google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re নিবন্ধ ।। সম্পর্ক ।। সংঘমিত্র ব্যানার্জি - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

শনিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৪

নিবন্ধ ।। সম্পর্ক ।। সংঘমিত্র ব্যানার্জি

 

সম্পর্ক

সংঘমিত্র ব্যানার্জি


সম্পর্ক হল এমন কিছু চার অক্ষরের মিলিত শব্দ যেই শব্দের অর্থ খুঁজতে খুঁজতে মানুষের গোটা জীবনটাই চলে যায় তাও মানুষ সঠিক অর্থ খুঁজে পায় না। সম্পর্ক হল এমন এক বিরল অনুভূতি যেই অনুভূতির বশবর্তী হয়ে আমরা সবাই পৃথিবীতে আসি। আমরা সেই মানুষটিকে ভুলে যাই যার সুসম্পর্কের বশবর্তী হয়ে আমরা পৃথিবীতে এসেছিলাম পৃথিবীটা উপভোগ করছি পৃথিবীতে এই সব রকম অনুভূতি আমরা ভোগ করছি সে হলো আমাদের মা। মাঝে মাঝে আমরা সেই মা শব্দটাই অর্থ ভুলে যাই। সম্পর্কগুলো সেটাই যেটা হৃদয় থেকে অর্থাৎ মন থেকে গ্রহণ করতে হয় শুধু মুখ থেকে নয়। সম্পর্ক শুধু সুখে-দুখে পাশে থাকা নয় সম্পর্ক হল এমন এক অনুভূতি যা অনেক সময় কাছে না থেকেও অনুভূত হয়। যে কোনো সম্পর্কেই থাকে দায়বদ্ধতা। আর সেই দায়বদ্ধতা সঠিকভাবে পালন করতে পারলেই যে কোন সম্পর্ক সু-সম্পর্কে পরিণত হতে পারে। 
 
বর্তমানে কর্মব্যস্ত জীবনে ছোটখাটো বিষয়গুলিকে কেন্দ্র করে জটিল সমস্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। এই নিজে থেকে তৈরি করার সমস্যাগুলি অনেক সম্পর্ককে নিয়মিত আঘাত করে চলেছে। সম্পর্কগুলো এমন স্বাধীন মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ যা জোর করে কারো সাথে করা যায় না। সম্পর্ক তখনই কারো সাথে সম্ভব যখন দুজন মানুষ একই চিন্তার বশবর্তী হয় অর্থাৎ তাদের দুজনের মধ্যে মনের মিল থাকে। সম্পর্কের ভিত হল বিশ্বাস ও ভালোবাসা। এই দুই অনুভূতি না থাকলে সম্পর্ক কখনো সঠিকভাবে তৈরি হয় না। যেই সম্পর্কের মনের মিল থাকে না শুধু লোক দেখানোর জন্য তৈরি হয়, সেই সম্পর্ক বেশি দূর বেশি দিন চলতে পারে না। আবার যেই সম্পর্কে বিশ্বাস ও ভালোবাসা দায়বদ্ধতা থাকে সেই সম্পর্ক মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্তও টিকে থাকে। কারণ, এই সম্পর্কের ভীত ছিল ভালোবাসা। যেই সম্পর্কের মূলে বিশ্বাস ও ভালোবাসা থাকবে সেই সম্পর্ক টিকে থাকতে বাধ্য, কারণ বিশ্বাস ও ভালোবাসা হলো সম্পর্কে একে অপরের পরিপূরক. নইলে যে কোন সম্পর্ক তাসের ঘরের মতো যে কোন মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে। এখন বর্তমান সমাজে মানুষের ধৈর্য কমে যাচ্ছে, যা যে কোনো সম্পর্কের বাধনটাকে সক্রিয় করে না।
 
 ইগো অহংকার এবং অবিশ্বাস যা কিনা একটি সম্পর্কের ভিতকে নষ্ট করে দেয় কোন নতুন সম্পর্কের শুরুর আগেই বিনাশ করে দিচ্ছে। তাই প্রত্যেকটি মানুষ যদি জীবনে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিসের কথা যথা আত্মমর্যাদা, সততা, সম্মান, যোগাযোগ ও স্পেস -- এগুলো বিপরীত মানুষটিকে দিতে পারে তবে সেই সম্পর্কে কখনো চিড় ধরে না। দীর্ঘদিন ধরে তার সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকে। 
 
সম্পর্ক হল সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ যা বিশ্বাস ও ভালবাসার উপর দাঁড়িয়ে থাকে যেখানে এক শব্দের অভাব ঘটলেই অন্য কোন উত্তাল ঢেউ এসে অন্তরায় সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু মানুষের এত কিছু সমস্যার মধ্যেও সম্পর্ক ছাড়া মানুষ বাঁচতে অক্ষম তাই সম্পর্ক মানুষ তৈরি করতেই পারে। যেমন জল ছাড়া মাছ বাঁচতে পারে না, বাঁচা সম্ভব নয়। তেমনি মানুষও প্রতিনিয়ত সম্পর্ক তৈরি করে চলেছে আঘাত খেয়েও। সে সম্পর্ক মাতৃত্ব তো হতে পারে বা বন্ধুত্ব বা প্রেমের সম্পর্ক হতে পারে। সবকটি একেকটা বিভিন্ন দিক থেকে দেখা সম্পর্কে উদাহরণ যা প্রত্যেকটা মানুষের নিত্য নৈমিত্তিক জীবনের মধ্যে আছে। আমরা জানি না আমাদের জীবনে খুব কাছের সম্পর্ক ছাড়াও বাইরের জগতে বিভিন্ন মানুষের সাথে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে বিভিন্নভাবে সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে। কোন সম্পর্ক ঠিক কতদূর হতে পারে তা নিয়ে মানুষ অজ্ঞাত তবুও মানুষ বাজি রেখে সম্পর্ক তৈরি করে। 
 
একটা বাগানে যখন একটা ফুল ফোটে তখন সে ফুলটিকে আরো সুন্দর বড় করার জন্য নিয়মিত জল দিতে হয় তখন সে ফুল দেওয়ার মানুষটির সাথেও ফুলটির একটা সুন্দর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এটাও একটা সম্পর্কের উদাহরণ। একটা পশুকেও যখন একটা নির্দিষ্ট সময় নির্মিত খেতে দেয়া হয় তখন এই পশুটির সাথেও যে খেতে দিচ্ছে তার একটা সুন্দর সম্পর্কও গড়ে ওঠে নাইবা হোক সেটা আত্মিক। আজকের পৃথিবীতে সব আত্মিক সম্পর্কগুলো মিথ্যা সম্পর্কে পরিণত যেটা সমাজের ওপর খুব বাজে প্রভাব পড়ছে। তাই সম্পর্ক যেকোনো সময় যেকোনো বিষয়ে যে কোন মানুষ পশুর নিথর জিনিসের হতে পারে. কোন মানুষকেও আপনি না চিনলে তার সাথে দুটো ভালো করে কথা বললেও একটা সুসম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে এই পৃথিবীতে এমন অনেক অনাথ ছেলে-মেয়ে আছে। যাদের সত্যিই নিজের বলে কেউ নেই। তবুও আজকের দুনিয়ায় তারা কিন্তু একা নয়। এই পৃথিবীতে এমন কিছু ব্যক্তি আছে যারা এইসব অনাথ দুস্থ মানুষের কাছে খুব ভালো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের হাত বাড়িয়ে দেয়।

==============

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন