Featured Post
গদ্য ।। রবীন্দ্র জয়ন্তী উদযাপন ।। অঙ্কিতা পাল
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
রবীন্দ্র জয়ন্তী উদযাপন
অঙ্কিতা পাল
পলাশ পুর গ্রামের ছোট্ট মেয়ে নন্দিতা, একদিন তার বাবাকে বললো - বাবা এবার আমরা রবি ঠাকুরের জন্মদিন পালন করবো। তার বাবা অজিতবাবু একজন স্কুল শিক্ষক, তিনি এত মেয়ের এই অনুরোধে সম্মতি দিলেন। এরপর কিছু মাস কেটে যায়, নতুন বছর আসে। অজিত বাবু একদিন তার পাড়ার স্থানীয় ক্লাবে যান, সেখানে ক্লাবের সভাপতি রানা ঘোষ এর সাথে দেখা করেন এবং তাকে প্রস্তাব দেয় যে - এ বছর আমরা ধুমধাম করে রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন করবো। রানা অজিতবাবুর প্রস্তাবে রাজি হয়ে বলে - এটা খুব ভালো প্রস্তাব মাস্টারমশাই, কিন্তু আমি কথা দিতে পারছি না অবশ্যই চেষ্টা করবো। এ দু চার দিন পর, রানা ও অন্যান্য সদস্যরা অজিতবাবুর বাড়িতে এসে রবীন্দ্রজয়ন্তী অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে বলে। অজিত বাবু ও ক্লাবের অন্যান্য সদস্যরা মিলে রবীন্দ্রজয়ন্তীর আয়োজন করে। তারা আয়জনের কোন ত্রুটি রাখেনি, তৈরি হল বিরাট মঞ্চ তাকে ফুল দিয়ে সাজানো হলো। নিমন্ত্রিত রা হলেন - মাননীয় বিডিও সাহেব, থানার বড়বাবু, বিভিন্ন কলাকুশলী, স্থানীয় ও আশেপাশের গ্রামের লোকজনদের।
অবশেষে সেই দিনটা এসে উপস্থিত হলো আমাদের দ্বারে, এই দিন আমাদের প্রত্যেক বাঙালির কাছে একটা সুন্দর মুহূর্ত।
এই বিশেষ দিনে সকালে রবীন্দ্রনাথের ছবি কে সুন্দর করে সাজিয়ে মালা পরিয়ে মঞ্চে একটা টেবিলের ওপর বসানো হলো, সামনে রাখা হলো কিছু ঝুড়ো ফুল ধূপকাঠি ও প্রদীপ। এভাবেই সময় গড়াতে থাকে নিমন্ত্রিত রা সকলে ক্লাব প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন। মাননীয় বিডিও সাহেব প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন। তারপর রবি ঠাকুরের সম্পর্কে কিছু বক্তৃতা দেন। গ্রামের ছোট ছোট মেয়েরা সাদা জামা পড়ে - " ফুলে ফুলে, ঢলে ঢলে " একটি মিষ্টি নৃত্য অনুষ্ঠান উপহার দেয়। তারপর বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পীরা কিছু সুন্দর সুন্দর রবীন্দ্র সংগীত উপহার দেন। গ্রামের ছোট্ট একটি ছেলে রোহন একটি মিষ্টি কবিতা আবৃতি করে সকলকের মন জয় করে নেয়। এছাড়াও বিভিন্ন নৃত্য অনুষ্ঠান যেমন - " এসো হে বৈশাখ, আমারো পরানো যাহা চায়, আমরা সবাই রাজা, মোর বীণা ওঠে, খরবায়ু বয় বেগে, জাগরণে যায় বিভাবরী, হে নতুন দেখা দিক আর বার, ভালোবাসি ভালোবাসি, আকাশ ভরা সূর্য তারা এইসব রবীন্দ্র সংগীত ও নৃত্যে উপহার দেয় গ্রামের ছোট ছোট কচিকাঁচারা। অনুষ্ঠানের অন্তিম লগ্নে, নন্দিতার অসাধারণ নৃত্য - " গ্রাম ছাড়া ঐ রাঙ্গামাটির পথ " মুগ্ধ করলো সকলকে। নন্দিতার অসাধারণ নৃত্যের চমকে খুশি হয়ে বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী একটি নটরাজের মূর্তি, তার হাতে তুলে দেন এবং বলেন - এমন অসাধারণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পেরে তিনি ধন্য।
অনুষ্ঠানের শেষে, সবাই মিলে একসাথে মজা করে খাওয়া দাওয়ার পর্ব চলে। অনুষ্ঠান চলতে চলতে কখন যে সকাল গড়িয়ে রাত হয়ে গেল কেউ বুঝতেই পারল না।
এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করবার জন্য ক্লাবের তরফ থেকে অজিত বাবু কে উপহার দেওয়া হলো এবং সভাপতি রানা ঘোষ বললেন - এই অনুষ্ঠানে করতে পেরে আজ আমরা গর্বিত এবং প্রতি বছর ই যেন এই ধরনের অনুষ্ঠান আমরা এত জাঁকজমক করে করতে পারি, প্রত্যেকে এই আশীর্বাদ করুন।
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন