google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re ফিচার।। এই মুহূর্তে বাংলা সাহিত্যে নারীদের লেখালেখি ।। নিবেদিতা দে - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

শনিবার, ১৫ মার্চ, ২০২৫

ফিচার।। এই মুহূর্তে বাংলা সাহিত্যে নারীদের লেখালেখি ।। নিবেদিতা দে


এই মুহুর্তে বাংলা সাহিত্যে নারীদের লেখালেখি 

 নিবেদিতা দে


"আমি প্রকৃতি আমি সৃষ্টি আমিই নারী।" প্রত্যেক নারীর মধ্যেই সৃষ্টির এক সহজাত প্রবৃত্তি আছে। আপনি বাজার থেকে কাঁচা সবজি এনে দিন, নারী তার হাতের স্পর্শে ও গুণে সুস্বাদু খাবার করে আপনাকে যত্ন করে খাওয়াবেন। দীর্ঘ প্রসব যন্ত্রণা ভোগ করে নারীই শিশুকে পৃথিবীর বুকে আলো দেখান। ঘরে বাইরে সংসারে সর্বক্ষেত্রে নারীদের সহনশীলতা ধৈর্য্য মেনে নেওয়া মানিয়ে নেবার কাহিনী আমরা সেই কবে থেকেই শুনে আসছি। তবে সবক্ষেত্রেই ব্যতিক্রম আছে। নারীরা এখন অনেক প্রতিবাদী হয়ে উঠেছেন। নারী তার ক্ষুরধার লেখনী তে মনের ভাব প্রকাশ করছেন লেখনীর মাধ্যমে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছেন। এ যেন এক নবজাগরণ বাংলা সাহিত্যে নারীদের লেখা লেখিতে। 

ঈশ্বরের পৃথিবীতে, অন্যান প্রাণীদের মতোই মানুষ নামক জীবের সৃষ্টি পৃথিবীর বুকে সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। মানুষের একটা মন আছে, আবেগ আছে, আছে অনুভূতি ও অনন্য অনুভব। তাই তো মানুষ নিজের মাতৃভাষায় কথা বলেন ও মনে ভাব প্রকাশ করেন। কালি কলম ও মনন এর মাধ্যমে আমরা নিজেদের মনের কথা কলমে ফুটিয়ে তুলি। পৃথিবীতে কথা শক্তি হলো সবচেয়ে বড়ো শক্তি। পুরো পৃথিবী চলছে কথা নামক শিল্পের দ্বারা। সুন্দর করে মনের ভাব প্রকাশ করতে পারা ও বলতে পারা একটা আর্ট বা শিল্প। যিনি যত বড় কথা শিল্পী তিনি ততবড় গুণী ব্যক্তিত্বের অধিকারী। অর্থাৎ কম কথায় অনেক গভীর কিছু বলে দেওয়া। 
কথার আন্তরিকতায় যেমন মন পাওয়া যায়, আবার সেই কথার আঘাতেই মানুষ মানুষের থেকে বহু দূরে চলে যায় বা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। 

লিখতে হলে প্রচুর পড়তে হবে জানতে হবে। নারীরা আজ শিক্ষিত। জলে স্থলে আকাশে সর্বক্ষেত্রে তাঁদের বিচরণ। নারী শক্তির প্রথম জাগরণ আসে কালি কলমে মনের প্রকাশের মাধ্যমে। স্বনামধন্য লেখিকা আশাপূর্ণা দেবীর লেখা সেই কথাই বলে। সংসার জীবনে অবহেলিত নারীদের কথা বলে। কবি ও লেখক নবনীতা দেবসেনের লেখা নারীশক্তি জাগরণের কথা বলে। ভালোবাসার বারান্দার কথা বলে। গল্পকার সুচিত্রা ভট্টাচার্যের লেখাতেও নারীদের জগতের কথা যন্ত্রণা সমস্যার উপলব্ধির কথা বলেন। 
আজ প্রযুক্তির যুগে কম্পিটিশনের দুনিয়ার সরকারি চাকরি পাওয়া দূরহ ব্যপার। বেসরকারি চাকরি বা যে কোন ছোট খাটো চাকরি পেতে নারী পুরুষ মরিয়া হয়ে উঠেছে। অনেক অনেক পড়াশোনা বা ডিগ্রিধারী হয়েও চাকরি পাওয়া অসম্ভব। তাই আজকের দিনের বেশিরভাগ নারী সংসার জীবনের সমস্ত কর্তব্য দায়িত্ব পালন করে, সন্তান প্রতি যত্নবান হয়েও তাদের মূল্যবান সময় টুকু নানান ধরনের লেখা লেখিতে মনোনিবেশ করছেন। তাঁরা তাদের লেখনীর মাধ্যমে প্রতিবাদী হয়ে উঠছেন। অনেকই আবার লেখেন নিজেকে ভালো রাখার জন্য। সারাদিন সংসারের পিছনে গাধার খাটুনি খেটে কপালে সেই বদনাম ই জোটে। তাঁরাও দু কলম লিখে, নতুন কিছু সৃষ্টি করে মনে অপার শান্তি পান। এখন অনলাইনে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লেখা দেওয়া নিজে কে নতুন করে মেলে ধরবার সুযোগ এসেছে। সেই লেখা যখন প্রকাশ পায় বা ছাপা অক্ষরে প্রকাশিত হয় সেই আনন্দের মতো এই জগত সংসারে বোধ করি আর কিছু হয় না। এখন বিভিন্ন সাহিত্য পরিবার সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে নারীদের সংখ্যা পুরুষদের তুলনায় অনেক অনেক বেশি। নারীরা কবিতা গান শ্রুতি নাটক পরিবেশন করছেন। স্বরচিত কবিতা পাঠ করছেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগদান করছেন। চার দেওয়ালে আবদ্ধ নারী এইভাবে লেখালেখির মাধ্যমে আলোর পথের সন্ধান পাচ্ছেন। অনেক নতুন নতুন লেখিকা উঠে আসছেন এবং তাদের সৃষ্টি দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ছে। যেমন কবি মল্লিকা সেনগুপ্ত কবি শ্বেতা চক্রবর্তী, কবি মন্দাক্রান্তা সেন এনাদের কবিতা এখন দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়েছে। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যে দেশের নারীরা যত বেশি শিক্ষায়,খেলায় লেখা লেখিতে যত এগিয়ে যত সন্মানিত হয় সেই দেশ ততই উন্নত। শিক্ষা মানে শুধুমাত্র বড়ো বড়ো ডিগ্রী পাওয়া নয়। শিক্ষা হলো মনের অন্তরে আলোর প্রদীপ জ্বালানো। সেই আলোয় আরও মানুষ আলোকিত হয়ে মানুষের মতো মানুষ হয়ে ওঠা। নারী মানেই শক্তি। নারী মানেই দশভুজা, যে একাই দশরকমের কাজ একা হাতে চালায়। তাই এই মুহূর্তে বাংলা সাহিত্যের নারীদের অবদান ও সাড়া অনেক বেশি।।

==================
নিবেদিতা দে
নতুন গঞ্জ পূর্ব বর্ধমান

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন