Featured Post

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

ছবি
   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা ১২-১৪ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৫-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # *) ব্যবহার করবেন না। ৫) লেখার নীচে একটি ঘোষণা দিন:  'লেখাটি স্বরচিত ও অপ্রকাশিত'। মেল আইডি :  printednabapravat@gm

গল্পের অণু – পরমাণু ---শুক্লা মালাকার

গল্পের অণু – পরমাণু

---শুক্লা মালাকার


বাংলা সাহিত্যে ছোটগল্প এক মায়ার জগত। বাঙালীর জীবন সমাজ সংসার
হাসি-কান্নার আখ্যান, তার অনুভূতি ছুঁয়ে থাকে গোটা গল্প জুড়ে। পড়তে পড়তে
হটাৎ করে শেষ হয়ে গেলেও থেকে যায় অন্য এক রেশ, শেষ না হওয়া এক আবেশ।
ছোটগল্প সম্পর্কে বলতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন-

অন্তরে অতৃপ্তি রবে/ সাঙ্গ করি মনে হবে/ শেষ হয়ে হইল না শেষ

এই রবীন্দ্রনাথ ই একসময় ছোটতর গল্প লেখা শুরু করলেন। ১৩২৯ সালে তার
'লিপিকা' গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। প্রথম শোক, পট, নতুন পুতুল, এমন আরো অনেক
ছোটতর গল্প নিয়ে প্রকাশিত এই গ্রন্থ গল্প লিখিয়েদের সামনে নতুন এক আঙ্গিক
তুলে ধরে। এরপর আরো অনেক লেখক নানাভাবে ছোটতর গল্প লেখা শুরু করেন। এই
ছোটতর গল্প ক্রমে মেদ ঝরিয়ে আরো রোগাটে হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে রহস্যময়ী
হল। তার গঠন হল সাংকেতিক। ছোটতর থেকে ছোটতম হতে হতে কয়েক দশকের মধ্যেই
অনুগল্প নামে চিহ্নিত হল। মাত্র কয়েকটি বাক্যে লেখা নতুন আঙ্গিকের এই
গল্পের অনু অনেকটা দীর্ঘশ্বাসের মতো। শুরু করে শেষ করার মধ্যে বুকের
বাতাস হুস করে বেরিয়ে যায়। পড়া হয়ে গেলে অদ্ভুত এক বাতুলতার অনুভূতি হয়
যা অস্তিত্বের শেকড় নাড়িয়ে দেয়।

বিশ্বসাহিত্যে জার্মানির গল্পকার ফ্রানৎজ কাফকা তার রচিত দি ওয়ে হোম,
ডিসিশন, ভালচার ইত্যাদি নানা গল্পে প্রথম দেখান স্বল্প পরিসরে ঘটনাহীন
গল্প কতটা সাংকেতিক হতে পারে। জার্মানের বের্টল্ট ব্রেসট, টিয়াস,
আর্জেন্টিনার লুই গেহের্স, হুলিও কোর্তাজার, সুইডেনের নোবেল লোরিয়েট,
জাপানের ইয়াসুনারি কাওয়াবাতা বিখ্যাত সব অনুগল্প সংকলন লিখেছেন। বাংলায়
১৩২৮ সালে বনফুলের লেখা 'অজান্তে' গল্পটি প্রবাসী পত্রিকায় ছাপা হয়।
মাত্র তেইশ লাইনের এই গল্প পাঠকের হৃদয়কে উথাল পাথাল করে। তিনিই বাংলার
অনুগল্প লিখিয়েদের প্রকৃত পূর্বসুরী। বনফুলের লেখা প্রায় ৫৭৮টি গল্পের
ভেতর ৮০/৯০ ভাগই অনুগল্প। ডায়ারি, আত্মকথনমূলক, খরচের হিসেব লেখার মতো
করে লেখা, গদ্যপদ্যের সংমিশ্রণে তৈরি, সংলাপধর্মী এমন আরো নানা আঙ্গিকে
লেখাগুলি বিচিত্র মানব জীবনের বহুবিচিত্র স্বাদের সন্ধান দিয়েছে।
গল্পগুলি একেবার সঠিক মাত্রায় বিন্দুতে সিন্ধু।

অনুগল্পের উৎস খুঁজতে গিয়ে পেয়ে যাই বিষ্ণুশর্মার লেখা পঞ্চতন্ত্র,
হিতোপদেশ,বিভিন্ন দেশের নীতিকথা। পুরাণের ছোটছোট আখ্যান, বাইবেলের
প্যারাবেল, আমাদের রামকৃষ্ণের বলা গল্পগুলিও। বীরবল, নাসিরুদ্দিন,
গোপালভাঁড়ের গল্প তো বটেই। সব এক একটি অমৃতের ভান্ডার। বাংলা ছাড়াও
বিভিন্নদেশের লোককথার গল্পগুলিও অনুগল্প। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় তার লেখায়
জাপানী ও এস্কিমোদের লোককথার প্রচুর নমুনা দিয়েছেন। সেখানেও ছোটছোট
লোককথার বারবাড়ন্ত। তাঁর কথায় অনুগল্প হল- একটি মুহুর্তবিলাস, একটা মনন ও
মেজাজের তাৎক্ষণিক উদ্দীপন।

১৯৬৯ খ্রীষ্টাব্দে প্রকাশিত হয়েছিল সম্ভবত বিশ্বের প্রথম অনুপত্রিকা
'পত্রানু'। বাংলার কবি ও গবেষক অমিয় চট্টোপাধ্যায়ের সম্পাদনায় এই
অনুপত্রিকায় বহুবার প্রচ্ছদ এঁকেছেন সত্যজিৎ রায়, পুর্নেন্দু পত্রী।
ত্রৈমাসিক এই পত্রিকা অনুগল্পের ধারাকে অনেক এগিয়ে নিয়ে এসেছে। এরপর
'কফিহাউস' নামের পত্রিকাটি আসরে নামে এবং দীর্ঘ বছরগুলিতে অনুগল্পের
ধারাকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। কিছুদিন আগে পর্যন্ত বাংলার অনুগল্পগুলিতে
পাশ্চাত্যের গল্পগুলির মতো শ্যাডো, ইলিউশন বা অ্যালিউশনের আলো আঁধারি
পাওয়া যেত না। আজকালকার লেখকেরা তাঁদের অনুগল্পে ফুটিয়ে তোলেন দারুণ সব
সংকেত গর্ভ, ইলিউশন তো বটেই। সেই কারনেই বোধহয় প্রায় সব ম্যাগাজিন বা
ওয়েবজিনেই আজকাল অনুগল্পের রমরমা উপস্থিতি।

অনেকে বলেন অনুগল্প হল গল্পের বনসাই। কিংবা গল্পের মিনিয়েচার। লেখককে
মাত্র কয়েকটা লাইনেই দেখাতে হবে যাবতীয় খেলা। এ যেন এক ডুবে নদী পারাপার।
বছর দুই আগে রঞ্জন ঘোষালের 'কড়াপাক নরমপাক' অনুগল্প সংকলনটির প্রস্তাবে
লেখক বলেছেন অনুগল্প হল গল্পের জগতের আইপিএল। প্রতিটি বাক্যে থাকতে হবে
চার ছয় কিংবা উইকেট পতনের উত্তেজনা। গল্প পরিনতির দিকে যত গড়াবে তত বাড়বে
স্নায়ুযুদ্ধ আর ওই অল্প সময়ের মধ্যেই ঘটাতে হবে বিশ্বরূপ দর্শন।

ছোটগল্পের সীমা ভেঙেই অনুগল্পের জন্ম। গল্পের মতো হাত পা না ছড়িয়ে
বাকসংযম, ক্ষিপ্র গতি আর নিবিড় অনুভব দিয়ে রচিত হয়ে চলেছে আজকের দুরন্ত
সব অনুগল্প। লেখক গল্প লেখেন পাঠক তার মনে সেই গল্পের ছবি তৈরি করেন তবেই
গল্প সম্পূর্নতা পায়। ছিপছিপে টানটান সতেজ এইসব অনুগল্প পড়ে কল্পনাপ্রবণ
বাঙালী মন অনায়াসে একটি উপন্যাস রচনা করে নিতে পারে। একটি বিখ্যাত
অনুগল্প দিয়ে শেষ করি-

দুজন শিকারি, একটি সিংহ।

একজন শিকারি, একটি সিংহ।

একটি সিংহ।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৯তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮০তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩১ অক্টোবর ২০২৪

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

মুদ্রিত নবপ্রভাত উৎসব ২০২৩ সংখ্যার ডাউনলোড লিঙ্ক