google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re গল্প ।। স্বরূপা রায় - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

শুক্রবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০

গল্প ।। স্বরূপা রায়



বরাত

"এরকম করবেন না দয়া করে। আমার মেয়েটা..."
"ওসব আমি কিছু জানি না। আপনাকে বলেছিলাম আগেই যে, পাঁচ লাখ আমি হাতে পাব, তারপরেই আমার ছেলে বিয়ের পিঁড়িতে বসবে।"
"আমি তো বলছি না যে, আমি দেব না। আমি সবটা জোগাড় করে উঠতে পারিনি। আমাকে একটু কয়েকটা দিন সময় দিন। আমি পুরো টাকাটাই আপনার হাতে তুলে দেব। দয়া করে বিয়েটা বন্ধ করবেন না।"
"এই বিয়ে হবে না, পাঁচ লাখ না পেলে। বরযাত্রী নিয়ে আমরা এখুনি ফেরৎ যাব।"
"এরকম করবেন না।"
"এই সবাই ফেরৎ চলো।"
হঠাৎ ঘাড়ে একটা হাতের স্পর্শে সম্বিৎ ফিরল সঞ্জীবের। ঝাপসা হয়ে আসা চোখের জল মুছে পেছন ফিরে তাকালেন।
"হয়ে গেছে দাদা। বাকিটা মিটিয়ে নে।"
সঞ্জীব সামনের মন্দিরের মা কালীর দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলল, "খুব কঠিন শাস্তি দিলে মা আমাকে।"

ছাব্বিশ বছর আগে, সঞ্জীবের বিয়ে ঠিক হয়েছিল এক গরীব ঘরের মেয়ের সাথে। সে যৌতুকে মেয়ের সোনাগয়না, আসবাবপত্র ছাড়াও চেয়েছিল টাকা, সাইকেল আর টেলিভিশন। সবকিছু সময়মতো দিতে পারলেও টাকাটা জোগাড় করতে পারেননি মেয়ের বাবা।
"বাবা, বিয়ের পিঁড়ি থেকে তুমি উঠে যেও না। আমার মেয়েটা লগ্নভ্রষ্টা হলে ওর জীবনটা নষ্ট হয়ে যাবে।" মেয়ের বাবা সঞ্জীবের পা ধরে অনেক কাকুতিমিনতি করেছিলেন।
কিন্তু সঞ্জীব ও তার বাড়ির লোক কোনো কথাই শোনেনি। এক ঝটকায় মেয়ের বাবাকে পায়ের থেকে সরিয়ে সঞ্জীব বিয়ের পিঁড়ি ছেড়ে বরযাত্রী নিয়ে ফেরৎ চলে এসেছিল।
পরে সঞ্জীব জানতে পেরেছিল যে, ওই মেয়েটা লগ্নভ্রষ্টা হওয়ায় গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছিল। এটা শুনে সঞ্জীব ও তার বাড়ির লোকজন ভয় পেয়েছিল যে, মেয়ের বাড়ির লোক পুলিশে গেলে তারা ফেঁসে যাবে। কিন্তু না, কোনো মামলাই করেনি তারা। গরীব মানুষের কী আর আইনি লড়াইয়ের ক্ষমতা থাকে!
পুড়িয়ে ফেলা দেহের ছাইয়ের মধ্যে থেকে অস্থিটা বের করে দিয়ে ডোম সঞ্জীবকে বললেন, "পেছন ফিরে জলে ফেলে দিন।"
সঞ্জীব একমাত্র মেয়ের অস্থি বিসর্জন দিয়ে এগিয়ে চলল সামনের দিকে। পেছনে ফেরা নিষেধ। মনে মনে ও প্রতীজ্ঞা করল যে, "তোর আত্মহত্যার জন্য দায়ী কাউকে আমি ছেড়ে দেব না। নিজের প্রাণ দিয়ে লড়াই করব।"

===========================


স্বরূপা রায়

উত্তর ভারতনগর, শিলিগুড়ি


সহযোগিতা কাম্য

এই সংখ্যার সমস্ত লেখা একত্রিত করে একটি সুসজ্জিত ইবুক তৈরি করা হয়েছে। আপনি যদি সংগ্রহ করতে আগ্রহী হন তাহলে ৯৪৩৩৩৯৩৫৫৬ নম্বরে ন্যুনতম ১০ টাকা google pay, phonepe, paytm, freecharge বা amazon pay করতে পারেন। প্রদানের স্ক্রীনশট ওই নম্বরে whatsapp করলেই ইবুকটি পেয়ে যাবেন। সহযোগিতা কাম্য।

 



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন