Featured Post

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

ছবি
  সূচিপত্র অন্নদাশঙ্কর রায়ের সাহিত্য: সমাজের আয়না ।। বিচিত্র কুমার প্রবন্ধ ।। বই হাতিয়ার ।। শ্যামল হুদাতী কবিতায় সংস্কৃতায়ন (দ্বিতীয় ভাগ ) ।। রণেশ রায় পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত কবিতা ।। লেগে থাকা রোদ্দুরের ঘ্রাণের মতো ।। জয়শ্রী ব্যানার্জি কবিতা ।। ভুল ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। উন্মেষ ।। বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত কবিতা ।। গার্হস্থ্য ।। বিবেকানন্দ নস্কর একগুচ্ছ বিজয়ের কবিতা ।। বিচিত্র কুমার গল্প ।। পোষ্য ভূত ।। সমীর কুমার দত্ত কবিতা ।। আশপাশ ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। মেঘ ।। তীর্থঙ্কর সুমিত অণুগল্প ।। বংশীবদনের সুখদুঃখ ।। দীনেশ সরকার কবিতা ।। গভীর রাত ।। সুনন্দ মন্ডল তিনটি কবিতা ।। সুশান্ত সেন ভালোবাসার বাসা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত অণুগল্প ।। শিক্ষকের সম্মান ।। মিঠুন মুখার্জী কবিতা।। প্রশ্ন ।। জীবন সরখেল কবিতা ।।ক্ষরিত সে পথ ।। রহিত ঘোষাল কবিতা ।। রক্ত দিয়ে কেনা ।। মুহাম্মদ মুকুল মিয়া কবিতা ।। কংক্রিট ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছড়া ।। শীত নেমেছে ।। রঞ্জন কুমার মণ্ডল কবিতা ।। কিছু শব্দ ।। সমীর কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় কবিতা ।। শীতের নগ্নতা ।। রানা জামান কবিতা ।। পথ চলা ।। পাভেল আমান বেদ পু...

অণুগল্প -- শেফালি সর

 স্মৃতির সরণী বেয়ে

                                  
সারাদিন আকাশ টা বড্ড মেঘলা। গুমোট হয়েছে। একফোঁটা বৃষ্টির দেখা নেই।মালিয়ার মনটাও আজ বড্ড খারাপ। মেঘলা আকাশের সাথে মনখারাপের বহুদিনের ওঠা বসা। তাই তো মন খারাপের আর এক নাম ঘোলাটে আকাশ।আলোর ও বুঝি মন খারাপ হয়! তাই অভিমানে মেঘ বৃষ্টি কে গোপন করে রাখে।
        বিচিত্র জীবন পর্বের কত ওঠা নামা, জোয়ার ভাটার টান!আলো আঁধারের কী বিচিত্র সমাবেশ এই জীবনের বেলাভূমিতে।আজ এমনি কত কথা যে মনে পড়ছে মালিয়ার! স্মৃতির সরণী বেয়ে সে হাঁটছে ধীরে ধীরে এক পা এক পা ফেলে এই বৃদ্ধাশ্রমের ঘরে বসে। বৃদ্ধাশ্রমের অন্যান্য বন্ধুরা যখন বিকেলে দল বেঁধে বেড়াতে বেরিয়েছে, মালিয়া তখন চুপচাপ বসে ছিল ঠায় জানালার পাশে।কত স্মৃতি ভীড় করছে তার মনে। জীবনের প্রথম থেকে আজ পর্যন্ত সব কিছু যেন চোখের সামনে ভেসে উঠছে এক এক করে। ফিরে দেখার সাধ জাগলো মালিয়ার মনে। মনে পড়ে তার জন্মের ইতিহাস,যা তার বড়ো হয়ে শোনা তার পালিত বাবা মায়ের কাছ থেকে।সে নাকি কাপড় জড়ানো অবস্থায় পথের ধারে ঝোপের মধ্যে পড়েছিল। রিক্সাওয়ালা ভুবন বাগদী শিশুর কান্না শুনতে পেয়ে কাছে গিয়ে দেখে একটি সদ্যজাত কন্যা সন্তান! ভুবন মেয়েটিকে কোলে তুলে নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হয়। স্ত্রীর কোলে দিয়ে ভুবন আপন মনে বলে এমন সুন্দর মেয়েটকে কে এমন নৃশংস ভাবে ফেলে গেল! পরবর্তীতে মেয়েটিকে এক অনাথ আশ্রমে রেখে এলো ভুবন। মালিয়া আজ ও জানেনা কে তার বাবা মা।অনাথ আশ্রমে থেকেই মালিয়া তার উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করে। একদিন  মালিয়া উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে সহ-শিক্ষিকার কাজটা পায়। একদিন স্কুল পরিদর্শনের জন্য এলো স্কুল পরিদর্শক। তিনি মালিয়াকে দেখে বিস্মিত হয়ে যেন আপনার মনে বলেই ফেললো-এক ই অঙ্গে এতো রূপ! একদিন মালিয়া কে বিয়ের প্রস্তাব দিলেন স্কুল পরিদর্শক মলয় বিশ্বাস। মালিয়া তার জন্মের ইতিহাস বললো। মলয় কোনো রকম দ্বিধা না করে মালিয়া কে রেজিষ্ট্রি করে বিয়ে করল।
         বেশ ভালো ই কাটছিল তাদের বিবাহিত জীবন।গতনুগতিক জীবন থেকে সরে এসে মালিয়ার জীবন আবার নতুন খাতে ব ইতে লাগলো।এতসুখ এত আনন্দ ছিল তার জন্য অপেক্ষা করছিল সে কখনো ভাবেনি মালিয়া। এরপর তাদের মাঝখানে আর একজন এলো।সে হলো তাদের সন্তান। সন্তানের নাম রাখা হল সমীরণ। সে সুখের সময়টার কথা আজও যেন খুব মনে পড়ে মালিয়ার। মনে পড়ে যেদিন মলয়কে চির জীবনের মতো হারিয়ে ফেললো।এক রেল দুর্ঘটনায় মারা গেল মলয়। তখন সমীরণ হবে মাধ্যমিক পাশ করেছে। তখন থেকে মালিয়ার মনে মলয় শুধু স্মৃতি হয়ে র ইলো। এখন বাস্তবে সমীরণ কে মানুষ করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে মনকে শক্ত করে বাঁধলো মালিয়া। সমীরণ এখন উচ্চ শিক্ষা লাভ করে বিলেতে পাড়ি দেওয়ার কথা ভাবছে।মালিয়া তখন তড়িঘড়ি করে সমীরণের উপযুক্ত সঙ্গিনীর সন্ধান করতে লাগলো। খুঁজে পেতে এক সময় তার ছাত্রী সুমনার সাথে ছেলের বিয়ে দিল। বিয়ের পর মায়ের ন্যাওটা ছেলে সমীরণ কেমন একটু একটু করে বদলে গেল। মালিয়া আবার ও নিজেকে বোঝালো, এই তার বিধিলিপি যা তার জন্ম ক্ষণেই বিধাতা লিখে দিয়েছেন। নিঃসঙ্গতাই তার ললাট লিখন।
       বিলেত যাওয়ার দিন ছেলে বলে গেল-মা, তুমি আমায় প্রতিদিন ফোন করে জানিয়ো তোমার সব ভালো মন্দ জানিয়ে। এভাবেই কেটে যায় মাস ছয়েক। তারপর একসময় মালিয়া ভাবলো এমন নিঃসঙ্গ জীবন বড় দুঃসহ।তাই সে বৃদ্ধাশ্রমের সন্ধান করে ।তারপর একদিন বাড়ির গেটে চাবি তালা লাগিয়ে বৃদ্ধাশ্রমের চলে যায়। মালিয়া এখন অবসর প্রাপ্ত শিক্ষিকা। কাঁচা পাকা চুলের এখনও কত সুন্দরী। মালিয়া একদিন ছেলেকে ফোন করে বলে-বাবা, তোরা কবে বাড়ি আসবি? ছেলে বলে-তখন সময় করে যাবো। তুমি ভালো থেকো। মালিয়া আবার ও একদিন ফোন করে বলে-তোরা চলে যাওয়ার পর আমি নিঃসঙ্গতা সহ্য করতে না পেরে বৃদ্ধাশ্রমে চলে আসি। এখন আমি বৃদ্ধাশ্রমের বাসীন্দা। এখানে এসে আমি বেঁচেছি।
        তোরা বাড়ি এলে আমার কাছ থেকে চাবি টা নিয়ে যাস।আজ তোর জন্মদিন।তাই মন্দিরে পূজা দিতে গেছলাম।দূর থেকে আশীর্বাদ করছি-দীর্ঘজীবি হ ও। মঙ্গল হোক। ভালো থাকিস।এই বলে মালিয়া আশ্রমের ঠিকানা দিয়ে দিল। আঁচল দিয়ে চোখ টা মুছে ফেলে,পাছে কেউ দেখে ফেলে। এমন সময় বৃদ্ধাশ্রমের এক সাথী এসে বলে -দিদি, তুমি বেড়াতে যাওনি কেন?মালিয়া নিজেকে গোপন করে বলে-এমনি। শরীরটা ভালো নেই তাই।                      
                  ----------------------:-------------------
 শেফালি সর জনাদাড়ি গোপীনাথপুর পূর্ব মেদিনীপুর।

জনপ্রিয় লেখা

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮১তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩১ নভেম্বর ২০২৪

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৯তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮০তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩১ অক্টোবর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত