Featured Post

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

ছবি
   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা ১২-১৪ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৫-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # *) ব্যবহার করবেন না। ৫) লেখার নীচে একটি ঘোষণা দিন:  'লেখাটি স্বরচিত ও অপ্রকাশিত'। মেল আইডি :  printednabapravat@gm

গল্প ।। ক্ষণিকের যাত্রী ।। জাহিদ

ক্ষণিকের যাত্রী

জাহিদ

 

প্রথম

      পড়ার টেবিলের উপর রাখা চা টা এতক্ষণ বোধহয় ঠান্ডা হয়ে গেছে । অথচ দেখো মৌলির কোন খেয়ালই নেই সেদিকে। পড়ার টেবিলের সামনে একটা জানালা। বাগানের নিম গাছটার একটা ডাল নুয়ে পড়েছে ওর জানালার কাছে । এতটাই কাছে যে হাত বাড়ালেই ছোঁয়া যায় । 
       সামনে পড়ার টেবিলের ডানদিকে ম্যাকবেথ নাটকের বই তার ওপর রাখা হাতের কাজের একটা পেনদানি । গতদিন অনেক জিনিসের সঙ্গে এটাও শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলা থেকে কিনে এনেছে ও ।বাকি জিনিস গুলো এখনো ব্যাগ থেকে বের করাই হয়নি । আরো ও সময় পেয়েছেই বা কখন ।সেই রাত-ভোরে বাড়ি ফিরেছে ।সঙ্গে সঙ্গী একরাশ শ্রান্তি ও মাথা যন্ত্রণা । বাড়ি এসে কোনরকমে হাতমুখ ধুয়ে দুটো ভাত নাকে মুখে গুজে শুয়ে পড়েছে । এই আধঘন্টা আগে উঠেছে। ঘড়ির কাঁটা বলছে এখন সকাল পাঁচটা বেজে সাত। শীতের সকাল তাই লেপের তলা থেকে ওঠেনি । মায়ের ঠেলাতে একটু খাঁড়া হয়েছে মাত্র।
       এক মাথা উস্কোখুস্কো চুল ।শরীরের প্রতি তেমন কোনো যত্ন নেই ।অথচ এমন অবস্থাতেও কত সুন্দর ও। কিছু মানুষকে বোধহয় পটের বিবি না সাজলেও ভালো লাগে ! বাইরে তখনও কুহেলি জালে মোড়া সূর্য। জানালার শার্সি ভেদ করে আলতো আলো আসছে ঘরে ।খুব মৃদু। কেমন যেন এক কল্পনার জগতে চলে যাওয়া যায় ওই আলোর সরণি বেয়ে! খুব ভালো লাগে ওর এই আবছা আলো । একে ও ভাবুক তায় আবার সাহিত্যের ছাত্রী। এবার ভালো কলেজ থেকে ইংরেজি সাহিত্যের উপর ফোর সেমিস্টারের পরীক্ষা দিয়েছে । মায়ের আশা গতবারের মতো এবারও দুর্দান্ত রেজাল্ট করবে ।কিন্তু ওর এসবে কোনো আগ্রহ নেই ।ভাবনার জায়গাটা ওর একান্ত নিজস্ব। তবে আজ ওর ভাবনার আকাশে অন্য সুর........

দ্বিতীয়

        ঘড়ির কাঁটায় দুপুর দুটো বেজে পাঁচ। ট্রেন ছাড়বে একটু পরই।ও বসেছিল ,হঠাৎ মনে পড়ল ওর তো জলের বোতল নেয়া হয়নি ।এত খানি পথ, একটা জলের বোতল নেওয়া মন্দ নয় । আজ স্টেশনেই তো জলের দোকান । ট্রেন ছাড়ার আগেই জল নিয়ে ঢুকে পড়বে ।যেই ভাবা সেই কাজ।
        সবকিছু ঠিকঠাকই ছিল জল কেনার শেষ পর্বে শুনতে পেল ট্রেন ছাড়ছে। জলের দামটা কোনোক্রমে মিটিয়ে দিয়ে ও দৌড় লাগালো, আর সেখানেই বিপত্তি। চারিদিকে গেল গেল রব। একে তো ট্রেন চলতে শুরু করেছে আবার তার উপর লম্বা লম্বা হিল পরে দৌড়াতে গিয়ে গেল পা হড়কে। আরেকটু হলেই সোজা চলে যেত ট্রেনের তলায়। ভয়ে ও চোখ মুদেছে। কানে যেন হাজার সাইরেন বাজছে। হঠাৎ ডান হাতে কনুইয়ের কাছে একটা মুষ্টির অনুভব। একটা হ্যাঁচকা টান । দুজন হুমড়ি খেয়ে পরল ট্রেনের মেঝেতে। জলের বোতলটা ছিটকে পড়েছে স্টেশনে.........

তৃতীয়

       প্রায় আধঘন্টা কাটলো ।ডান পায়ের গোড়ালিটা ফুলে ঢোল। পায়ের ওপর পলিথিনে বাঁধা কয়েক টুকরো বরফ। ওরা দুজন ছাড়া কামরায় আর কেউ নেই। হঠাৎ অপরদিকের একটা পুরুষ কন্ঠ বলে উঠল,
—— ব্যথা কি একটু কমছে ? আরেকটু ভালো করে দাও বরফটা...সরিও না.... শীতকাল ,ব্যথা করবে কিন্তু..!
     মৌলি নিশ্চুপ। গলা শুকিয়ে কাঠ। সহসা একটা জল ভরা বোতল এগিয়ে এলো অপর দিক থেকে। 
——নাও ,একটু জল খাও । তোমার জল টা তো ওখানেই পড়ে গেছে ।
  মৌলি নিঃশব্দে হাত বাড়িয়ে জলটা নিলো। দু ঢোক খেলো। আবার এগিয়ে দিতে গেল ছেলেটার দিকে...
 ——না থাক। ওটা তুমি রাখো, আমার কাছে আছে।
    এটা দুর্গাপুর স্টেশন। ট্রেন ক্ষণিকের জন্য থেমেছে ।ওরা ভেবেছিল হয়তো কেউ উঠবেন এই স্টেশনে, উল্টে পাশের কামরায় থাকা দুজন ভদ্রমহিলা যারা এতক্ষন গল্পে মশগুল ছিলেন তাঁরা এবার নেমে গেলেন। ট্রেনের শূন্যতা আরও গভীর হলো । শোনা যাচ্ছে ট্রেন চলার ঘ্যাট ঘ্যাট শব্দ । বাইরেটা অন্ধকার। জানালা বন্ধ । শীতের কারণে স্তব্ধতা আরো নিরেট হয়ে উঠেছে ।
  দুটো ক্যাডবেরি ছেলেটা মেয়েটার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল,
— খাবে ?
  মৌলি হাত বাড়ালো ।
——ধন্যবাদ ।
এতক্ষণ পরে ও কোন কথা বলল। 
—তোমার নাম কি ?
 —কিশলয় । তোমার নাম?
— বাহ! কি সুন্দর নাম ... আমার নাম মৌলি....
— তুমি কি একাই এসেছো ? সঙ্গে কেউ আসেনি? সাবধানে ট্রেনে উঠতে হয় আরেকটু হলেই তো.....
— ধন্যবাদ বন্ধু !আমার প্রাণ বাঁচিয়েছো তুমি। আমি তোমার কাছে কৃতজ্ঞ । আর আমি একাই এসেছি।
   এভাবে কথা চলল কিছুক্ষন। ক্রমে জানা গেল ছেলেটি বিশ্বভারতীর পাঠভবনের বাংলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। আজ বাড়ি যাচ্ছে ঘুরতে। ওদিকে মৌলি এখানে এসেছিল তিন দিনের জন্য ঘুরতে আজ ও ও বাড়ির পথে। এরই মধ্যে ওদের দুজনের বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে। মাঝেমধ্যে দুজনেই হেসে উঠছে। যেন কত দিনের পরিচিত ।মাঝে একবার ছেলেটা তো বলেই বসলো 
— তোমার চোখটা কি মায়াবী। কি দাও গো চোখে ,অ্যালকোহল ? এত নেশা লাগে কেন....?
 স্মিত হেসে বলল মৌলি বলে ওঠে,
—দিতাম না‌। তবে তুমি বললে , এবার দিতেই হবে দেখছি..
  দুজনে হেসে ওঠে । মৌলি নিজের চোখের প্রশংসা পূর্বে পরিচিত লোকেদের কাছে শুনে থাকলেও অপরিচিত লোকের কাছে এই প্রথম। তাই ওর গালে লজ্জা লেশটা অনেকক্ষণ লেগেছিল ।
    ঘোষণা হল সামনে দুর্গাপুর জংশন। ছেলেটা শশব্যস্ত হয়ে উঠলো‌।
— এবার যে আমাকে নামতে হবে মৌলি ।
 মৌলির মনটা এখন থেকেই কেমন হা হা করে উঠল। এই তো ক্ষণিকের পরিচয় তাতেই মানুষের মন এত উতলা হয়ে ওঠে ! এইতো বোধকরি ভালোলাগা .....এক ছাদের তলায় অর্ধশত বছর থেকে যা আদায় করা যায় না এমন পথমধ্যে ক্ষণিকের দেখাতেও তা পাওয়া সম্ভব। সত্যিই প্রেম যে রহস্যময়।
    ট্রেনের গতি ধীরে ধীরে কমছে আর ও দিকে মৌলির মনে বিচ্ছেদের সুর তীব্র হচ্ছে। ঘড়ির কাঁটার মতে তাদের পরিচয় এর সময়কাল সোয়া পাঁচ ঘণ্টার কাছাকাছি । কিন্তু কেন এ আকুলতা ?....এর উত্তর নেই মৌলির কাছে। তবুও একবার বলল,
— আচ্ছা বন্ধু ...সাবধানে যেও।
    নামার সময় হাত নেড়ে কিশলয় বললো 
—তুমিও সাবধানে যেও... সাবধানে নামবে... তখন কিন্তু আমি থাকবো না।
 বলে ও হেসে উঠল। মৌলির ঠোঁটের কোণে তখন হাসি রেখা। মৌলি হাত নাড়ে ওকে । স্টেশনে জীবনের স্রোতে হারিয়ে যায় কিশলয়।
মৌলি অস্ফুটে বলে ,—আবার দেখা হবে বন্ধু......


==================
 
জাহিদ
Ps... Ashok Nagar
Dist--- north 24 pgs
Pin---- 743702
Ph...7501667007
Class -- XII ( outgoing)....

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৯তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮০তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩১ অক্টোবর ২০২৪

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

মুদ্রিত নবপ্রভাত উৎসব ২০২৩ সংখ্যার ডাউনলোড লিঙ্ক