Featured Post

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

ছবি
  সূচিপত্র অন্নদাশঙ্কর রায়ের সাহিত্য: সমাজের আয়না ।। বিচিত্র কুমার প্রবন্ধ ।। বই হাতিয়ার ।। শ্যামল হুদাতী কবিতায় সংস্কৃতায়ন (দ্বিতীয় ভাগ ) ।। রণেশ রায় পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত কবিতা ।। লেগে থাকা রোদ্দুরের ঘ্রাণের মতো ।। জয়শ্রী ব্যানার্জি কবিতা ।। ভুল ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। উন্মেষ ।। বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত কবিতা ।। গার্হস্থ্য ।। বিবেকানন্দ নস্কর একগুচ্ছ বিজয়ের কবিতা ।। বিচিত্র কুমার গল্প ।। পোষ্য ভূত ।। সমীর কুমার দত্ত কবিতা ।। আশপাশ ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। মেঘ ।। তীর্থঙ্কর সুমিত অণুগল্প ।। বংশীবদনের সুখদুঃখ ।। দীনেশ সরকার কবিতা ।। গভীর রাত ।। সুনন্দ মন্ডল তিনটি কবিতা ।। সুশান্ত সেন ভালোবাসার বাসা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত অণুগল্প ।। শিক্ষকের সম্মান ।। মিঠুন মুখার্জী কবিতা।। প্রশ্ন ।। জীবন সরখেল কবিতা ।।ক্ষরিত সে পথ ।। রহিত ঘোষাল কবিতা ।। রক্ত দিয়ে কেনা ।। মুহাম্মদ মুকুল মিয়া কবিতা ।। কংক্রিট ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছড়া ।। শীত নেমেছে ।। রঞ্জন কুমার মণ্ডল কবিতা ।। কিছু শব্দ ।। সমীর কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় কবিতা ।। শীতের নগ্নতা ।। রানা জামান কবিতা ।। পথ চলা ।। পাভেল আমান বেদ পু...

অণুগল্প ।। স্পিড ব্রেকার ।। দেবাংশু সরকার

 

স্পিড ব্রেকার 

দেবাংশু সরকার

     
দেখতে দেখতে প্রায় সাড়ে চার বছর হয়ে গেল।  আবার দরজায় কড়া নাড়ছে ভোট। দিনক্ষণ এখনো স্থির না হলেও, চারিদিকে ভোটের তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে। রাজ্য জুড়ে সাজো সাজো রব। পতাকা, পোষ্টার, ব্যানারে ছেয়ে গেছে রাজপথ। চারিদিকে যেন উৎসবের পরিবেশ। রাজনৈতিক মহলের বিশেষ ব্যস্ততা চোখে পড়ছে। 

     অত্যন্ত ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন মন্ত্রীমশাই। নাওয়া খাওয়া ছেড়ে সকালে বিকালে বিভিন্ন মাঠে ময়দানে বক্তৃতা দিচ্ছেন। রোদ বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে যোগ দিচ্ছেন মিছিলে। হাজার হাজার মানুষের সাথে দেখা সাক্ষাত করছেন। বাড়িয়ে চলেছেন জনসংযোগ। আজও মন্ত্রীমশাই চলেছেন বেশ দুরের এক জনসভায় বক্তৃতা দিতে। হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়লো মন্ত্রীমশাইয়ের কনভয়। কেবল কনভয়ের গাড়িগুলো নয়, তার আগে দাঁড়িয়ে আছে অসংখ্য গাড়ি। রাস্তা জুড়ে বিরাট যানজট। বোঝা যাচ্ছে  এই যানজট সহজে ছাড়বে না! রাস্তার অবস্থা দেখে মন্ত্রীমশাইয়ের কপালে ভাঁজ পড়লো। মনে হচ্ছে না তিনি সময় মত পৌছাতে পারবেন জনসভায়। আর প্রথম জনসভাতে পৌছাতে দেরি হলে, সারাদিনের সমস্ত প্রোগ্রাম এলোমেলো হয়ে যাবে। হয়তো একটা দিন নষ্ট হয়ে যাবে। কিছুটা বিরক্ত হয়ে তিনি হাঁক দিলেন, "গমবট সিং।"

      - "ইয়েস স্যার।" সাড়া দিলো গমবট।

      গমবট মন্ত্রীমশাইয়ের পি এ। বেশ কয়েক বছর সে দক্ষতার সঙ্গে এবং তার নিজস্ব স্টাইলে কাজ করে চলেছে। বুদ্ধিতে একটু খাটো হলেও, যেকোনও বিষয়ে ম্যানেজ করার সহজাত ক্ষমতা তার আছে। সেই ক্ষমতার জোরেই তার চড়চড় করে উন্নতি হয়েছে। উন্নতি মানে উন্নতি! একেবারে পি এ টু মন্ত্রীমশাই। দিনে দিনে গমবটের কর্ম দক্ষতার গুনে মন্ত্রীমশাইও ক্রমশ গমবটের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন। গমবটকে ছাড়া মন্ত্রীমশাইয়ের এক মুহূর্তও চলে না।

      যানজট দেখে বিরক্ত মন্ত্রীমশাই গমবটকে ডেকে দেখতে বলেন কেন যানজট হয়েছে রাস্তায়। গমবট খবর নিয়ে মন্ত্রীমশাইকে জানায় যে রাস্তায় একটা বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। পাঁচজন স্পট ডেড।  পাবলিক পথ অবরোধ করেছে। গাড়ি থেকে নেমে মন্ত্রীমশাই ঘটনাস্থলে যান। উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করেন। কথা দেন যে তিনি অবিলম্বে যথাযথ ব্যবস্থা করবেন। এই রাস্তায় আর দুর্ঘটনা হতে দেবেন না। সেই মত নির্দেশ দেন  গমবটকে। গমবটও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সমস্যা সমাধানের  প্রতিশ্রুতি দেয়।

      মহাসমস্যায় পড়েছে গমবট। এখন সে কি করবে? কি করে এই ব্যস্ত রাস্তার যানজট, দুর্ঘটনা রোধ করবে? বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিলেন রাস্তায় পঞ্চাশ মিটার অন্তর স্পিড ব্রেকার বসাতে। তাহলে গাড়ির গতি কিছুটা কমবে। দুর্ঘটনার পরিমাণ অনেকটাই কমে যাবে। কিন্তু পুরোপুরি দুর্ঘটনা মুক্ত করা কোনও ভাবে সম্ভব নয়। অনেক ভেবেচিন্তে গমবট সিদ্ধান্ত নিলো পঞ্চাশ মিটার নয়, পাঁচ মিটার অন্তর স্পিড ব্রেকার বসানোর। যেমন চিন্তা তেমন কাজ। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয়ে গেল স্পিড ব্রেকার বসানোর কাজ। 

    সদাব্যস্ত মন্ত্রীমশাইয়ের নজর সব দিকে থাকে।   সবকিছুর তিনি খোঁজ খবর রাখেন। জনগনকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি তিনি সব সময়ে পালন করেন। একমাস পর মন্ত্রীমশাই গমবটকে জিজ্ঞাসা করলেন, "বড় রাস্তার অবস্থা কি?"

      আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে গমবট উত্তর দেয়, "খুব ভালো স্যার।  বড় রাস্তায় আর কোনও যানজট বা দুর্ঘটনা ঘটছে না। স্পিড ব্রেকার এড়াতে সব গাড়ি এখন বড় রাস্তা ছেড়ে ফুটপাথ দিয়ে যাচ্ছে। যানজট আর দুর্ঘটনা এখন বড় রাস্তায় না হয়ে ফুটপাথে হচ্ছে। বড় রাস্তা এখন একদম পরিস্কার।"

                     ।। সমাপ্ত ।।
 
দেবাংশু সরকার,
34/10/A,M.G.ROAD, 
BUDGE BUDGE,
 KOLKATA  - 700137.

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮১তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩১ নভেম্বর ২০২৪

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৯তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮০তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩১ অক্টোবর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত