google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re স্বরূপা রায়ের গল্প - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

রবিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৮

স্বরূপা রায়ের গল্প

যথার্থ সময়


সদ্য গর্ভস্রাবের শারীরিক কষ্ট কাটিয়ে বাড়িতে এসেছে দৃষ্টি। মানসিক কষ্টটা
এখনো মনের গহনে বিরাজমান। এই নিয়ে তিন নম্বর বার ওর গর্ভস্রাব হলো।
বাড়ির চৌকাঠে পা রাখতেই দৃষ্টির শাশুড়ি রিতাদেবী বলে উঠলেন, "কোন কুক্ষণে যে
এরকম অলক্ষ্মী মেয়ে আমি এই ঘরে নিয়ে এসেছিলাম ভগবানই জানে! বিয়ের ৭ বছর পরেও
এখনো পর্যন্ত আমাদের নাতির মুখ দর্শন করাতে পারলো না।"
"আহাঃ মা! দৃষ্টি সদ্য নার্সিংহোম থেকে ফিরেছে। ওকে একটু শারীরিক আর
মানসিকভাবে নিজেকে সামলাতে দাও।" দৃষ্টির স্বামী অমিতাভ বললো।
"এ তো এখন রোজকার ব্যাপার হয়ে গেছে। আমি এখনো বলছি তোকে, সময় আছে এখনো, ওকে
রেখে আয় ওর বাপের বাড়িতে। তারপর ডিভোর্স দিয়ে আরেকটা বিয়ে করে আমাকে এ জীবনে
মরার আগে নাতির মুখটা দেখা।" রিতাদেবী বললেন।
"ওহ মা প্লিজ!" বলে অমিতাভ বিরক্ত হয়ে চলে গেল।
দৃষ্টি কিচ্ছু বললো না। এসব কথা কয়েক বছর ধরে ও রোজ শোনে। আর রোজকার মতোই আজও
ওর চোখের কোণে জল।
নিজেকে একটু সামলে মনটা অন্যদিকে ঘোরানোর জন্য মোবাইলটা হাতে নিয়ে
হোয়াটস্যাপটা খুললো।
নিলের মেসেজ, "কিরে কেমন আছিস এখন?"
দৃষ্টি জবাব দিল, "ভালো না রে। শরীর আর মন কোনোটাই ভালো নেই।"
"বাড়ি ফিরেছিস?" সাথে সাথে নিলের মেসেজ এলো।
"হ্যাঁ কিছুক্ষণ আগেই।"
"তোর বর বা বাড়ির কেউ কিছু বলেননি তো?"
"বলেনি আবার? উঠতে বসতে শাশুড়ি কথা শোনাচ্ছেন।"
"পাত্তা দিস না।"
"আমার মনে হয় সংসারটা টিকবে না রে।"
"কেনো কি হলো?"
"আমার শাশুড়ি স্বামীকে জোর দিচ্ছে আমাকে ডিভোর্স দেওয়ার জন্য।"
"সে কি রে?"
"হ্যাঁ এটা অনেক দিন ধরেই চলছে।"
"ওটা মুখের কথা বলছে, কিচ্ছু হবেনা।"
"না রে আমি জানি কিছুদিন পরেই অমিতাভও আমাকে ডিভোর্স দিতেই চাইবে। কারণ, আমি
এখন বুঝতে পারি যে ওর আমার প্রতি টান কমে গেছে।"
"ওসব ভাবিস না। আমি আছি তোর সাথে সবসময়।"
"জানি রে।"
"আচ্ছা এখন বিশ্রাম কর। আমি পরে আবার খোঁজ নেবো।"
"ঠিক আছে।"
মোবাইল এর স্ক্রিনটা অফ করে পকেটে ঢুকিয়ে নিল ভাবলো, "যে দৃষ্টির জন্য আজও
অন্য কাউকে ভালোবাসতে পারলাম না, সে আজও আমার শুধুই বেস্টফ্রেন্ড। সময় থাকতে
নিজের মনের কথা বললে পরে আজ দৃষ্টি আর আমি কত সুখে থাকতে পারতাম। দৃষ্টিকেও আজ
এত কষ্ট সহ্য করতে হতো না।"

নামঃ স্বরূপা রায়
ঠিকানাঃ উত্তর ভারতনগর, ১০, বটুকেশ্বর দত্ত সরণি, পো- রবীন্দ্র সরণি, জেলা-
দার্জিলিং, শিলিগুড়ি-৭৩৪০০৬
ফোন নংঃ ৮৬৩৭৫২৮৯২৫


৩টি মন্তব্য: