Featured Post
গল্প ।। নিষিদ্ধ পল্লীর কাজল ।। সমীর কুমার দত্ত
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
সমীর কুমার দত্ত
"নাও নাও, জামা কাপড় খোল। আমার অত সময় নেই। একটা কাস্টমার নিয়ে পড়ে থাকলে চলবে না। মালকিন একেবারে খেয়ে ফেলবে। বেশি দেরি হলে দরজা ঠক ঠক করবে।"
ঘরে ঢুকতে না ঢুকতেই যৌনকর্মী কাজল মেজাজে কথাগুলো বলে চললো।
" আ: ব্যস্ত হচ্ছ কেন? সবাই যে উদ্দেশ্যে এখানে আসে, আমি সে উদ্দ্যেশ্যে আসি নি। সবাইকে যে চোখে দেখো, আমাকে না হয় একটু অন্য চোখে দেখলে।"
বিভাস কাজলের কথার প্রত্যুত্তরে বললো।
—তবে পয়সা দিয়ে কি করতে এসেছো শুনি । সবাই তো এখানে ফূর্তি করতে আসে।
—শোন শোন, এখানে বসো।সব বলছি। আমি একটু লিখি টিখি।
—কি লেখো?
—এই গপ্প টপ্প আর কি।
—বই লেখো? তা এখানে কেন?
শোন কথা মিন্সে আমার গপ্প শোনাবার আর জায়গা পেলো না। কতো রকমের লোকই যে আসে এখানে!
—গল্প লিখতে গেলে কোন ঘটনা জানা দরকার। সব সময় তো বানিয়ে বানিয়ে লেখা যায় না। বিশেষ করে তোমাদের জীবনের ঘটনা। এই ধরো তুমি। কী ছিলে, কী হলে, এখানে কী ভাবে এলে ইত্যাদি। কোন মহিলা তো আর শখ করে এখানে আসে না।
—এইবার বুঝলাম। তা ট্যাঁকের পয়সা খরচ করে কেউ এখানে আসে আমাদের জীবনের ঘটনা শুনতে? কি জানি বাবা আমার তো জানা ছিলো না। এই প্রথম শুনছি। তা আমাদের জীবনের ঘটনা বলে আমাদের কি লাভ? শুধু শুধু কাজের সময় নষ্ট।
—না না,সময় নষ্ট নয়।ঐ যে আমি ভোগ না করেই তোমাকে তোমার চার্জ দিয়ে দিয়েছি।আর এই প্রথম শুনবে না তো কি। তোমার বয়স কি তিন কাল গিয়ে এক কালে ঠেকেছে?
বিভাসের কথাগুলো শুনে কাজল বিস্ময় মিশ্রিত খুশিতে ঝল মল করে উঠলো। যা তার জীবন থেকে কবেই হারিয়ে গেছে। তাকে দেখে একদিন এক পুরুষ তাকে ভোগ করা ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারেনি।আজ এই একজন পুরুষ, যেখানে ভোগের জন্য মানুষ পয়সা দিয়ে যায়, সেখানে পয়সা দিয়ে কোন প্রকার লালসা প্রদর্শনের চিহ্নও হাবেভাবে ফুটিয়ে তোলেনি। এই দুই পুরুষের মধ্যে তুলনা করতে বড়ো কষ্ট হচ্ছে।ওই মুহূর্তে বিভাসকে তার বড়ো আপনজন বলে মনে হলো। বহুদিন সে আপনজনেদের ছেড়ে দূরে পড়ে আছে। বিভাসের কাছে ঘনিষ্ঠ হয়ে বসে কাজল বললো, " তুমি আমার জীবনী লিখবে তো? বেশ বেশ , তা সবাই পড়বে তো?
—নিশ্চয়ই
—তা হলে তো মুশকিল। সবাই তো জেনে যাবে আমার কথা।
—না না, সে ভয় নেই।তোমার নাম থাকবে না। নাম বদল হয়ে যাবে। কেউ তোমাকে চিনতে পারবে না। ভয় নেই তুমি নির্ভয়ে বলো।
"তুমি চা খাবে তো, দাঁড়াও চা বলে আসি।গলাটা একটু ভিজিয়ে নিতে হবে।
— না না, চায়ের দরকার নেই। তুমি শুরু কর।বেশিক্ষণ তো সময় পাবো না।
—তুমি এলে আর একটু চা খাওয়াতে পারবো না।
—না না, তার দরকার নেই।আর তাছাড়া আমি চা খাই না।
—চা যখন খাবেই না, তাহলে শুরু করা যাক।
তবে শোনো। আমার আসল নাম অর্থাৎ পিতৃদত্ত নাম রাধিকা মান্না। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে কলেজে পড়ছিলাম। স্কুলের বন্দী দশা কাটিয়ে সবে কলেজের মুক্তির স্বাদ পেলাম। বন্ধুদের সঙ্গে মুক্ত বিহঙ্গের মতো ডানা মেলে যেখানে খুশি উড়ে বেড়াতে পারতাম। আমাদের মাছের পাইকারি ব্যবসা। বাবা মোহন মান্না খুব বদ্ মেজাজী মানুষ। সারাদিন মাছের আড়তে থেকে বিভিন্ন ধরনের মানুষের সঙ্গে কাজ করে মেজাজটা কি রকম খিটখিটে ধরনের হয়ে গেছে। রাত্রি হলে মদ গিলে টলতে টলতে বাড়ি ফিরেন আর মায়ের ওপর চোটপাট করেন। ছোট থেকে এসব দেখে আমি অভ্যস্ত। কিন্তু স্বাভাবিক থাকলে মেজাজটা দিল দরিয়া। আমি কলেজে পড়ি বলে,যখন যা চাইতাম, বিনা প্রশ্নে বাবা তা দিয়ে দিতেন। অবশ্য মেজাজটা ভালো থাকলে । আমাদের কখনও কোন জিনিসের অভাব রাখেন নি। শুধু সংসারে শান্তির অভাব ছিল।
আমি সুন্দরী ছিলাম বলে মা খুব ভয়ে ভয়ে থাকতেন, পাছে আমি কোন বদ ছেলের পাল্লায় পড়ে যাই। তাই উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর মা আমার বিয়ে দিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। বাবাই রাজি হননি। বলতেন," না পড়ছে পড়ুক। কলেজটা পাশ করলে ভালো ছেলে দেখে বিয়ে দিয়ে দেওয়া যাবে। আজকাল সরকারি চাকুরে ছেলে গ্র্যাজুয়েট মেয়ে ছাড়া বিয়ে করতে চায় না। তার পিছনে যথেষ্ট কারণ আছে । বলা তো যায় না, স্বামীর কিছু হলে, স্ত্রী তার চাকরিটা পেয়ে যেতে পারে।"
আমি একদিন এক সুন্দর অবস্থাপন্ন ঘরের ছেলে রৌণাকের পাল্লায় পড়ে গেলাম। অবস্থাপন্ন বলছি এইজন্য যে হাবেভাবে তাকে অবস্থাপন্ন ঘরের ছেলে বলেই মনে হতো। সুন্দর,সঙ্গতি সম্পন্ন ছেলের লোভ সংবরণ করতে না পেরে ওর সঙ্গে মজে গেলাম। জীবনে অভাব কী জিনিস বুঝতে পারিনি। ও আমাদের কলেজের কেউ নয়। গাড়ি হাঁকিয়ে আসতো । কলেজের গেটের পাশে গাড়ি পার্কিং করতো। গাড়ির দরজায় একটা হাত রেখে বাইরে দাঁড়িয়ে স্মোকিং করতো আর মেয়েদের দেখতো।এমন ভাব দেখাতো, সকলে যাতে জানতে পারে গাড়ির মালিক ও নিজে। পোশাক পরিচ্ছদে খুব পরিপাটি। এক নজরে দৃষ্টি আকর্ষণ করার মতো। পরে জানতে পারা যায় গাড়ির মালিক অন্যজন আর ও তার ড্রাইভার। কিন্তু অবস্থা তখন হাতের বাইরে। ওর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে আমি ওর দিকে না তাকিয়ে পারতাম না। কয়েক দিন চোখাচুখি হতেই ও আমার দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকতো আর মুচকি মুচকি হাসতো । ওর চোখ মুখের মধ্যে কোন পাপ বা দুরভিসন্ধির কোন চিহ্ন ফুটে উঠতো না। বরং তার বিপরীত। একটা শিশুসুলভ ভাব আমি ওর মুখে ফুটে উঠতে দেখেছি। অনেকটা হিপ্নোটাইজ্ড হয়ে যেতাম। কাছে ডেকে কথা বলতে চাইতো। তখন ওর মুখোশের আড়ালে যে শয়তান মানুষটা লুকিয়ে আছে তা বুঝতে পারিনি। আমি ধরা দিয়ে দিলাম। কাউকে কিছু জানতে না দিয়ে, এমনকি আমার কলেজের বন্ধুদেরও না, বাড়ির লোক তো নয়ই, ওর সঙ্গে গাড়িতে করে হোটেল, রেস্টুরেন্টে ঘুরে বেড়াতে লাগলাম। দেরি করে বাড়ি ফিরে মাকে ঝুড়ি ঝুড়ি মিথ্যে কথা বলতাম। বলতাম, কলেজে এক্সট্রা ক্লাস ছিলো ইত্যাদি ইত্যাদি। তখন বুঝতে পারিনি যে আমার পরম হিতাকাঙ্খী মাকে অন্ধকারে রেখে আমি নিজের জীবনটা কিভাবে নষ্ট করে দিচ্ছি লেখাপড়াকে জলাঞ্জলি দিয়ে। মা আমার কথাগুলো সরল মনে বিশ্বাস করে নিতেন কিন্তু মায়ের মনে সদাসর্বদা ভয় ছিল আমার নিয়ে।
একদিন আমাকে বিয়ে করার আশ্বাস দিয়ে হোটেলে নিয়ে গিয়ে আমার সঙ্গে সহবাস করে আমার সর্বনাশ করেছে।আমি অনেক বাধা দিতে চেষ্টা করেছি কিন্তু পারিনি। ট্রাপে পড়ে গেলে সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়। মায়ের কাছে আমাকে অনেক মিথ্যে বলতে হয়েছে।
কলেজ থেকে প্রাক্টিক্যাল ক্লাসের জন্য সব মেয়েদের আউটিংয় যেতে হবে। সঙ্গে প্রোফেসাররাও থাকবেন। এইসব বলে বাবার অজান্তেই বেরিয়ে পড়ি। রাতে এসে শুনে বাবার মাথায় খুন চড়ে গিয়েছিল। বলেছিলেন,
"ফিরে আসুক তারপর দেখাচ্ছি। পড়া আমি বন্ধ করে বিয়ে দিয়ে দেবো।"
মুখের কথা কেড়ে নিয়ে মা তখন বলেন, " হায়ার সেকেন্ডারি পাশ করার পরেই আমি তোমাকে বিয়ে দিয়ে দিতে বলেছিলাম। তুমি আমার কথা শোনোনি। কলেজে ভর্তি হতে দিলে।"
ওর কোন খোঁজ খবর না নিয়ে সে রাতে ওর সঙ্গে সহবাস করা কতো বড়ো অন্যায় যে হয়ে ছিলো, তা আজও মর্মে মর্মে অনুভব করতে পারি। গাড়িটা যে ওর নয়, ও যে কারোর ড্রাইভার সে কথা জানতে পারি ফোনে ওর কথোপকথন শুনে। তারপর ওকে আমি বিয়ে করার জন্য পীড়াপীড়ি করি। ও আমাকে রেজিস্ট্রি বিয়ে করবে বলে নিয়ে বের হয়। আমাকে একটা জায়গায় নিয়ে গিয়ে তোলে। আসছি বলে আমাকে ফেলে রেখে কোথায় অন্তর্হিত হয়ে যায় । আর ওর দেখা পাইনি। পরে জেনেছিলাম, এটা যৌনকর্মীদের আস্তানা। এখানে যে একবার আসে, আর ফিরে যেতে পারে না। এ বাড়ির মালকিনের মুখে শুনেছিলাম,উনি আমাকে রৌনাকের কাছ থেকে এক লাখ টাকায় কিনেছেন। সেই থেকে আমি এখানে নরক যন্ত্রণা ভোগ করে চলেছি। অনেক চেষ্টা করেও পালাতে পারিনি। এই এলাকায় দালালরা সব চারদিকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের মাসোহারার ব্যবস্থা আছে। এমনকি পুলিশেরও মাসোহারার ব্যবস্থা আছে। বাড়ির কোন খবর জানি না।বাবা মা কেমন আছে, মরেছে না বেঁচে আছে কিছুই না।" শেষের কথাগুলো বলতে বলতে রাধিকা ঝরঝর করে কেঁদে ফেললো। বিদায় কালে কাজল তথা রাধিকার 'দাদা' সম্বোধনে শেষ কথা," দাদা, পারলে তোমার লেখাটার একটা কপি আমায় দিয়ে যেও আর শেষ বারের মতো আমায় দেখে যেও।"
শেষ কথাগুলো বিভাসের কানে অনুরণিত হয়ে চললো। নিজের বোন মনে করে কান্না ঠেলে বেরিয়ে আসতে চাইছিলো। নিজেকে কোনরকম সংযত করলো এইভেবে — এটা কোন সম্পর্ক পাতাবার জায়গা নয়। এটা ভোগের ব্যবসার জায়গা।ফেলো কড়ি মাখো তেল। সোনাগাছির গৌরিশঙ্কর লেনের নিষিদ্ধ পল্লী থেকে কড়ি ফেলে তেল না মাখা বিভাস ভারাক্রান্ত মনে ফিরে এলো শুধু সাহিত্যের রসদ বহে এনে । কাজল ওরফে রাধিকার মুখে বাবার নাম, ঠিকানা বিভাস জেনেছিলো কিন্তু কোন উদ্যোগ নেয়নি কাজলের বাড়িতে খবর দেবার। কারণ কাজলের জীবনে একজন যৌনকর্মীর ছাপ পড়ে গেছে। সমাজ ওকে স্বাভাবিক জীবনে আর ফিরে আসতে দেবে না।
================
Samir Kumar Dutta
Bally, Howrah
Mobile no. 9051095623(WhatsApp)
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
জনপ্রিয় লেখা
প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা
লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা শ্রীজিৎ জানা "সময় চলিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়"। স্রোতের ধারা তার দু'প্রান্তে রেখে যায় ভাঙাগড়ার চিহ্ন। কালের দৃশ্যপটেও পরিবর্তনের ছবি অনিবার্যভাবেই চোখে পড়ে। সমাজ সময়ের ছাঁচে নিজেকে গড়ে নেয় প্রতিনিয়ত। সেখানে মনে নেওয়ায় বাধা থাকলেও,মেনে নেওয়ার গাজোয়ারি চলে না। ফলত কাল বদলের গাণিতিক হিসেবে জীবন ও জীবিকার যে রদবদল,তাকেই বোধকরি সংগ্রাম বলা যায়। জীবন সংগ্রাম অথবা টিকে থাকার সংগ্রাম। মানুষের জীবনযাপনের ক্ষেত্রে আজকে যা অত্যাবশ্যকীয় কাল তার বিকল্প রূপ পেতে পারে অথবা তা অনাবশ্যক হওয়াও স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে উক্ত বিষয়টির পরিষেবা দানকারী মানুষদের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এক কালে গাঁয়ে কত ধরনের পেশার মানুষদের চোখে পোড়তো। কোন পেশা ছিল সম্বৎসরের,আবার কোন পেশা এককালীন। সব পেশার লোকেরাই কত নিষ্ঠা ভরে গাঁয়ে তাদের পরিষেবা দিত। বিনিময়ে সামান্য আয় হত তাদের। আর সেই আয়টুকুই ছিল তাদের সংসার নির্বাহের একমাত্র উপায়। কালে কালান্তরে সেই সব পেশা,সেই সব সমাজবন্ধুরা হারিয়ে গ্যাছে। শুধুমাত্র তারা বেঁচে আছে অগ্রজের গল্পকথায়,আর বিভিন্ন সাহিত্য
মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি
লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি (লেখক ও সম্পাদকীয় দপ্তরের কথোপকথন আকারে) --কী পত্রিকা? --নবপ্রভাত। --মুদ্রিত না অনলাইন? --মুদ্রিত। --কোন সংখ্যা হবে এটা? --বইমেলা 2024। --কোন কোন ধরনের লেখা থাকবে? --প্রবন্ধ-নিবন্ধ, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া। --বিশেষ কোন বিষয় আছে? --না। যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে। --শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন আছে? --না। নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা 12-14 লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি 200/250শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। --ক'টি লেখা পাঠাতে হবে? --মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। --ফেসবুক বা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশিত লেখা কি পাঠানো যাবে? --না। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। --পত্রিকা কোন সময়ে প্রকাশিত হবে? --জানুয়ারি 2024-এর দ্বিতীয় সপ্তাহে। --লেখা পাঠানোর শেষতারিখ কত? -- 17 ডিসেম্বর 2023। --কীভাবে পাঠাতে হবে? --মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। --লেখার সঙ্গে কী কী দিতে হবে? --নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) --বিশেষ সতর্কতা কিছু ? --১)মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন '
সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল
সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ -- "ত্রয়ী কাব্য" ------------------------------------------------------------------------------ সুনন্দ মন্ডল নবীনচন্দ্র সেন সাহিত্যে তথা বাংলা কবিতার জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি চট্টগ্রাম জেলার নওয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৮৪৭ সালে তাঁর জন্ম এবং মত্যু ১৯০৯ সালে। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁকে 'বাংলার বায়রন' বলেছেন। জীবৎকালীন যুগে আত্মপ্রত্যয়ের মধ্যে জাতীয় চরিত্র আত্মস্থ করে নতুন সংস্কারে প্রয়াসী হয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছেন।মধুসূদন-হেমচন্দ্র-নবীনচন্দ্র--এই তিন কবি বাংলা কাব্যধারায় প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন। বিশেষত মহাকাব্য লেখার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন। এদিক থেকে মধুসূদন দত্ত একজন সফল মহাকাব্যিক। তাঁর 'মেঘনাদ বধ' কাব্যের মত গভীর ও ব্যঞ্জনাময় না হলেও নবীনচন্দ্র সেনের 'ত্রয়ী' কাব্য বিশেষ মর্যাদা দাবি করতেই পারে। তাছাড়া 'ত্রয়ী' কাব্যে ধর্মীয় ভাবধারার আবেগ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। নবীনচন্দ্র সেন বহু কাব্য লিখেছেন। যেমন- 'অবকাশরঞ্জিনী','পলাশীর যুদ্ধ', 'ক্লিওপেট্রা', 'রঙ্গমতী', 'খ্রীষ্ট', '
কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার
বসন্তের কোকিল তুমি বিচিত্র কুমার (০১) তোমার দু-আঁখির গহীন অরণ্যে একটা স্বপ্নের বহমান নদী রয়েছে, তারই রেশ ধরে আমি হেঁটে চলি অজানা বসন্তের পথে নীর উদ্দেশ্যে। সে চলার কোন শেষ সীমা নেই তাই আমার বিষণ্ণ একতারা সন্ন্যাস খুঁজে ফিরে , কবে তুমি বুঝবে অনুশ্রী মনের পর্দা খুলে একুশ বসন্ত তোমার রঙ ছিটিয়ে যাচ্ছে অচিনপুরে। এদিকে আমার দেহের প্রতিটি শিরা ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে তোমার ভালোবাসার একটু উষ্ণতা পাবার জন্যে, শুধু অনুভবে তাণ্ডব উচ্ছাসিত হচ্ছে--- যেদিকে তাকাই --- ফুলে ফুলে ভ্রমর গুনগুনিয়ে উড়ে উড়ে পরে বসন্তের কোকিল গান গায় নব বসন্তে, তোমার দুই চোখে আমার একই ছায়া রয়ে যায় উতলা ভালোবাসার সীমান্তে। (০২) এক রক্তাক্ত বসন্তের স্মৃতি কোন এক উতলা বসন্তের সকালে পুষ্পবনে ফুটেছিল একটি টকটকে লাল গোলাপ, তার সাথে হয়েছিলো দেখা প্রথম ফাগুনে হয়েছিল দুজনার এ জীবনের আলাপ। তারপর প্রতিটি শীতের ভোরে অনেক রোদের পরশ মেখে ছুঁয়ে যেতে আমার বুকের বাঁ পাস শিশির রেখা, তখন প্রতিটি ভোর হয়ে যেত ভীষণ রকম মিষ্টি আর ছিলো শুধু বসন্তের ঘ্রাণ মাখা। প্রতিটি সকালে একঝাঁক মায়াবী পাখি অনুভবের
প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৯তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সূচিপত্র কবিতা ।। তৈরি হয় এক নতুন বিপ্লবের পটভূমি ।। প্রণব কুমার চক্রবর্তী কবিতা || প্রতিবাদ || জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় কবিতা ।। সেই মেয়েটি রাত জাগে ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। শপথ ।। দীপঙ্কর সরকার কবিতা ।। কোরাস রাত ।। বন্দনা পাত্র কবিতা ।। তিলোত্তমার বিচার চাই ।। দীনেশ সরকার অণুগল্প ।। ব্যাকবোন ।। বিশ্বনাথ প্রামাণিক কবিতা ।। আন খুঁজে আন শিরদাঁড়াটা ।। জয়শ্রী সরকার কবিতা ।। জীবন এখন ।। লাবণী পাল কবিতা ।। তিলোত্তমার বিচার চাই! ।। গোবিন্দ মোদক কবিতা ।। যুদ্ধ , প্রতিনিয়ত ।। সুমিত মোদক মুক্তভাবনা ।। কী বলব! ।। বন্দনা সেনগুপ্ত প্রতিবেদন ।। বিচার পাক অভয়া ।। জয়শ্রী বন্দ্যোপাধ্যায় অভয়ার যে চিঠিটা আজো পাওয়া যায়নি ।। আশীষকুমার চক্রবর্তী কবিতা ।। জগন্মাতা নাকি তিনি ।। অরবিন্দ পুরকাইত কবিতা ।। মেয়েটির মৃত্যু দেখে ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য কবিতা ।। অন্ধকারের আলো ।। বিবেকানন্দ নস্কর কবিতা ।। ঘোষণা ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। অপেক্ষায় ।। রণেশ রায় কবিতা ।। গ্লানি ।। সুজন দাশ কবিতা ।। বিনীত আবেদন ।। শংকর ব্রহ্ম কবিতা ।। তুই যে মেয়ে তিলোত্তমা ।। অশোক দাশ কবিতা ।। শোক সন্তাপের দুর্গা ।। সুদামকৃষ্ণ মন্ডল ক
প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮০তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩১ অক্টোবর ২০২৪
সূচিপত্র গল্প ।। উৎশব উৎসব ।। বন্দনা সেনগুপ্ত প্রবন্ধ ।। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। বাংলায় প্রথম আত্মজীবনী লেখিকা রাসসুন্দরী দেবী ।। সবিতা রায় বিশ্বাস মগরাহাট (দক্ষিণ ২৪ পরগনা) এলাকার স্থানীয় কিছু কথ্যশব্দ, উচ্চারণ, বাগধারা ইত্যাদি (পর্ব-৬)।। অরবিন্দ পুরকাইত কবিতা ।। একটি মৃত্যু, অজস্র প্রতিবাদ ।। নাসির ওয়াদেন কবিতা ।। অন্ধকার জগৎ ।। সুপ্রভাত মেট্যা গুচ্ছকবিতা ।। আবদুস সালাম কবিতাগুচ্ছ ।। হীরক বন্দ্যোপাধ্যায় খোলা কবিতা ।। মানস মণ্ডল নিবন্ধ ।। সম্পর্ক ।। সংঘমিত্র ব্যানার্জি উপন্যাসিকা ।। উদয় ।। তপন তরফদার সিনেমা রিভিউ ।। ছবি : বহুরূপী, পরিচালক : রাজাদিত্য ব্যানার্জি ।। আলোচনা: জয়শ্রী ব্যানার্জি গল্প ।। গল্পটা মিথ্যে নয় ।। বিকাশকলি পোল্যে অণুগল্প ।। স্পিড ব্রেকার ।। দেবাংশু সরকার কবিতা ।। একটা পুরোনো অঙ্ক ।। রঘুনাথ চট্টোপাধ্যায় কবিতা ।। গোপন সম্মোহন ।। বিশ্ব প্রসাদ ঘোষ কবিতা ।। আগুনের পাখী হব ।। কাকলী দেব দুটি কবিতা ।। লালন চাঁদ কবিতা ।। বেঁচে থাকে ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। হে অনিন্দ্য, রক্তাক্ত মাকড়সার সর্বাঙ্গ ঋষি দৃশ্য খাও
উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত
উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে সৌরভ পুরকাইত বাংলার উৎসব বাংলার প্রাণ। প্রতিদিনের জীবনযাপনের মধ্যে যখন মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন তাকে বেঁচে থাকার রসদ যোগায় এই উৎসব। কথায় বলে 'বারো মাসে তেরো পার্বণ'।মন আনন্দই চায়।তাই তাকে সজীবতা দিতে,পরিবারের,সমাজের ভালো-মন্দের কথা মাথায় রেখে মানুষ নিজেই সৃষ্টি করে নিয়েছে নানাবিধ উৎসবগুলিকে। একেবারে প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ কখনোই উৎসব বিমুখ ছিল না।উৎসবই তাকে ঘর থেকে বাইরে টেনে এনেছে,চিনতে শিখিয়েছে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার আনন্দকে। উৎসব আসলে প্রাণের সাথে প্রাণের যোগ, হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের যোগ।রবীন্দ্রনাথ বলেছেন 'সত্য যেখানেই সুন্দর হয়ে প্রকাশ পায় সেইখানেই উৎসব'।হৃদয়ের সেই সুকোমল বৃত্তির জাগরণ যেন ফুটে ওঠা ফুলেরই মতো সত্য ও সুন্দর।এই জাগরণই উৎসব। তাই নানা কিছুর মধ্য দিয়ে,নানা উপলক্ষ্যে এই উৎসব প্রকাশ পায়। প্রাচীনকালে মানুষের হাতে না ছিল পসার, না ছিল পসরা।ছিল মনের আন্তরিকতা,মানুষকে কাছে টেনে নেবার ক্ষমতা।সেটাই ছিল উৎসবের সৌন্দর্য। তাই সেদিনের উৎসবে ক্ষুদ্র,তুচ্ছ উপকরণও প্রাণের উচ্ছ্বাসে মহৎ হয়ে উঠত।সেকালের উৎসবে লোক দেখানো ব্যাপার কিছু
"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান
"নবপ্রভাত" সাহিত্যপত্রের ৩০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে আমরা নির্বাচিত কয়েকজন কবি-সাহিত্যিক ও পত্রিকা সম্পাদককে স্মারক সম্মাননা জানাতে চাই। শ্রদ্ধেয় কবি-সাহিত্যিক-নাট্যকারদের (এমনকি প্রকাশকদের) প্রতি আবেদন, আপনাদের প্রকাশিত গ্রন্থ আমাদের পাঠান। সঙ্গে দিন লেখক পরিচিতি। একক গ্রন্থ, যৌথ গ্রন্থ, সম্পাদিত সংকলন সবই পাঠাতে পারেন। বইয়ের সঙ্গে দিন লেখকের/সম্পাদকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি। ২০১৯ থেকে ২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত গ্রন্থ পাঠানো যাবে। মাননীয় সম্পাদকগণ তাঁদের প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠান। সঙ্গে জানান পত্রিকার লড়াই সংগ্রামের ইতিহাস। ২০২৩-২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠানো যাবে। শুধুমাত্র প্রাপ্ত গ্রন্থগুলির মধ্য থেকে আমরা কয়েকজন কবি / ছড়াকার / কথাকার / প্রাবন্ধিক/ নাট্যকার এবং সম্পাদককে সম্মাননা জ্ঞাপন করে ধন্য হব কলকাতার কোনো একটি হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে (অক্টোবর/নভেম্বর ২০২৪)। আমন্ত্রণ পাবেন সকলেই। প্রাপ্ত সমস্ত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকার পরিচিতি এবং বাছাই কিছু গ্রন্থ ও পত্রিকার আলোচনা ছাপা হবে নবপ্রভাতের স্মারক সংখ্যায়। আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য। ঠিকানাঃ নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদকঃ নব
মুদ্রিত নবপ্রভাত উৎসব ২০২৩ সংখ্যার ডাউনলোড লিঙ্ক
মুদ্রিত নবপ্রভাত উৎসব ২০২৩ সংখ্যার সফ্ট কপি ডাউনলোড করতে ছবিতে ক্লিক করুন। ====০০০==== মুদ্রিত নবপ্রভাত উৎসব ২০২৩ সংখ্যাটি অনলাইনে অর্ডার করে বাড়িতে বসে পেতে পারেন অর্ডার করার লিঙ্ক: https://notionpress.com/read/nabapravat-utsab-2023 NABAPRAVAT30 কোডটি ব্যবহার করলে কম দামে পাবেন। (প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ৯৪৩৩৩৯৩৫৫৬ নিরাশাহরণ নস্কর। সম্পাদক, নবপ্রভাত।)
কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী
কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা : এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় পার্থ সারথি চক্রবর্তী কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। রাজার শহর কোচবিহারের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা আরো অনেক বেশি। দুর্গাপূজা আর দীপাবলির মতো দু'দুটো বিরাট মাপের উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই, এ শহর ভাসে রাস উৎসবের উন্মাদনায়। মদনমোহন ঠাকুর কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর। তাঁকে নিয়ে সবার আবেগ আর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা এখানে বাঁধনছাড়া। এক অপূর্ব মিলনোৎসবের চেহারা নেওয়া এই উৎসব ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক। জন, মত, সম্প্রদায়ের উর্ধে এই উৎসবের গ্রহণযোগ্যতা। সময়ের কষ্টি পাথরে পরীক্ষিত! এক প্রাণের উৎসব, যা বহুদিন ধরেই গোটা উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ উৎসবে পর্যবসিত।কোচবিহারের এই রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে যে মেলা হয় তাও সময়ের হাত ধরে অনেক বদলে গেছে। এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া! শৈশবে বাবার হাত ধরে যে মেলা দেখেছি তা চরিত্র ও আকৃতি দু'দিক থেকেই বদলে গেছে। গত পঁচিশ বছর ধরে খুব কাছে থেকে এই উৎসব ও মেলা দেখা, অনুভব করার সুযোগ হয়েছে। যা দিনদিন অভিজ্ঞতা ও প্রাপ্তির ঝুলিকে সমৃদ্ধ করে গেছে প্রতি ক্ষেত্রেই। খুব সংক্ষেপে এই উৎসবের ইতিহাস না জানাটা কিন্তু অবিচারই হবে বলে মনে
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন