কাব্যগ্রন্থ : ভালোবাসা , তোর জন্যে ...
কবি : গৌতম রায়,
মননভূমি প্রকাশন
মূল্য -১২০ টাকা
প্রচ্ছ্দ, অলংকরন ও বর্ণসংস্থাপন --গৌতম রায়
তুমি রবে নীরবে হৃদয়ে মম...
********************************
জগবন্ধু হালদার
কবি আপন মগ্নতায় অতলান্তিক ভাবের অতলে পদচারন করতে করতে সমাজ, সংসার
,সম্পর্কের আনাচ-কানাচ ঢুঁ মেরে দেখেন। ভাবেন, অন্তরে ধারন করেন। তারপর
তাকে সযত্নে ফুটিয়ে তোলেন কবিতার ক্যানভাসে। তাই তিনি দ্রষ্টা,
সত্যদ্রষ্টা, সপ্নদ্রষ্টা। আলোচ্য কবি গৌতম রায়-এর "ভালোবাসা , তোর
জন্যে ... ...' এমনই এক কবিতা সংকলন(৪৯ টি) যার পাতায় পাতায় ধরা আছে
দ্রষ্টার অভিজ্ঞতা, অনুভূতি, অকপটতা। যা আমাদের ভাবায় -- বলা যায় ভাবতে
বাধ্য করে ,ঘোরায় এবং বিবশ করে। ভালোবাসা কী এবং কেন ? সে কী কেবলই
পিটইুটারির জটিল ভেলকিবাজি ? নাকি চিত্তদৌর্বল্যের বহিঃপ্রকাশ কেবলই ?
কিন্তু কবি তো এইসব শুকনো চিন্তার পসারী নয়, তার ভাবের সুুক্ষ্ম
র্যাডারে ধরা পড়ে ভালোবাসার রূপ-রস-গন্ধ-বর্নের বৈচিত্রময়তা ।"ভালোবাসা'
এই শব্দবন্ধের নাছোড় বাঁধনকে উপেক্ষা করে এমন বুকের পাটা কই ? বরং
"অপেক্ষা'য় কাটে দিন, রাত ,এমনকি গোটা জীবনও । বাউল মনও ফিরে আসে বৈঠকি
গানঘরে ।
"পাঁকের থেকে বাঁ পা টেনে তুললে ডান পা গেঁথে যায়
কোথাও যাওয়া হয়না একটা সাবেকি ভালোবাসা এসে
তাকে বেঁধে ফেলে আসার মতো কিছু নেই জেনেও
ফিরে আসে বার বার ফিরে আসে '
কবি গৌতম রায়ের এই কাব্যগ্রন্থে সযতনে রক্ষিত আছে ভালোবাসা-নির্ভর
,ভালোবাসা-জাত, ভালোবাসা-জনিত কিছু অনুভূতি, স্মৃতি, টানাপোড়েন, হাতছানি
আর অমোঘ টানের একরোখা উচ্চারণ। গ্রন্থের নামকরণের শেষে প্রদত্ত ফুটকি
গুলোই জানান দেয় সে কথা । বইটি পড়তে পড়তে একটা দুর্নিবার নেশা আমাকে গ্রাস
করে । একবার, দ্বিতীয়বার, তৃতীয়বার পড়তে বাধ্য হই এক অদ্ভুত মাদকতায়।
মাথাটা কখনো ভারী, আবার কখনো হালকা বলে মনে হয়েছে । কখনো ঝিম মেরে বসে আছি
ভ্যাবলাকান্তের মতো আবার কখনো প্রখর চৈতন্যে উল্টে দিচ্ছি ঘট । অবশেষে
সিদ্ধান্ত ভালো, ভালো, বেশ ভালো ।
মানুষের অস্তিত্বের জীয়নকাঠি লুকানো আছে এককতায় নয়। একতায়,
পারিবারিক আন্তরিকতায় । এই চরম সত্যের ধরতাই আছে প্রথম কবিতা "অপেক্ষা'য়।
জন্ম-দাগ চিহ্নিত ভিটেয় থাকে প্রকৃত শান্তির ওম । সারাদিন ইতিউতি ঘুরে
ক্লান্ত চরণে সেই নীড়ে ফিরে পাখি পায় অনাবিল আনন্দের ছোঁয়া ।
"আমি শুধু , পালক না ওঠা পাখিটির মতো শুয়ে থাকবো তোমার বুকের ওম-এ ।
চেয়ে থাকবো । অপেক্ষায় থাকবো ।জানি,একদিন তোমরা ঠিক ফিরে আসবে ।
বিলাসবহুল পর্নকুটির মাড়িয়ে একদিন ঠিক ফিরে আসবে তোমরা--'
কবির উপলব্ধি ও উক্তির মিশ্রণে তৈরি হয় এমন এক পানীয় যা পাঠককে মাতাল করে। বুকের পিপাসা বাড়ায় ।
" .......বন্ধুস্বজনের এই ভালোবাসার রোদে
গুঁড়ি গুঁড়ি হিম জেগে আছে । ....... কমলালেবুর
খোসা থেকে ছলকে উঠছে , উজ্জল সেই লজ্জাবতী গন্ধ । আর নারকেল পাতার
চেরা বাতাসে ভাসছে, ইঙ্গিতবাহী কোনো একলা দোয়েলের শিস ।'
কবি রোম্যান্টিক , কবি ভাবুক, সংবেদী । কবির গভীর জীবনবোধ এবং ভাব
তন্ময়তা লক্ষ্যনীয় । তাই মুহুর্তের আন্তরিকতায় "ভুট্টার দানার মতো/ সোনালি
উষ্ণতা আর ভুটানি ভূগোল-এর খোঁজে / ..........পাকদন্ডি পাথর ভেঙে ভেঙে
জীবনের রসদ / তুলে আনতে, চোখের কাজলটুকুও গলে পড়ে / জ্যোৎস্নার জলে ' ।
আবার মুহুর্তের অহং এসে ভাঙে খেলা । কারন ভালোবাসায় সবকিছু তুচ্ছ্ হলেও
অহংকারী দেয়ালের উঁচু মাথাটি বোধহয় খুব অসহ্য । "কখন যে / কার বুকে মেঘ
ঝরে পড়ে , কার চোখে ছেঁড়া-ছেঁড়া জমে হিমবাহ -- । ' তখন ঘর পোড়ে , স্বপ্ন
পোড়ে । "বিছানা তোষক ছিঁড়ে' ঘুম ক্রমশ অধরা হয় । অহংকারী সূর্য ভালোবাসার
কার্নিসে দাঁড়িয়ে তছনছ করে ঘর ও বাহির । কবি ফেলে আসা জীবনের টুকরো
স্মৃতি, টুকরো ভুল, টুকরো অভিমান, অভিসার , বিরহ-বিষাদ আর আক্ষেপের কোলাজ
সাজিয়ে ক্রমে ক্রমে দৃশ্যের মেলা বসিয়ে মুগ্ধতার মৌতাতে সত্যিই অবশ করেন
পাঠকের মন ।
"তাই যুদ্ধ-জাহাজ কোনটা--আর কোনটা যে জাহাজী-লড়াই
এত দিনেও সেটা বুঝে উঠতে পারলো না কেউ । এটাই তো জয় ।' ভাবুন ! ভাবনার কৌনিক
বিচরন কীভাবে আমাদের ভাবতে বাধ্য করে ।
"আমাদের ঘুড়ি ও লাটাই, আমাদের বাতাবি লেবুর ফুটবল,
আমাদের অলৌকিক ডানার উড়াল, সবই আজ মুখিয়ে আছে বুকে বুকে ।'
কবির ভাবনার দোসর হতে গিয়ে আমরাও টের পাই দরজায় মৃদু টোকা । সুুগন্ধিত
বাতাসের আলিঙ্গন । সেই সব হারানো দিনের উঠোন এসে ডাক দেয় অতর্কিতে ।
কবি গৌতম রায়ের লেখায় নিজস্বতার রং যেমন গাঢ় , তেমনি সময়ের দাবিকে
মান্যতা দিয়ে চলমান সমাজ-সংসারের ঘটমান চিত্রকে একাধিক অ্যাঙ্গেলে
চিত্রায়িত করে সুুচারু পরিবেশনের অভাবনীয় কাব্য কৌশল সুুস্পষ্ট ।
"এত কোলাহল চারিদিকে / এত কলতান---ছোঁয়াই যায়না কিছু ।'
তবু "নিজেরও তো একটা কন্ঠস্বর চাই, বল.
যে স্বর শুনলে উথলে উঠবে শরীর । আর জোয়ার
নামবে শিমুল পলাশের বনে---। শুধু তোর জন্যে ।
অথচ হই হট্টগোলে -- কে যে কার কথা শোনে ---'
অথবা " যে স্বর জাগলে , পাখিরা বসবে হাতে এসে , আর
দানা খাবে তালু থেকে তুলে । শিস দেবে ।
শাল-মহুয়ার মঞ্জরীরা খুলে দেবে বুকের পাঁজর । '
সত্যি , বাংলা কবিতায় হট্টগোল বেড়েছে । বাড়ছে । যদিও সেটা কুলক্ষণ নয় ।
আমার মতে । কারন সেখান থেকেই তো কাল খুুজে নেবে যোগ্য স্বরকে । একটা কবিতা
প্রসবের পর কবি যতই আট খানা হন আহ্লাদে তাঁর অন্ত রের শূন্যতা কিন্ত কমেনা। একটা বিষাদ, একটা খিদে, একটা অতৃপ্তি যেন তাকে ডাকে মুহুর্মুহু , তেমনি
আমরাও পড়তে পড়তে আচ্ছ্ন্ন হই সেইসব হিজিবিজি অক্ষরে , ঘোরাঘুরি করি পৃষ্ঠায়
পৃষ্ঠায় । কী এক নেশা ,কী এক শূন্যতা । ছটফট করি । অথচ কবির প্রশ্ন --
"শূন্য বলতে ঠিক কী বোঝা যায় ।ফাঁকা মাঠ ? ধূ-ধূ -প্রান্তর ?
ধানকাটা হয়ে গেছে । বাদাময় নাড়া, আর ভারাই পাখির পালক ।
অথবা, সাদা পৃষ্ঠা বরাবর হেঁটে যাচ্ছে ভোরের পিঁপড়েরা
জানালার গরাদ ফাঁকে বসে বিবেক চড়ুই, ছায়া ফেলছে পাতাটির উপর ?' (শেষ
লাইনটি আর একবার পড়ুন ) ঠিকই তো । শূন্য মানে কী ? অন্ধকার ? নিঃসঙ্গতা ?
নির্জনতা ? অপ্রেম ? মৃত্যু ? যথার্থ উত্তর কোনটি ? কিন্তু কবি বলেন --
"উত্তরটা ঠিক ধরা যায় না --
আমি যতই উত্তর দিকে সরে যাই
আমার ডান হাতকে দক্ষিণ বলতেই হয়
এবং বাঁ হাত বরাবর উত্তর
আমি যতই উত্তরের দিকে সরে যাই
উত্তরটা ঠিক ধরা যায় না --'
শব্দ কীভাবে প্রচলিত অর্থসীমা ছাড়িয়ে বিস্তৃত হয়ে পড়ছে ভাবুন । আর একটি নমুনা --
"তাই সকলকে ডেকে বলল -প্রতিদিন ক্ষয়ে যাওয়ার থেকে, এসো
সনাতন কালের জন্য আমরা সম্পর্কটা ফুরিয়ে নিই --
#
এবং কী আশ্চর্য, এভাবেই ফুরিয়ে গেল আমাদের হৃদয় ।'
এমন চমৎকারিত্ব , শব্দ ব্যবহারে এমন নিজস্ব নৈপুন্যতা দেখি বহু কবিতায় ।
কবিতাগুলি পড়তে পড়তে একটা ইমেজ ভেসে ওঠে চোখের সামনে । একটা অনির্বচনীয়
ঘোরে অটোমেটিক্যালি বুজে আসে চোখ । এটা কি নেশা নয় ? এই নেশার উপকরণ
ছড়ানো আছে শব্দে শব্দে , পংক্তিতে পংক্তিতে । পান পাত্র হাতে আপনি
ঢুলুঢুলু চোখে দেখতে পাবেন -
"খালের জলে একটা চাঁদ হাসছে । আর শ্বেতাভ মেঘমালা
খেলা করছে , সমুদ্রনীল জলীয় আকাশে ।
ভেড়ির নাবাল ঘেঁসে তুই । তুই আর আমি । হেলে পড়া বাবলার
জ্যোৎস্না ছায়ায় বসে আছি ।রাতচরা কুবো, ডাক ছিল
কুব--কুব--কুব--। খুব কি অস্থির ছিল মাটি ?
তবে কেন জড়িয়ে ধরলি এই বাহুর কানাচ ।'
এমন অখুঁত ছবি , সুুক্ষ্ম অথচ দুর্নিবার যার ছোঁয়াচ , যার মাতাল-মায়াবী
আহ্বান আমাকে মুগ্ধ করে । আধুনিক কবিতা পড়ে আর আনন্দরসে ভেজে না মন -এমন
অভিযোগ করেন অনেকে, তাঁদের জন্য এ গ্রন্থ সংগ্রহযোগ্য নিশ্চিত । পাঠককে
অনুরোধ করবো "বনলতা সেন-২০১৫' কবিতাটি পুরোটা পড়তে । অন্ততঃ তিনবার ।
কিংবা "একটা নদী ছিল' কবিতাটি । আপনিও অনুভব করবেন কবিতা কীভাবে ধমনী
ধারায় মিশে হয়ে ওঠে আত্মীয় । কীভাবে সুুর হয়ে ধরা দেয় হৃদয়ের একতারায় ।
ভালোবাসার অনেক নাম । "বস্তুর ভিতরে কিছু অবস্তুও খেলা করে যায় ।'
কবি দেখেন -
" শুধু, নদীর পাড়ে পাড়ে চাঁদ এসে চুমু খেত । তার একাকার চুম্বনে--
জেগে উঠত রাতচরা পাখিরা । আর সেই পাখিদের ডাকে
চোখ মেলে দিত রজনীকুসুুম । গন্ধ ছাড়তে ছাড়তে তারা
নেমে যেত , একধাপ--দু'ধাপ-- ক'রে সিন্ধুবাহারে ...।'
আর ".......কুসুুমের বন থেকে উঠে /পাখিদের শীৎকার কীভাবে যে ভালোবাসা
হয়ে ফুটে ওঠে !'
প্রতিটি মানুষের বুকের গোপনে থাকে একটা টলটলে দিঘি । সেই দিঘিজলের আবছা
প্রতিবিম্বের সামনে হাঁটু মুড়ে বসে আমরা কখনো দংশিত হই , কখনো কখনো হয়ে
উঠি জীবন্ত । নির্মিত হয় কবিতার শরীর । তারপর শব্দের তীর নিক্ষেপে হয় কবিতার
প্রান সঞ্চার । এক চিমটে নুন যেমন কোনো যন্ত্রণা কে করে তোলে অসহ , তেমনি
এক নখাগ্র মলমও সারিয়ে তোলে বিষাক্ত ক্ষত । এ সবই তো ভালোবাসা ।
ভালোবাসাহীন সমাজ হিংস্র বাঘের জন্ম দেয় । বাঘের শক্তি বাড়ায় । তার
তীব্র হুংকারে হিম হয়ে যায় হাড় ।
" যে আওয়াজে জিনস-এর প্যান্টো কেমন সিক্ত হয়ে যায় ।
যে আওয়াজে অন্ধকার ঘনিয়ে আসে গাছের পাতায়
বাঘিনীরা দ্বীপান্তরিত হয় সেই ঘনিষ্ট আধারের ডাকে ।'
আবার ""না আমি তোমার সঙ্গেই যাব' -- এই শব্দবন্ধন / উচ্চারিত হয়েছিল একই
সঙ্গে মেঘে ও বিদ্যুৎ-এ । / নির্ভরতা থেকেও বড় বেশি ভালোবাসা-নির্ভর / এই
ধ্বনির ঝলক, ঝলসে দিল সময়ের রক্তিম চোখ। .... এইটুকুই বেঁচে থাকা ।'
কিংবা "চারিদিকের মানুষেরা আজও, কত দুঃখে আছে । আর
আমি তোমার জন্য জেগে আছি রাত ।তুমি শুধু ভালোবাসার
আমার ঘুমিয়ে পড়া গান তুমি । আমার কবিতা জাগানোর দুঃখ--।'
ভালোবাসা -প্রেম-দুঃখ-ব্যাথা প্রত্যেক কবির অমূল্য সম্পদ । "বুকের ফল্গু
থেকে ভেসে উঠছে চোখের নির্ঝর । /ও তোমার কত যে নিবিড় সম্পদ, তুমি জানো না ।
'সেসব জড়িয়ে তাঁর দিন কাটে । সমর্পিত হৃদয়ে চলে ফসল বোনার আয়োজন । নিজেকে
নিঃস্ব করে । কখনও অনাবাদি জমিতে ফোটে ফুল । কখনও পন্ডশ্রমে কাটে সারাদিন
। ভালোবাস দুর্লভ ।ভালোবাসা অমূল্য । তাই
"আঁচের তাত বাঁচিয়ে,যেটুকু আছে থাক না --
আমার নিজস্ব থেকে নানা--
পুতুল ভেঙেছে , চিড় ধরেছে ফুলদানির কাঁচে ।
তবু , সামান্য কিছু যা বেঁচে আছে --থাক ।'
কবিকে বিজনবিহারী হতেই হয় । নিৰ্জন ছায়ায় কিংবা রৌদ্রে বসে কবি শব্দকে
জড়িয়ে ধরেন আষ্টেপৃষ্ঠে । শব্দকে ভালোবেসে অহরহ তার দিনযাপন । একজন কবির
সব স্বর , সব অনুভূতির ঠিক ঠিকানা পাওয়া দুরুহ । কবি নিজেও বোধ হয় হিমসিম
খান ঠিক সেই মুহুর্তের ছটপটানিকে শব্দ ও অক্ষরে প্রকাশ করতে । সেখানে আমার
ক্ষমতা তো নৈব নৈব । তাঁর আবেগ, তাঁর অস্থিরতা, তাঁর আকুলতা সব কী
বোধগম্যতার বেড়াজালে আটকে নিতে পারি ? নিশ্চই নয় । তবে কবিতা নাকি বাজার
জিনিস । এবং দিব্যি খেয়ে বলতে পারি কবি গৌতম রায়-এর কবিতাগুলি হৃৎপিন্ড
থেকে শিড়দাঁড়া বেয়ে গুরুমস্তিস্কের কোশে কোশে বেজে ওঠে । বেজে উঠি এবং
সোৎসাহে বলে উঠি --
"ভালোবাসা তোর জন্য আর কত নামি
ভালোবাসা তোর জন্য এই ক্ষত দাগ
ভালোবাসা আমাদের বিষগুলি নিয়ে
কামড়ে-আঁচড়ে তবু কাঙালিনী কর
.............................................................
আত্মরতি ভোগ করি আত্মরতি খাই
তবুও অজান্তে থাকি তোর প্রতীক্ষাতে
দিনভোর হাপু খেলা পিঠে কালসিটে
তোর চোখে যদি ফোটে আলোর ভেলকি '
কংক্রীট-আবাসনের জঙ্গলে দম বন্ধ কবির উচ্চারণে বারবার চলে আসে গাছ-গাছালি,
ঘাস-মাটি ঘেরা পল্লী জীবনের নান্দনিকতা । "বাংলার নদী মাঠ ভাঁটফুল'-এর
প্রতি কবির রক্ত-কোশ-কলায় বহমান এই ভালোবাসাকে কুর্নিস জানাই ।
প্রতিটি কবিতার সাথে প্রাসঙ্গিক অলংকরণ গ্রন্থের শ্রীবৃদ্ধি করেছে ।
প্রচ্ছ্দ সুুন্দর । দু-একটা বানান ভুল চোখে পড়ল । তবে সামগ্রিকভাবে এ বই
পাঠক এবং বিদ্বজনের মনে দাগ কাটবেই ।পাঠকদের আন্তরিকভাবে অনুরোধ করনো বইটি
পুরোটা একাবার অন্ততঃ পড়তে । অবসরে । নিভৃতে । কবির নীরোগ দীর্ঘায়ূ কামনা
করি কায়মনোবাক্যে ।
#কান্তরেণু পত্রিকায় পূর্ব প্রকাশিত।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন