ্গলিক কর্মই সূচিত হয়, পবিত্র ঝরনার উদ্দেশে নৈবেদ্য নিবেদন করে। পরম্পরিত এই ধারা কবে থেকে চলে আসছে গাঁওবুড়োও তা জানে না। মাসখানেক পরে একদিন গোবিন্দ সিংহের বাড়ির পাথুরে দেয়াল থেকে কয়েকটি চাঙর খসে পড়ে। পরের দিন পরমেশ্বর গুসাইনের বাড়িটি দিনদুপুরে হুমড়ি খায়। অবশ্য তখন বাড়িতে কেউ ছিল না। মাসদুয়েক পরে পবিত্র ঝরনাটি শুকিয়ে খটখটে হয়ে যায়।
=================
চন্দন মিত্র
ভগবানপুর (হরিণডাঙা),
ডায়মন্ড হারবার,
দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা।
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন