জ্যোতিপ্রকাশের উৎসাহে রবীন্দ্রনাথ বিশ্বকবি ।। অনুপম বিশ্বাস - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

Sunday, March 17, 2024

জ্যোতিপ্রকাশের উৎসাহে রবীন্দ্রনাথ বিশ্বকবি ।। অনুপম বিশ্বাস


জ্যোতিপ্রকাশের উৎসাহে রবীন্দ্রনাথ বিশ্বকবি

অনুপম বিশ্বাস

 

বাংলা ১২৬৮ সালের ২৫ বৈশাখ,ইংরেজি ১৮৬১ খ্রীস্টাব্দের ৭মে ঠাকুর পরিবারে জন্ম নিল শিশু রবি কলকাতা জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়িতে নিঃসঙ্গ পরিবেশে কাটতে লাগলো তার দিন

আট বছর বসয় থেকেই ভাগ্নে জ্যোতিপ্রকাশের কাছ থেকেই নানান উৎসাহে উৎসাহিত হতে লাগলেন শিশু রবীন্দ্রনাথজ্যোতিপ্রকাশ রবীন্দ্রনাথের থেকে বয়সে বেশ কয়েক বছরের বড়োএকদিন জ্যোতিপ্রকাশ আট বছর বয়সী শিশু রবিকে উপদেশ দিল, রবি, তুই কবিতা লিখবি?

রবি সংকোচ বোধ করলেও বেশ আনন্দিত হলো রবি আগ্ৰহী হয়ে বললো, কিন্তু কি করে?

জ্যোতিপ্রকাশ,ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের একটি বর্ণ পরিচয় বই  আনলেন,যাতে লেখা রয়েছে বিদ্যাসাগরের চারটি শব্দের ছড়া-"জল পড়ে পাতা নড়ে"এবং একটি নীল রঙের মলাট করা খাতা এনে রবিকে দিলেন সঙ্গে বুঝিয়েও দিলেন কীভাবে ছন্দে এবং কথায় মিল রেখে কবিতা লেখা যায়

বিদ্যাসাগরের ওই চারটি বর্ণের ছড়া শুনে বালক কবির মনকে নাড়া দিয়েছিল সে জ্যোতিপ্রকাশের উৎসাহে এবং নীজের প্রতিভায় আজ বিশ্বের সবচেয়ে বড় কবি

জমিদার ঘরের ছেলে হলেও রবীন্দ্রনাথ খুব সাদাসিধে পিতৃ মাতৃ

শিক্ষায় বড়ো হয়েছেপিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ছিলেন ধার্মিক পুরুষসংসারে কি হচ্ছে না হচ্ছে তাতে তিনি মাথা ঘামাতেন নামাতা সারদা দেবী ছিলেন অত্যন্ত স্নেহশীলা গৃহকর্মনিপুনাতা সত্বেও রবীন্দ্রনাথ মাতৃস্নেহ খুব কম পেয়েছেনকবির বয়স যখন চোদ্দো বছর তখন তিনি মাতৃহারা হন

বোলপুর থেকে 'মাইল দূরে ভুবন ডাঙা গ্ৰামে কুড়ি বিঘা জমি কিনে একটি আশ্রম তৈরি করলেন দেবেন্দ্রনাথ, এবং সেটাই হয়ে ওঠে রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য সাধনক্ষেত্র

রবি বড়ো ওয়ার সাথে সাথে কবিতা, গান ছবি আঁকেনগান গাইতেনধীরে ধীরে নানান প্রতিভা অর্জন করে রবীন্দ্রনাথ

পিতা দেবেন্দ্রনাথ খুশি হয়ে পাঁচশো টাকার একখানি চেক তুলে দেন রবির হাতেএটাই কবির প্রথম পুরষ্কার লাভ

মা মারা যাওয়ার পর উদাস রবির একটুও স্কুলে যেতে ভালো লাগতো নাগঙ্গার তীরে বসে থাকত রবিবেশ কয়েকবার ফেল করায় পিতা দেবেন্দ্রনাথ গৃহশিক্ষক দেন রবিকেভর্তি করা হয় ইংরেজি স্কুলেব্যারিস্টারি পড়ার জন্য মেজদা সত্যেন্দ্রনাথের সঙ্গে বিলেতেও যায় রবি,কিন্তু শূন্য হাতে বাড়ি ফিরতে হয়েছিলো রবিকে

ফিরে এসে সাহিত্য চর্চায় মন দেয় কবিলিখতে লাগলেন কবিতা গীতিনাট্যসৃষ্টি হল গীতিনাট্য "বাল্মিকী প্রতিভা"! লেখা হল  "নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ"নামে আসাধারন কবিতা "সন্ধ্যা সঙ্গিত" নামে একটি প্রকাশিত হয় রবিরএই পড়ে বাংলা সাহিত্যের দিকপাল বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কাছ থেকে মাল্য পুরষ্কার লাভ করে রবীন্দ্রনাথ শুরু হয় রবীন্দ্রনাথের কবি জীবনএরপর সে নানান পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছেন

কবি রচনা করেন "গীতাঞ্জলি" ১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দে সুইডিস একাডেমির সদস্যরা এই বই পড়ে রবীন্দ্রনাথকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কবি হিসাবে নোবেল পুরস্কার প্রদান করেন

জ্যোতিপ্রকাশের উপদেশে শিশু কবি ধীরে ধীরে হয়ে ওঠে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ কবিবিশ্বকবি!

No comments:

Post a Comment