(০১)
চাঁদপরী ও মেঘ কুমার
যখন আকাশের বুকে চাঁদপরীরা যায় ভেসেভেসে
স্বপ্ন ডানায় চড়ে হারায় মেঘের দেশে,
তখন মেঘ কুমারেরা স্বপ্ন দেখে ছবি আঁকে বুকে
ছুটে যায় চাঁদপরীদের পিছু পিছু মেঘের বেশে।
তখন আধো-আলো খেলা করে প্রকৃতির বুকে
মেঘ ডাকে বিজুলি চমকায় দিকেদিকে।
কখনো কখনো চাঁদের আলোয় ঝলমল করে
চাঁদপরীরা দিক দিগন্তে,
মাঝেমাঝে প্রেম বিনিময় হয় মেঘ কুমারদের সাথে
হঠাৎ বৃষ্টি এলে চোখের কোণে মনের অজান্তে।
তখন দুজন হারিয়ে যায় দুজনার মধ্যে
হাতে রেখে হাত কথা হয় অনেক পদ্য আর গদ্যে।
মেঘের পালকে চড়ে মেঘ কুমার মেঘের রাজ্যে
তাকে নিয়ে যেতে চায় মেঘপুরী,
সেখানে জোনাকিরা গল্পকরে মিটমিট জ্বলে
তারারা ঝলমল করে হারায় আবার খেলে লুকোচুরি।
আকাশের কালো মেঘ সরে যায় দূরে
রংধনুর সাত রঙ রাঙায় আকাশ সুদূরে
(০২)
ভালোবাসার অধ্যয়ন
বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের বিশ্লেষণ তোমার মতো করতে পারিনি
প্রজাপতির মতো পাখনা মেলে হাওয়ায় আমি উড়তে পারিনি,
কচি ডানায় হেলান দিয়ে তোমার মতো রঙধনুর রঙ গায়ে মাখিনি
নীল সাগরে সবার মতো আমি পুষ্পস্নান করতে পারিনি।
সাত সমুদ্র পারি দিয়ে তোমার সাথে নিঝুম দ্বীপে যাইনি
কোকিলের মতো প্রেমের গান আমি বসন্তে গাইনি,
হাজার কথার মুক্ত ছন্দে তোমার কাব্য কখনো লেখিনি
তোমার ছবি হৃদয় মাঝে খোদাই করে আঁকিনি।
নীল আকাশের বুকের মাঝে চাঁদনী তোমায় রাখিনি
ভ্রমরের মতো গুনগুনিয়ে গান গেয়ে তোমায় কাছে ডাকিনি,
আমি অনেক কিছুই চেয়েছিলাম কিছুই আমি পাইনি
হাজার সুখের স্বপ্নের মাঝেও তোমায় আমি ভুলতে পারিনি।
হয়তো ভালোবাসার অধ্যয়ন গুলো সঠিক সময় সঠিক ভাবে
করতে আমি পারিনি,
তাই তো আমি তোমার ভালোবাসা এই জীবনে পাইনি।
(০৩)
নীল সাগরে হাবুডুবু
আকাশের নীল রঙ কখনো কখনো রঙিন হয় রংধনুর রঙে
যখন বৃষ্টির ফোঁটায় ফোঁটায় দেখা যায় তোমার মুখশ্রীর ছবি
সুদূরে বৃষ্টির জলে কোন এক কুমারী মেয়ে হেসে কুটিকুটি
বন আর উপবনে ফুলে ফুলে ফুটন্ত কলি ও জানো এক পল্লবী।
বৃষ্টি ভিজা এমন এক উতলা দিনে উতলা মুহূর্তে
একঝাক প্রজাপতি ডানা মেলে অবিকল তোমার মতো,
ফুলে ফুলে মৌমাছিরা বসে আনন্দে মেতে মেঘের মতো
বন আর উপবনে কিম্বা মেঘের দেশে কতো।
তুমি বৃষ্টি হয়ে অঝরে ঝরো আকাশের সমস্ত শরীরে
সবুজ পাতার ফাঁকে হিজল বন তাকিয়ে তাকিয়ে দেখে,
নীল সাগরে হাবুডুবু খায় বৃষ্টি আর আকাশ চুপিচুপি
বিজুলি চমকায় আকাশের বুকে মেঘের ভিতর দিকেদিকে।
তোমার টানাটানা দুটি চোখ,কপালে নীল টিপ,নীল শাড়ীতে
সেই রোমান্টিক কবিতাটাই বলছে মেঘের গর্জনে মেঘলা দুপুর,
তোমার দীর্ঘলকালো চুলগুলো উড়ে উড়ে পড়চ্ছিলো
চেয়ে চেয়ে আকাশের চোখে মুখে পর।
(০৪)
নীলাঞ্জনা
শতকোটি বছর আগে তোমার সাথে দেখা হয়েছিলো
এই রঙিন পৃথিবীর নকশীকাঁথার মাঠে কোন এক প্রান্তে,
সেখানে তুমি প্রতীক্ষার প্রহর গুনছিলে কোন এক প্রেমিকের
এলোমেলো স্বপ্নএেঁকে মনের অজন্তে।
এদিকে তোমাকে পাবার জন্য পাগল সমস্ত পৃথিবী
কেউবা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধর ঘোষণা দিয়েছে জগতে,
কেউবা তোমার ছবি খোঁদায় করে এেঁকেছে হৃতপিণ্ডে
কেউবা দাঁড়িয়ে রয়েছে ফুল হাতে তোমার যাবার পথে।
নীলাঞ্জনা তোমার কোন তুলনা হয়না তুমিতো অবিনাশী কবিতা
যার প্রেমের প্রগাঢ়তা খুঁজে দেখে কবি প্রেমিক সেজেছে,
বিশ্ব সংসার তন্নতন্ন করে খুঁজে এনে ১০৮টি লাল গোলাপ
তোমাকে পাবার জন্যে শুধু তোমার হাতে তুলে দিয়েছে।
তুমিই তো স্বপ্ন দেখিয়েছিলে জীবনকে উপভোগে জন্যে
প্রেমের শ্রেষ্ঠ রোমান্টিক কবিতায়,
তবুও শেষ নেই খুঁজে দেখা তোমার লাবণ্য রূপ
তোমার মুখশ্রীর একঝলক মিষ্টি হাসিয়।
(০৫)
আমি প্রেমিক হতে পারিনি
কোন এক নাটকীয় দৃশ্যের ভিতরে
তোমার ঠোঁটে ঠোঁট রাখিনি,
এযুগের নায়ক নায়িকার মতো
তোমার বুকের বোতাম ছিড়িনি।
এজন্যে হয়তো তোমার কাছে
আমি প্রেমিক হতে পারিনি,
সুদর্শন পরুষ হতে পারিনি
কিম্বা রোমান্টিক হতে পারিনি।
তুমি যদি আমাকে কাছে টেনে নিতে
তাহলে আমিও প্রেমিক হতাম,
তুমি যদি বাঘিনী হতে
তাহলে আমিও পাগলা ঘোড়া হতাম।
কিন্তু তুমি আমাকে প্রেমিক হতে দিলে না
তুমি আমাকে প্রেম শেখালে না,
কারণ আমি শারুফখান কিম্বা কালাচাঁদ ছিলাম না
তাই তো তুমি প্রেম দিলে না।
আমি প্রেমিক হতে পারিনি
সারাটা জীবন তোমার আসামিই হয়ে রয়ে গেলাম,
আমি মিছেমিছি কাঁদতে পারিনি
তাই তোমার কাছে অপরাধীই রয়ে গেলাম।
(০৬)
ভালোবাসা কী?
হৃদয়ের ক্যানভাসে একটা রঙিন স্বপ্ন এঁকে
জোছনা রাতে রূপসী এক চাঁদনীকে প্রশ্ন করেছিলাম,
ভালোবাসা কী?
সে বলেছিলো ভালোবাসা শুধু একটা ফিলিন্স।
ফুটন্ত এক লালটুকটুকে গোলাপকে প্রশ্ন করেছিলাম,
ভালোবাসা কী?
সে বলেছিলো ভালোবাসা কারু প্রিয় নাম।
মেঘলা আকাশে বৃষ্টিকে প্রশ্ন করেছিলাম,ভালোবাসা কী?
সে বলেছিলো মাঝে মাঝে আমার দুচোখের অশ্রু হচ্ছে
ভালোবাসা।
উতলা এক নদীকে প্রশ্ন করেছিলাম,ভালোবাসা কী?
সে বলেছিলো সমস্ত বাধা অতিক্রম করে সাগরের বুকে
ছুটে যাওয়ায় তার কাছে ভালোবাসা।
(০৭)
চোখের ভাষা
চোখের ভাষার কোন দাড়ি কমা থাকে না বুঝেছি
যখন তুমি আমার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকাও,
গোপনে একা একা ইচ্ছে নদীতে যাও
স্বপ্নগুলো মনের মধ্যে পুষে রেখে বারবার হারাও।
যেমন করে জোছনা আকাশের মাঝে হারায়
চোখের অশ্রু যেমন করে গোপনে শুকিয়ে যায়,
ফুল যেমন করে পাপড়ির সুবাস ছড়িয়ে ঝরে যায়
ঠিক তোমার মতো বারবার চোখ ফিরায়।
তোমার চোখের দৃষ্টিতে একটা জাদু রয়েছে
তোমার হাসিতে যেন স্বর্গসুখ,
তাছাড়া কেন আমি বারবার হারিয়ে ফেলি পথ
নিত্যদিন স্বপ্নেও দেখি বারবার তোমার মায়াবী মুখ।
আমি তো কবি চঞ্চল আমার মন সরল সাদা
আমার চোখের ভাষা থাকতে চাই না বাঁধা,
সুনন্দ কে তো আর অসুন্দর বলতে পারি না
ইচ্ছে করলে তুমিই হতে পার আমার স্বপ্নের রাধা।
----------------------------
দুপচাঁচিয়া,বগুড়া,বাংলাদেশ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন