Featured Post
গল্প ।। গল্পটা মিথ্যে নয় ।। বিকাশকলি পোল্যে
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
বিকাশকলি পোল্যে
ঘটনাটা আমার ঠাকুরদার মুখে শোনা। শুধু ঠাকুরদার মুখে নয় অন্যদের মুখেও অনেকবার ঘটনাটা শুনেছি। ঘটনাটা বাড়ির বড়দের সবারই জানা। বিষয়টা বলতে গিয়ে সবার মুখে ভয়ের একটা ছাপ পড়ত। ঘটনাটা এখন সবার মুখে মুখে গল্পের মত হয়ে গেছে।
তবে যাকে নিয়ে এই গল্প সেই ছোট পিসির মুখে কোন বিকার দেখা যায় না। তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেই তিনি বলেন, সেই কবেকার কথা। তখন আমার কতই বা বয়স। সে সব কথা এখনো কি মনে থাকে রে খোকন। পরমুহূর্তেই তিনি খুশিতে ঝলমল করে ওঠেন।বলেন, ও খোকন সে এক কান্ড বুঝলি। জোছনা রাত। চারিদিকের মাঠঘাট সব চাঁদের আলোয় ভেসে যাচ্ছে। যেন ভাদ্র মাসের কোটাল।আলোর কোটাল। রতন কাকা আমাকে কাঁধে করে নিয়ে হাঁটছে। বলছে,একটু খুকু। আমি বললুম,না হাঁটব না। আমি তোমার কাঁধে চড়েই যাব। বেচারা তাইই করলে। ওই অতটা পথ
আমাকে কাঁধে করেই নিয়ে গেল। মামার বাড়ি গিয়ে দেখি তারাতো সব ঘুমুচ্ছে। রতন কাকা তাদেরকে তুলল।আমাকে দিদার কাছে রেখে রতন কাকা আবার ফিরে এল বাড়ি।
আসল ঘটনাটা বলি।তবে আমার মুখ দিয়ে নয়। পাঠকদের ঘটনাটা বলি ঠাকুরদাদার মুখ দিয়ে।
আমি তখন রয়েল সার্কাসে চাকরি করতুম। একবার যেখানে সার্কাসের তাঁবু পড়ত এক দু মাসের আগে সেখান থেকে তাঁবু উঠত না। এই সময় ছুটি পাওয়া যেত না। সার্কাসের তিনটে করে শো চলত। তাঁবু যখন এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেত তখন আমি ছুটি পেতুম।ওই দু'চারদিনের ছুটি। তাঁবু সরানোর কাজ করত কুলি কামিনরা। সেসব দেখভাল করার আলাদা লোকজন ছিল। তখন আমি ছুটি নিয়ে কয়েকদিনের জন্য বাড়ি আসতুম। ছুটি কাটিয়ে আবার নতুন জায়গায় গিয়ে সার্কাসের দলের সঙ্গে যোগ দিতুম।আমি ছিলুম সার্কাস দলের প্রধান হিসাব রক্ষক।
ছুটি নিয়ে বাড়িতে আছি। একদিন ছোটো খুকি খুব বায়না ধরেছে মামার বাড়ি যাবে। তার ছিল সাংঘাতিক জেদ। যখন যেটা চাইত তৎক্ষণাৎ তাকে সেটা দিতে হত না হলে কান্নাকাটি করে গোটা বাড়ি মাথায় তুলত।যেহেতু সে ছিল সবার ছোট তাই তাকে কেউ কিছু বলত না। সে অতি আদরে মানুষ হত। মামার বাড়ি যাবার জন্য ছোট খুকি ভীষণ উতলা হয়ে উঠেছে। আমার হাতে একদম সময় নেই। নতুন জায়গায় সার্কাস দলের তাঁবু খাটানো হয়ে গিয়েছে।এবার শো শুরু হবে।বাড়িতে খবর এসেছে দু-একদিনের মধ্যে সার্কাসে যোগ দিতে হবে। এদিকে জমিজমা সংক্রান্ত কিছু কাজ রয়েছে।আজ করি কাল করি করে করাই হচ্ছিল না।এর মধ্যে একবার আমাকে বি এল আর ও অফিসে যেতে হবে।আমার পক্ষে খুকিকে নিয়ে এখন তার মামার বাড়ি যাওয়া সম্ভব নয়।
খুকির মাকে ডেকে বললুম, মাধুরী তুমি যাও না খুকিকে নিয়ে।ঘুরে এসো না একবার। করুণা তো আছে এদিকটা সামলে নেবে। সে বললে, আমার বাপু অত সময় কোথায়! বড় খোকা মেজ খোকার স্কুল চলছে।সামনেই তাদের পরীক্ষা। তাদের রেখে এই দস্যি মেয়েকে নিয়ে আমি যাব কি করে?
কথাটা সত্যি। বড় খোকা মেজ খোকার তখন স্কুল চলছিল। সামনেই ফাইনাল পরীক্ষা। তাদের টিউশন পড়াতে বাড়িতে মাস্টারমশাইরা আসেন। তাদের চা জল খাবারের ব্যবস্থা করতে হয় মাধুরীকে।খুকি কিন্তু নাছোড়।সে মামার বাড়ি যাবেই না হল সে কিচ্ছু খাবে না। জেদ ধরে বসে রইল খুকি। দুপুরে সত্যিই সে কিছুই খেল না।আমি তাকে অনেক বোঝালুম।কিন্তু সে কিছুই শুনল না।মাধুরী মুখ ঝামটা দিয়ে বললে,বড় জেদ পাকড়া মেয়ে।
আমি রতনকে ডাকলুম।রতন আমাদের কাজের লোক।অনেকদিন থেকেই আমাদের বাড়িতে কাজ করে। বাড়ির টুকিটাকি ফাই ফরমাস খাটে। জমিজমা চাষবাসের দেখভাল করে। বড় খোকা আর মেজ খোকাকে স্কুলে নিয়ে যায় নিয়ে আসে। বিকেলবেলা খুকিকে পার্কে বেড়াতে নিয়ে যায়।রতনের বউ করুনা মাধুরীকে ঘরের কাজে সাহায্য করে।
রতন আমার কাছে এসে বলল, আমাকে ডেকেছেন বড়বাবু? রতন আমাকে বড়বাবু বলেই ডাকে। রতনের দিকে তাকিয়ে আমি প্রায় চমকে উঠলুম। তার শরীরের কি অবস্থা! ভীষণ রোগা হয়ে গিয়েছে।এতদিন আমি খেয়াল করিনি। বললুম, তোমার শরীরের কি অবস্থা হয়েছে রতন? সে বললে, বড়বাবু প্রায় জ্বর হয়।পেটের সমস্যা।কোন কিছু খেলে হজম হয় না।আমাকে ডেকেছেন বড়বাবু? আমি তাকে বসতে বললুম।রতন চেয়ার টেনে নিয়ে বসল।চেয়ার টেনে বসতেও যেন তার কষ্ট।
-আমার একটা কাজ করে দেবে রতন?
-কি কাজ করব বলুন।
-কাল সকালে খুকিকে একটু তার মামার বাড়ি দিয়ে আসবে?
রতন রাজি হল।
খুকির মুখে হাসি ফুটল। সে আবার আগের মতই খেলে বেড়াতে লাগল।সেদিন রাতে সে নিজে নিজেই ভাত খেল। তাকে খাইয়ে দিতে হল না। খেয়ে উঠে বলল,আমি বড় খোকা আর মেজ খোকার সঙ্গে ঘুমুব। আমাদের মুখ থেকে শুনে শুনে সেও বড় খোকা মেজ খোকা বলে।দাদা বলে ডাকে না। আমি বললুম, ঠিক আছে তুমি বড় খোকা মেজ খোকার সঙ্গেই ঘুমুতে যাও।সকালবেলা রতন কাকা তোমাকে মামার বাড়ি দিয়ে আসবে। মামার বাড়ি গিয়ে তুমি দুষ্টুমি করবে না। খুশিতে খুকির মুখ খানা উজ্জ্বল হয়ে উঠল।
প্রসঙ্গত বলে রাখি,আমাদের বাড়ি থেকে আমার শ্বশুরবাড়ির দূরত্ব ছিল প্রায় দশ বারো কিলোমিটার। তখনকার দিনে যাতায়াত ব্যবস্থা এত উন্নত ছিল না। বাড়ি বাড়ি সাইকেল বা মোটরসাইকেল ছিল না।হেঁটেই যাতায়াত করতে হত। মাঠের মাঝখান দিয়ে শর্টকাট একটা রাস্তা ছিল। সেই রাস্তা দিয়ে গেলে খুব কম সময়ে শ্বশুরবাড়ি পৌঁছান যেত।
পরদিন খুব সকালেই আমার শ্বশুরমশাই আমাদের বাড়ি এসে হাজির। আমার শ্বশুর মশাই ছিলেন খুব রাশভারি মানুষ। তিনি বাড়ির উঠোনে পা দিয়েই হৈচৈ বাঁধিয়ে দিলেন।
-মাধুরী, মাধুরী।
-কি হয়েছে বাবা এত সকালে তুমি কি মনে করে?
-তোর কি কোন কান্ডজ্ঞান নেই মাধুরী।
আমিও তখন ঘুম থেকে উঠে পড়েছি। বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছি। আমাকে দেখতে পেয়ে বললেন, এই যে বাবা অতুল।তুমিও আছো দেখছি। তা তোমাদের কান্ডজ্ঞানটা কি বলো দেখি বাবা।
আমি শান্ত স্বরে বললুম, আপনি বসুন বাবা।কি হয়েছে খুলে বলুন।
-এত রাতে রতনকে দিয়ে কেউ ওই ভাবে বাচ্চামেয়েটাকে পাঠায়?
-আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।
মাধুরী বলল,খুকিকে নিয়ে আজকে রতনের যাওয়ার কথা।
শ্বশুরমশাই অবাক হয়ে বললেন,আজকে যাওয়ার কথা! সে তো গত রাতেই চলে গেছে আমার বাড়ি।গভীর রাতে রতন আমাদেরকে ডাকাডাকি করে ঘুম ভাঙিয়ে তুলে বললে, খুকি খুব বায়না করছিল তাই রাতেই নিয়ে এসেছি।খুকিকে তার দিদার কাছে রেখে ঘর থেকে বেরিয়ে এল। ছোঁড়াকে বসতে বললাম । বসলেও না।
আমি তো আকাশ থেকে পড়েছি। মাধুরীর চোখেও বিস্ময়।রাতে রতন খুকিকে নিয়ে গেছে!হল্লা শুনে বড় খোকা মেজ খোকা ঘুম থেকে উঠে পড়েছিল। তারা বারান্দায় এসে বলল,খুকিতো ঘরে নেই। আমি রাগত স্বরে বড় খোকাকে বললুম,যা তো, একবার রতন কাকাকে ডেকে নিয়ে আয় তো।
কিছুক্ষণ পরে বড় খোকা ফিরে এসে বলল, রতন কাকার ভীষণ জ্বর।সে বিছানা ছেড়ে উঠতে পারছে না।খোকার পিছনে পিছনে উঠোনে এসে দাঁড়াল করুণা। আমি তাকে কিছু বলতে যাব তার আগেই সে বলল,ওর তো কাল সন্ধ্যে থেকেই ভীষণ জ্বর। বিছানায় শুয়ে আছে। বিছানা ছেড়ে উঠতে পারছে না। মাঝেমধ্যেই ভুল বকছে। আমরা সবাই বড়ই অবাক হলাম।তাহলে অত রাতে খুকি মামার বাড়ি গেল কি করে!
এর কোন ব্যাখ্যা পাওয়া গেল না। খুকিকে জিজ্ঞাসা করলে সে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে।
এত বছর পরেও আমরা এই ঘটনাটার কোন ব্যাখ্যা খুঁজে পাইনি। ছোট পিসির বিয়ে হয়ে অন্য বাড়ি চলে গিয়েছেন। তাঁরও ছেলে মেয়েরা সব বড় হয়ে গিয়েছে। পিসিকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি প্রথমটা কিছু বলতে চান না। কিছুক্ষণ পরেই তাঁর মুখটা ঝলমল করে ওঠে । মনে হয় হাজার ওয়াট বাল্বের আলো পড়েছে তাঁর মুখে । তখন তিনি জোছনা রাতের কথা বলেন।সেদিন চারিদিক চাঁদের আলোয় ভেসে যাচ্ছিল।ব্যস এইটুকুই। এর পর আর কিছুই মনে পড়ে না পিসির।বলেন, 'আমার তখন চার পাঁচ বছর বয়স।সেই বয়সের কোন ঘটনা কি আর এখন মনে থাকেরে খোকন?' অনেকেই বলেন,সেদিন সেই বাচ্চা মেয়ে টিকে নিশিতে পেয়েছিল।
আমি অনেক ভাবনা চিন্তা করেছি।কিন্তু এই ঘটনার কোনো ব্যাখ্যা খুঁজে পাইনি। আমার মনে হয়েছে পৃথিবী অপার রহস্যের আধার। সব মানুষের জীবনে কিছু না কিছু রহস্য লুকিয়ে আছে।ছোট পিসিমার জীবনেও এর রহস্য লুকিয়ে থাকুক। আমরা বরং এই ঘটনার কোন ব্যাখ্যা না খুঁজে সেদিনের সেই জোৎস্না রাতের ভুতুড়ে ঘটনাটিকে কল্পনা দিয়ে তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করি।
_________
বিকাশকলি পোল্যে
১৩,উষাপল্লী
২৮০,বোড়াল মেইন রোড
গড়িয়া
কলকাতা ৭০০০৮৪
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
জনপ্রিয় লেখা
প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা
লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা শ্রীজিৎ জানা "সময় চলিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়"। স্রোতের ধারা তার দু'প্রান্তে রেখে যায় ভাঙাগড়ার চিহ্ন। কালের দৃশ্যপটেও পরিবর্তনের ছবি অনিবার্যভাবেই চোখে পড়ে। সমাজ সময়ের ছাঁচে নিজেকে গড়ে নেয় প্রতিনিয়ত। সেখানে মনে নেওয়ায় বাধা থাকলেও,মেনে নেওয়ার গাজোয়ারি চলে না। ফলত কাল বদলের গাণিতিক হিসেবে জীবন ও জীবিকার যে রদবদল,তাকেই বোধকরি সংগ্রাম বলা যায়। জীবন সংগ্রাম অথবা টিকে থাকার সংগ্রাম। মানুষের জীবনযাপনের ক্ষেত্রে আজকে যা অত্যাবশ্যকীয় কাল তার বিকল্প রূপ পেতে পারে অথবা তা অনাবশ্যক হওয়াও স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে উক্ত বিষয়টির পরিষেবা দানকারী মানুষদের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এক কালে গাঁয়ে কত ধরনের পেশার মানুষদের চোখে পোড়তো। কোন পেশা ছিল সম্বৎসরের,আবার কোন পেশা এককালীন। সব পেশার লোকেরাই কত নিষ্ঠা ভরে গাঁয়ে তাদের পরিষেবা দিত। বিনিময়ে সামান্য আয় হত তাদের। আর সেই আয়টুকুই ছিল তাদের সংসার নির্বাহের একমাত্র উপায়। কালে কালান্তরে সেই সব পেশা,সেই সব সমাজবন্ধুরা হারিয়ে গ্যাছে। শুধুমাত্র তারা বেঁচে আছে অগ্রজের গল্পকথায়,আর বিভিন্ন সাহিত্য
মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি
লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি (লেখক ও সম্পাদকীয় দপ্তরের কথোপকথন আকারে) --কী পত্রিকা? --নবপ্রভাত। --মুদ্রিত না অনলাইন? --মুদ্রিত। --কোন সংখ্যা হবে এটা? --বইমেলা 2024। --কোন কোন ধরনের লেখা থাকবে? --প্রবন্ধ-নিবন্ধ, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া। --বিশেষ কোন বিষয় আছে? --না। যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে। --শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন আছে? --না। নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা 12-14 লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি 200/250শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। --ক'টি লেখা পাঠাতে হবে? --মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। --ফেসবুক বা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশিত লেখা কি পাঠানো যাবে? --না। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। --পত্রিকা কোন সময়ে প্রকাশিত হবে? --জানুয়ারি 2024-এর দ্বিতীয় সপ্তাহে। --লেখা পাঠানোর শেষতারিখ কত? -- 17 ডিসেম্বর 2023। --কীভাবে পাঠাতে হবে? --মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। --লেখার সঙ্গে কী কী দিতে হবে? --নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) --বিশেষ সতর্কতা কিছু ? --১)মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন '
সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল
সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ -- "ত্রয়ী কাব্য" ------------------------------------------------------------------------------ সুনন্দ মন্ডল নবীনচন্দ্র সেন সাহিত্যে তথা বাংলা কবিতার জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি চট্টগ্রাম জেলার নওয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৮৪৭ সালে তাঁর জন্ম এবং মত্যু ১৯০৯ সালে। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁকে 'বাংলার বায়রন' বলেছেন। জীবৎকালীন যুগে আত্মপ্রত্যয়ের মধ্যে জাতীয় চরিত্র আত্মস্থ করে নতুন সংস্কারে প্রয়াসী হয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছেন।মধুসূদন-হেমচন্দ্র-নবীনচন্দ্র--এই তিন কবি বাংলা কাব্যধারায় প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন। বিশেষত মহাকাব্য লেখার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন। এদিক থেকে মধুসূদন দত্ত একজন সফল মহাকাব্যিক। তাঁর 'মেঘনাদ বধ' কাব্যের মত গভীর ও ব্যঞ্জনাময় না হলেও নবীনচন্দ্র সেনের 'ত্রয়ী' কাব্য বিশেষ মর্যাদা দাবি করতেই পারে। তাছাড়া 'ত্রয়ী' কাব্যে ধর্মীয় ভাবধারার আবেগ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। নবীনচন্দ্র সেন বহু কাব্য লিখেছেন। যেমন- 'অবকাশরঞ্জিনী','পলাশীর যুদ্ধ', 'ক্লিওপেট্রা', 'রঙ্গমতী', 'খ্রীষ্ট', '
কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার
বসন্তের কোকিল তুমি বিচিত্র কুমার (০১) তোমার দু-আঁখির গহীন অরণ্যে একটা স্বপ্নের বহমান নদী রয়েছে, তারই রেশ ধরে আমি হেঁটে চলি অজানা বসন্তের পথে নীর উদ্দেশ্যে। সে চলার কোন শেষ সীমা নেই তাই আমার বিষণ্ণ একতারা সন্ন্যাস খুঁজে ফিরে , কবে তুমি বুঝবে অনুশ্রী মনের পর্দা খুলে একুশ বসন্ত তোমার রঙ ছিটিয়ে যাচ্ছে অচিনপুরে। এদিকে আমার দেহের প্রতিটি শিরা ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে তোমার ভালোবাসার একটু উষ্ণতা পাবার জন্যে, শুধু অনুভবে তাণ্ডব উচ্ছাসিত হচ্ছে--- যেদিকে তাকাই --- ফুলে ফুলে ভ্রমর গুনগুনিয়ে উড়ে উড়ে পরে বসন্তের কোকিল গান গায় নব বসন্তে, তোমার দুই চোখে আমার একই ছায়া রয়ে যায় উতলা ভালোবাসার সীমান্তে। (০২) এক রক্তাক্ত বসন্তের স্মৃতি কোন এক উতলা বসন্তের সকালে পুষ্পবনে ফুটেছিল একটি টকটকে লাল গোলাপ, তার সাথে হয়েছিলো দেখা প্রথম ফাগুনে হয়েছিল দুজনার এ জীবনের আলাপ। তারপর প্রতিটি শীতের ভোরে অনেক রোদের পরশ মেখে ছুঁয়ে যেতে আমার বুকের বাঁ পাস শিশির রেখা, তখন প্রতিটি ভোর হয়ে যেত ভীষণ রকম মিষ্টি আর ছিলো শুধু বসন্তের ঘ্রাণ মাখা। প্রতিটি সকালে একঝাঁক মায়াবী পাখি অনুভবের
প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৯তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সূচিপত্র কবিতা ।। তৈরি হয় এক নতুন বিপ্লবের পটভূমি ।। প্রণব কুমার চক্রবর্তী কবিতা || প্রতিবাদ || জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় কবিতা ।। সেই মেয়েটি রাত জাগে ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। শপথ ।। দীপঙ্কর সরকার কবিতা ।। কোরাস রাত ।। বন্দনা পাত্র কবিতা ।। তিলোত্তমার বিচার চাই ।। দীনেশ সরকার অণুগল্প ।। ব্যাকবোন ।। বিশ্বনাথ প্রামাণিক কবিতা ।। আন খুঁজে আন শিরদাঁড়াটা ।। জয়শ্রী সরকার কবিতা ।। জীবন এখন ।। লাবণী পাল কবিতা ।। তিলোত্তমার বিচার চাই! ।। গোবিন্দ মোদক কবিতা ।। যুদ্ধ , প্রতিনিয়ত ।। সুমিত মোদক মুক্তভাবনা ।। কী বলব! ।। বন্দনা সেনগুপ্ত প্রতিবেদন ।। বিচার পাক অভয়া ।। জয়শ্রী বন্দ্যোপাধ্যায় অভয়ার যে চিঠিটা আজো পাওয়া যায়নি ।। আশীষকুমার চক্রবর্তী কবিতা ।। জগন্মাতা নাকি তিনি ।। অরবিন্দ পুরকাইত কবিতা ।। মেয়েটির মৃত্যু দেখে ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য কবিতা ।। অন্ধকারের আলো ।। বিবেকানন্দ নস্কর কবিতা ।। ঘোষণা ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। অপেক্ষায় ।। রণেশ রায় কবিতা ।। গ্লানি ।। সুজন দাশ কবিতা ।। বিনীত আবেদন ।। শংকর ব্রহ্ম কবিতা ।। তুই যে মেয়ে তিলোত্তমা ।। অশোক দাশ কবিতা ।। শোক সন্তাপের দুর্গা ।। সুদামকৃষ্ণ মন্ডল ক
প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮০তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩১ অক্টোবর ২০২৪
সূচিপত্র গল্প ।। উৎশব উৎসব ।। বন্দনা সেনগুপ্ত প্রবন্ধ ।। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। বাংলায় প্রথম আত্মজীবনী লেখিকা রাসসুন্দরী দেবী ।। সবিতা রায় বিশ্বাস মগরাহাট (দক্ষিণ ২৪ পরগনা) এলাকার স্থানীয় কিছু কথ্যশব্দ, উচ্চারণ, বাগধারা ইত্যাদি (পর্ব-৬)।। অরবিন্দ পুরকাইত কবিতা ।। একটি মৃত্যু, অজস্র প্রতিবাদ ।। নাসির ওয়াদেন কবিতা ।। অন্ধকার জগৎ ।। সুপ্রভাত মেট্যা গুচ্ছকবিতা ।। আবদুস সালাম কবিতাগুচ্ছ ।। হীরক বন্দ্যোপাধ্যায় খোলা কবিতা ।। মানস মণ্ডল নিবন্ধ ।। সম্পর্ক ।। সংঘমিত্র ব্যানার্জি উপন্যাসিকা ।। উদয় ।। তপন তরফদার সিনেমা রিভিউ ।। ছবি : বহুরূপী, পরিচালক : রাজাদিত্য ব্যানার্জি ।। আলোচনা: জয়শ্রী ব্যানার্জি গল্প ।। গল্পটা মিথ্যে নয় ।। বিকাশকলি পোল্যে অণুগল্প ।। স্পিড ব্রেকার ।। দেবাংশু সরকার কবিতা ।। একটা পুরোনো অঙ্ক ।। রঘুনাথ চট্টোপাধ্যায় কবিতা ।। গোপন সম্মোহন ।। বিশ্ব প্রসাদ ঘোষ কবিতা ।। আগুনের পাখী হব ।। কাকলী দেব দুটি কবিতা ।। লালন চাঁদ কবিতা ।। বেঁচে থাকে ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। হে অনিন্দ্য, রক্তাক্ত মাকড়সার সর্বাঙ্গ ঋষি দৃশ্য খাও
উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত
উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে সৌরভ পুরকাইত বাংলার উৎসব বাংলার প্রাণ। প্রতিদিনের জীবনযাপনের মধ্যে যখন মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন তাকে বেঁচে থাকার রসদ যোগায় এই উৎসব। কথায় বলে 'বারো মাসে তেরো পার্বণ'।মন আনন্দই চায়।তাই তাকে সজীবতা দিতে,পরিবারের,সমাজের ভালো-মন্দের কথা মাথায় রেখে মানুষ নিজেই সৃষ্টি করে নিয়েছে নানাবিধ উৎসবগুলিকে। একেবারে প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ কখনোই উৎসব বিমুখ ছিল না।উৎসবই তাকে ঘর থেকে বাইরে টেনে এনেছে,চিনতে শিখিয়েছে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার আনন্দকে। উৎসব আসলে প্রাণের সাথে প্রাণের যোগ, হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের যোগ।রবীন্দ্রনাথ বলেছেন 'সত্য যেখানেই সুন্দর হয়ে প্রকাশ পায় সেইখানেই উৎসব'।হৃদয়ের সেই সুকোমল বৃত্তির জাগরণ যেন ফুটে ওঠা ফুলেরই মতো সত্য ও সুন্দর।এই জাগরণই উৎসব। তাই নানা কিছুর মধ্য দিয়ে,নানা উপলক্ষ্যে এই উৎসব প্রকাশ পায়। প্রাচীনকালে মানুষের হাতে না ছিল পসার, না ছিল পসরা।ছিল মনের আন্তরিকতা,মানুষকে কাছে টেনে নেবার ক্ষমতা।সেটাই ছিল উৎসবের সৌন্দর্য। তাই সেদিনের উৎসবে ক্ষুদ্র,তুচ্ছ উপকরণও প্রাণের উচ্ছ্বাসে মহৎ হয়ে উঠত।সেকালের উৎসবে লোক দেখানো ব্যাপার কিছু
"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান
"নবপ্রভাত" সাহিত্যপত্রের ৩০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে আমরা নির্বাচিত কয়েকজন কবি-সাহিত্যিক ও পত্রিকা সম্পাদককে স্মারক সম্মাননা জানাতে চাই। শ্রদ্ধেয় কবি-সাহিত্যিক-নাট্যকারদের (এমনকি প্রকাশকদের) প্রতি আবেদন, আপনাদের প্রকাশিত গ্রন্থ আমাদের পাঠান। সঙ্গে দিন লেখক পরিচিতি। একক গ্রন্থ, যৌথ গ্রন্থ, সম্পাদিত সংকলন সবই পাঠাতে পারেন। বইয়ের সঙ্গে দিন লেখকের/সম্পাদকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি। ২০১৯ থেকে ২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত গ্রন্থ পাঠানো যাবে। মাননীয় সম্পাদকগণ তাঁদের প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠান। সঙ্গে জানান পত্রিকার লড়াই সংগ্রামের ইতিহাস। ২০২৩-২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠানো যাবে। শুধুমাত্র প্রাপ্ত গ্রন্থগুলির মধ্য থেকে আমরা কয়েকজন কবি / ছড়াকার / কথাকার / প্রাবন্ধিক/ নাট্যকার এবং সম্পাদককে সম্মাননা জ্ঞাপন করে ধন্য হব কলকাতার কোনো একটি হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে (অক্টোবর/নভেম্বর ২০২৪)। আমন্ত্রণ পাবেন সকলেই। প্রাপ্ত সমস্ত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকার পরিচিতি এবং বাছাই কিছু গ্রন্থ ও পত্রিকার আলোচনা ছাপা হবে নবপ্রভাতের স্মারক সংখ্যায়। আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য। ঠিকানাঃ নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদকঃ নব
মুদ্রিত নবপ্রভাত উৎসব ২০২৩ সংখ্যার ডাউনলোড লিঙ্ক
মুদ্রিত নবপ্রভাত উৎসব ২০২৩ সংখ্যার সফ্ট কপি ডাউনলোড করতে ছবিতে ক্লিক করুন। ====০০০==== মুদ্রিত নবপ্রভাত উৎসব ২০২৩ সংখ্যাটি অনলাইনে অর্ডার করে বাড়িতে বসে পেতে পারেন অর্ডার করার লিঙ্ক: https://notionpress.com/read/nabapravat-utsab-2023 NABAPRAVAT30 কোডটি ব্যবহার করলে কম দামে পাবেন। (প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ৯৪৩৩৩৯৩৫৫৬ নিরাশাহরণ নস্কর। সম্পাদক, নবপ্রভাত।)
কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী
কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা : এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় পার্থ সারথি চক্রবর্তী কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। রাজার শহর কোচবিহারের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা আরো অনেক বেশি। দুর্গাপূজা আর দীপাবলির মতো দু'দুটো বিরাট মাপের উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই, এ শহর ভাসে রাস উৎসবের উন্মাদনায়। মদনমোহন ঠাকুর কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর। তাঁকে নিয়ে সবার আবেগ আর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা এখানে বাঁধনছাড়া। এক অপূর্ব মিলনোৎসবের চেহারা নেওয়া এই উৎসব ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক। জন, মত, সম্প্রদায়ের উর্ধে এই উৎসবের গ্রহণযোগ্যতা। সময়ের কষ্টি পাথরে পরীক্ষিত! এক প্রাণের উৎসব, যা বহুদিন ধরেই গোটা উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ উৎসবে পর্যবসিত।কোচবিহারের এই রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে যে মেলা হয় তাও সময়ের হাত ধরে অনেক বদলে গেছে। এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া! শৈশবে বাবার হাত ধরে যে মেলা দেখেছি তা চরিত্র ও আকৃতি দু'দিক থেকেই বদলে গেছে। গত পঁচিশ বছর ধরে খুব কাছে থেকে এই উৎসব ও মেলা দেখা, অনুভব করার সুযোগ হয়েছে। যা দিনদিন অভিজ্ঞতা ও প্রাপ্তির ঝুলিকে সমৃদ্ধ করে গেছে প্রতি ক্ষেত্রেই। খুব সংক্ষেপে এই উৎসবের ইতিহাস না জানাটা কিন্তু অবিচারই হবে বলে মনে
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন