google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re গদ্য ।। আমার মা ।। অঙ্কিতা পাল ( বিশ্বাস ) - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

শনিবার, ১৫ মার্চ, ২০২৫

গদ্য ।। আমার মা ।। অঙ্কিতা পাল ( বিশ্বাস )

 


আমার মা 

অঙ্কিতা পাল ( বিশ্বাস )

আপামর বাঙালির কাছে নারীকে দেবী দুর্গার সাথে তুলনা করা হয়। আমরা মনে করি তিনি হলেন নারী শক্তির উৎস। কিন্তু আধুনিক সভ্যতার যুগেও কি নারীরা স্বাধীন? এই প্রশ্ন আমার মাথায় ঘুরতে থাকে অনবরত।
প্রতিটি পরিবারে আজও কন্যা সন্তানের জন্মগ্রহণ কে ভালোভাবে মেনে নিতে পারে না এই সমাজ ; তাদের ভ্রান্ত ধারণা - বংশে বাতি দেবে কে? সমাজের কোনো মেয়ের সন্তান যদি ডাক্তার হন, তাকে পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নিতে হয় এই তো কিছুদিন আগের ঘটনা।।
সমাজে আজও পন প্রথার বলি হচ্ছেন অনেকেই গৃহবধূ - কেউবা আবার মানসিক যন্ত্রণার শিকার।।
একজন নারীগন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যে লড়াই করেন  কেউ কি তার দাম দেয় আজও?
কোন মহিলা যদি কোনো ক্রীয়া বা দূরদর্শন বিষয়ক কাজের সাথে সংযুক্ত থাকেন তাকে কটাক্ষ করে উপহাস করে এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজ।।
আমরা প্রায়শই  টিভির পর্দায় বা খবরের কাগজের চোখ রাখলেই দেখতে পাই - ছোটো ছোট মেয়ে বাচ্চা শিশু কে মাঝে মাঝে লালসা শিকার হতে হয় হচ্ছে। আমরা সমাজের কোন পর্যায়ে দাঁড়িয়ে আছি ভাবতেই গা শিউরে ওঠে? কিন্তু এই সমাজ ব্যবস্থা কি করছে, কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে, এর কোনো প্রতিকার হচ্ছে কি?
    
       যাই হোক আমার চোখে আদর্শ নারী হচ্ছেন আমার মা। ছোট্ট বেলা থেকে দেখতাম ভোর পাঁচটা থেকে উঠে একাধারে সংসার সন্তান সামলে স্কুলে যেতেন। তিনি গাঁতি জগন্নাথ স্মৃতি বিদ্যালয়ের ইতিহাসের শিক্ষিকা ছিলেন এবং ৩২ বছর ধরে সেখানে শিক্ষকতা করেছেন। ঠাকুমা ছিলেন  যদিও তবুও সারাদিন পরিশ্রমের পর আমাদের দুই ভাই বোনকে নিয়ে পড়াতেন বসাতেন তারপর আবার নিজস্ব কাজকর্ম সেরে সকলে বিশ্রাম করতাম আমরা।
মায়ের কাছেই শিখেছি কি করে ঘর বাহির একসাথে সামাল দিতে হয়।
রবিবার ছুটির দিন সকালে বাবা গণিত করালেও মা অন্যান্য বিষয়গুলির ওপরে সন্ধ্যেবেলা জোর দিতেন। শিশুর প্রথম হাতে করে হয় মায়ের কাছ থেকেই।।
বাংলা বর্ণমালার অ আ ই ঈ......... স্কুলে শেখালেও তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে সেগুলো করিয়ে দিতেন।
এইতো সেদিনের ঘটনা, আমরা সপরিবারে মুর্শিদাবাদ ভ্রমণে গিয়েছিলাম, তিনি কি সুন্দর করে দুই নাতনিকে কাছে টেনে হাজারদুয়ারি পরিদর্শন করতে করতে সিরাজের জীবন ইতিহাস-বৃত্তান্ত ও পলাশীর যুদ্ধ সম্পর্কে বুঝিয়ে দিলেন। মতিঝিলে থাকা ঘাসেটি বেগমের বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনা ও ভাগীরথীর ওপারের খোশবাগে থাকা কবরস্থল গুলি কোনটি কার সে সম্পর্কে নানান কাহিনীর বর্ণনা করেছেন তিনি...........
সেবার বাঁকুড়ায় গিয়ে বিষ্ণুপুরের প্রাচীন মন্দির গুলি ও মুকুটমণিপুরে ভৌগলিক বিষয়ে অনেক কিছু বুঝিয়ে দিয়েছিলেন।
সবশেষে এ কথা বলতে পারি আমার মা শ্রেষ্ঠ।।।।

-------------------

নাম - অঙ্কিতা পাল ( বিশ্বাস )
ভাঙ্গড়  দক্ষিণ ২৪ পরগনা


 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন