শ্রেয়া তার ছোটোবেলার বন্ধু রাহুলকে খুব ভালোবাসে। শ্রেয়া কলেজ স্টুডেন্ট। ফাইনাল ইয়ার। রাহুল ও শ্রেয়া একই ব্যাচে ও একই কলেজে পড়াশোনা করে। রাহুল, শ্রেয়াকে তার বেস্ট ফ্রেন্ড মনে করে। কিন্তু রাহুল ভালোবাসে অন্যজনকে। যার নাম দেবিকা। দেবিকা রাহুলের থেকে জুনিয়র। শ্রেয়া জানে যে রাহুল দেবিকাকে ভালোবাসে তাই রাহুলকে আজও নিজের মনের কথা বলতে পারেনি। অপরদিকে রাহুল জানেওনা যে শ্রেয়া তাকে বন্ধুর থেকেও বেশি ভালোবাসে। যাইহোক কলেজ শেষ হয়ে যাওয়ার পর রাহুল ও শ্রেয়া একই ইউনিভার্সিটিতেও ভর্তি হয়। কিন্তু ধীরে ধীরে দেবিকার মনে সন্দেহ হতে থাকে যে শ্রেয়া মনে হয় রাহুলকে অন্য চোখে ভালোবাসে এবং তাকে কেড়ে নিতে চায়। ধীরে ধীরে তার সন্দেহ আরও বাড়তে থাকে। রাহুল ও শ্রেয়ার বন্ধুত্ব ভেঙ্গে ফেলার অনেক চেষ্টা করে দেবিকা। কিন্তু রাহুল তার প্রিয় বান্ধবী শ্রেয়ার ওপর কোনোদিন সন্দেহ আনেনা বরং সত্যিগুলো ধীরে ধীরে ধরে ফেলতে থাকে রাহুল। শ্রেয়াও বুঝে যায় দেবিকার ষড়যন্ত্র গুলো। রাহুল ও দেবিকার মধ্যে এই নিয়ে অনেক ভুলবোঝাবুঝি হতে থাকে। শেষে দেবিকা প্রচন্ড রেগে গিয়ে ভাবে যে এর জন্য শ্রেয়াই দায়ী। সে তখন শ্রেয়ার ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করে। শ্রেয়াকে একদিন লক্ষ করে সে গাড়ি দিয়ে ধাক্কা দেয় শ্রেয়াকে এবং ভাবে যে শ্রেয়া চলে গেলে তার আর রাহুলের সম্পর্ক আবার ঠিক হয়ে যাবে। খুব গুরুতর ভাবে আহত হয় শ্রেয়া। রাহুলের কাছে খবর যায়। পুলিশ সূত্রে দেবিকার এই ষড়যন্ত্রটাও অবশেষে সবার সামনে ধরা পড়ে যায়। রাহুল অবাক হয়ে যায়। সত্যিটা জেনে দেবিকাকে গালে এক থাপ্পড় দিয়ে পুলিশকে বলে দেবিকাকে যেন উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হয়। অপর দিকে ডাক্তার জানায় যে শ্রেয়ার প্রাণ বেঁচে গেলেও সে আর কোনোদিন চলাফেরা করতে পারবেনা। শ্রেয়া খুব কাঁদতে থাকে। শ্রেয়ার পরিবারের লোকজনও খুব কাঁদতে থাকে। রাহুল শ্রেয়ার সামনে গিয়ে বলে যে আজ থেকে শ্রেয়ার সব দায়িত্ব রাহুল নেবে। কারণ শ্রেয়ার সাথে যা হয়েছে তা রাহুলকে কেন্দ্র করে দেবিকা করেছে। রাহুল খুব কষ্টের সাথে কথাগুলো বললো। শ্রেয়া বললো, 'রাহুল এতে তোমার দোষ কোথায়! তুমি নিজেকে দোষ দিচ্ছ কেনো!" রাহুল বললো, দেবিকাকে ভালোবাসাই আমার দোষ ছিলো। কিছুদিন পর রাহুল নিয়ে গেলো শ্রেয়াকে হাসপাতাল থেকে। তারপর বিয়ে করলো শ্রেয়াকে। রাহুল একটা ফার্মে চাকরি পেলো। শ্রেয়ার খুব খেয়াল রাখে রাহুল। কিন্তু শ্রেয়ার নিজেকে যেনো বোঝা মনে হতে লাগলো। সে একদিন রাহুলকে বললো, তুমি কেনো আমার জন্য তোমার সব ইচ্ছেকে বিসর্জন দিয়ে আমার পাশে থাকলে? আমি কে তোমার? " উত্তরে রাহুল বললো, "তুমি আমার সেই বন্ধু যার ঠিকানা আমার পুরো হৃদয় জুড়ে। তুমি আমার সবকিছু, তুমি আমার জীবনসঙ্গী। " এই বলে রাহুল শ্রেয়াকে জড়িয়ে ধরলো।
(বিশেষ দ্রষ্টব্য ঃ প্রকৃত বন্ধু কোনোদিন ছেড়ে যায় না, তাইতো বন্ধুত্বের ঠিকানা মনের অন্তরে)।।
-------------------------------------
নামঃ তনুশ্রী গুহ
ঠিকানা ঃ ৯১/৪, ডঃ জি.এস.বোস.রোড, কলকাতা, পিকনিক গার্ডেন, ৭০০০৩৯
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন