নীলাঞ্জনা
নীলাঞ্জনা
তুই কেমন আছিস ?
কোথায় কত দূরে
জানতে বড় ইচ্ছে করে আজ
হঠাৎ মনে হল তোর কথা
চল্লিশটা বছর হয়নি
তোর সাথে আর দেখা ।
শুনেছিলাম এম টেক কোন
ছেলেকে বিয়ে করে
চলে গেছিস আমেরিকা,
ময়নাজুড়ি গ্রাম ছেড়ে ।
নীলাঞ্জনা তোর মনে পড়ে
স্কুলের সেই মেঠ পথ ?
পদ্ম দীঘির পাড় ?
কিম্বা বাবলার বন ?
তোর পায়ে কাঁটা ফুটেছিল একবার,
মনে আছে তোর ?
আমি সেফটিপিন
দিয়ে বার করেছিলাম ।
স্কুল ফেরত তুই প্রতিদিন
চাইতিস লাল পদ্ম ফুল ।
আমি বই পাড়ে রেখে
জলে নেবে তুলে আনতাম।
হাতে পদ্ম ফুল পেয়ে তোর
গোলাপি ঠোঁটে হাসি ফুটত ।
আমার প্যান্ট ভিজে গেলেও
বড় ভাল লাগত তোর হাসি ।
আমি তো সেদিন গিয়েছিলাম
গ্রামের বাড়ি
অনেকদিন পর । পালটে
গেছে অনেক কিছু । সেই
মেঠ পথ আর নেই, পদ্ম
পুকুরে আর পদ্ম নেই ।
বাবলার গাছ আছে দু একটা,
আমার মত তারাও যেন
দিন গুনছে ।
খুব মনে হচ্ছিল তোর কথা
বুকের ভিতরটা কেমন যেন
হাহাকার করছিল ।
মনে হচ্ছিল সব আছে, তবু
তবু কিছু নেই, আমি একা ।
নীলাঞ্জনা তোর মনে পড়ে
তোর সাথে মিশতাম বলে
একবার আমায় মার খেতে
হয়েছিল তোর বাবা, কাকা
আর দাদুর কাছে । আমার
কপাল কেটে গিয়েছিল
সেই দাগটা আজও আছে ।
নীলাঞ্জনা
আমি সেই একই আছি,
বয়সটা শুধু বেড়ে গেছে ।
তুই বিশ্বাস কর আজও
মনে পড়ে তোকে, আজও ভাবি তোর কথা
একান্ত গোপনে নিঃশব্দে ।
আশা করি তুই ভালই আছিস
স্বামী, ছেলে, মেয়ে সংসার নিয়ে সেই সুদূর সাগরের ওপারে । আর আমি আছি
আজও তোর ভালবাসা বুকে
নিয়ে দুটি নদীর মাঝখানে
একা ভীষণ একা, নিঃশব্দে
নিরবে ।
_____________
পোঃ চুড়র, জেলা- বীরভূম 731133, পঃ বঃ ।
মোঃ 6295152962