google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re গদ্য ।। আলোকসম্পাতঃ দস্যু রত্নাকর থেকে আদি কবি বাল্মীকি ।। প্রদীপ দে ৪ - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

শুক্রবার, ১৭ জুন, ২০২২

গদ্য ।। আলোকসম্পাতঃ দস্যু রত্নাকর থেকে আদি কবি বাল্মীকি ।। প্রদীপ দে ৪



আলোকসম্পাতঃ দস্যু রত্নাকর থেকে আদি কবি বাল্মীকি

~ প্রদীপ দে


রাত তখন কালো চাদরে নিজেকে মুড়ে নিতে চাইছে আর আমরা মাত্র দুজন মুখের মাস্ক সরিয়ে একটু অক্সিজেন পাওয়ার আশায় হাতড়াচ্ছি। কত হবে? সবে সন্ধ্যা ছেড়ে ঘড়ির কাঁটা রাত দশ নম্বর ঘরকে ছুঁতে দৌড়াচ্ছে।
দাঁড়িয়ে গল্প করছিলাম নির্জনে, ভ্যাপসা গরমের ক্লান্তি মেখে, লেখালেখির গল্প নিয়ে। কবিতা, গল্প নিয়ে আলোচনায় মত্ত রোজের রাত্রিকালীন রোজনামচা - এখন এই আপদকালীন সময়ে।

হঠাৎই কবি মলয় আমাকে জানতে চাইলো -- আমার কবিতা কেমন লাগে?

--- ভালো। তবে মানে উদ্ধার করা বেশ কষ্টের। যে পারে সে আনন্দ পাবে। তবে সহজ সরল গল্পে দেখেছি সকলে বেশি আকৃষ্ট হয়।

-- তা ঠিক বলেছেন। তবে পৃথিবীতে প্রথম লেখা হয় কবিতা। 

আমি মজা করলাম -- সিওর?

-- দাঁড়ান,  ফোন করি আমার পন্ডিত বন্ধু শ্রীসরসিজ কে। ও এব্যাপারে ভাল বলতে পারবে।
মোবাইলে কথা চললো - আমি পাশ থেকে সব শুনছি, প্রথমে চলে এল বেদের যুগ, বেদের যুগ থেকে শুরু। প্রথমেই আত্মপ্রকাশ হয় শ্লোকের। চারটি বেদই শ্লোক দ্বারা রচিত। সেই শ্লোক ছিল প্রথমে সংস্কৃতের।

এরপর যিনি প্রথম আদি ও প্রতিষ্ঠিত কবি হিসাবে আমাদের সেই মহামূল্যবান শ্লোক বা কবিতা রচনা করেন, তিনি হলেন মহামুনি বাল্মীকি। তখন তিনি দস্যু রত্নাকর আর নন, তিনি একজন তপস্বী ঋষি।
ব্যথিত বাল্মীকি তার কবি প্রতিভায় প্রথম শোকাহত যে কবিতা লেখেন, তার মর্মার্থ এইরকমঃ -
    " মাটিতে ভূপাতিত
      শরাহত ক্রোঞ্চমিথুনকে
      দেখে ব্যথিত বাল্মীকি…… "

ক্রমশঃ প্রকাশিত হয় তার লেখাই প্রথম মহাকাব্য -- রামায়ণ --- সেই সত্যযুগে।
এরপর ত্রেতাযুগে শুরু হয়ে মহাভারত শেষ হয় দ্বাপরে।
ভারতবর্ষে এই কবিতা থেকে শুরু হয় পথচলা। মহাকবি মধুসূদন, প্যারীচাঁদ মিত্র ওরফে টেঁকচাঁদ ঠাকুর, বঙ্কিমচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ , শরৎচন্দ্র  মারফত পাই কবিতা, উপন্যাস, গল্প আর ছোটগল্প। ভারতবর্ষে, কবিগুরুর হাত ধরে,বিদেশ ঘুরে আসে এই ছোট গল্প, 'কঙ্কাল' নামক গল্পের মাধমে।
কলিযুগে যা ক্রমশ ভেঙে ভেঙে অণুগল্পের রূপ নেয় বর্তমান এই অধ্যায়।

কবি মলয় দাশগুপ্ত হাসছে,  মানে কবিতা আদি প্রমাণিত।  বললো -- আমার লেখা একটা কবিতা আছে, পূর্বেই যা পত্রিকায় প্রকাশিত। শুনবেন?

আমি ঘাড় নাড়লাম। উনি শোনালেনঃ

বাল্মীকি :
আজ এক‌টি মানু‌ষের জন্ম হল
আমরা দেবীকে নিয়ে এলাম মন্ডপে

এক‌টি মানুষের মৃত্যু হল আজ
আমরা দেবীকে নিয়ে এলাম
অস্তরাগ স্রোতের নিকটে

জন্মমৃত্যু ও ভাসানোর ভিতর দিয়ে
যেতে যেতে দস্যু রত্নাকর,
আজ বাল্মীকি।

--  বাঃ বাঃ সুন্দর! খুব ভাল হয়েছে। তবে এবার আমারটাও শুনুন :

লুঠতরাজ দস্যু রত্নাকর
অভাব যার দিত তাগিদ
সংসার যার সঙ্গসাথী
ভয় তাকে দেখায়, কে আর?

সরস্বতী যার ব্রহ্মজঠোরে
পাপের ভাগের বাছবিচারে
ছাড়লো তারে দস্যু রত্নাকরে
উইডিপির সেই বাল্মীকিরে।

কবির মনের কল্পনাতে
রামায়ণ কাব্য আসে আগে
রাম লক্ষণ চরিত্রের সমন্বতে
যেন মানসচরিত সত্যি লাগে।

মলয় দাশগুপ্ত হাসছে। হয়তো ভয়ে, তাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার। এটাই হয়। জীবন বয়ে চলে তার আপন স্রোতে, কারুর অপেক্ষায় সে থাকে না, সেখানে তুমি আমি কোন ছাড়! 

•••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••
 

 
PRADIP KUMAR DEY
Birati Housing Estate
LIG - 9
M.B.ROAD.
NIMTA
KOLKATA - 700 049

৩টি মন্তব্য: