আমার রবি ঠাকুর ----২৫ শে বৈশাখ
অঞ্জনা গোড়িয়া
ঘুম ভাঙা চোখে আধো আধো বুলিতে ছোট্ট খোকাটি টলতে টলতে বলছে" "আতা গাছে তোতা পাখি। ডালিম গাছে মৌ।হীরে দাদার মড়মড়ে থান ঠাকুর দাদার বউ।"
মুখ টিপে ফিক করে হেসে দাদু গাল টা টিপে ধরে বলে, আমি কে বলতো? তোর ঠাকুর দাদা । তোরা তো আর এই নামে ডাকিস না। বাবার বাবাকে ঠাকুরদাদা বলে।
শব্দ গুলো হারিয়ে যাচ্ছে। তবু হারিয়ে যায় না রবিঠাকুরের ছড়া।গান কবিতা।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে পথ চলতে প্রতিটি মুহুর্তে রবিঠাকুরের কবিতা গান ভীষণ ভাবে অনুপ্রাণিত করে। প্রথম শ্রেণির সহজপাঠ বইটা মনে হয় সবার মনে আছে।
ছোটো ছোটো ছড়ার মধ্য দিয়ে শিশুকে ছড়া শিখিয়েছে।
জায়গা করে নিয়েছে আমার মনে।সেই ছোট থেকেই। কেউ কি ভুলতে পারে সেই ছড়া টি ---
ছোট খোকা বলে অ আ
শিখেনি সে কথা কওয়া "
"কিংবা বনে থাকে বাঘ
গাছে থাকে পাখি"
রবীন্দ্রনাথের সহজ পাঠ আমরা সবাই পড়েছি।
সকাল থেকে রাত, রাত থেকে সকাল কোন না কোন ভাবে রবি ঠাকুর জড়িয়ে আছে আমাদের জীবনের সাথে।
রবীন্দ্র সংগীত না শুনে ঘুম আসে না অনেকের। আমার ঘুম ভাঙে রবিঠাকুরের সেই গান টা দিয়ে।
"আলো আমার আলো ওগো"
দুঃখে কখনো গেহে উঠি, আমার পরান যাহা চায়"
আনন্দে বিরহে সব ক্ষেত্রে রবি ঠাকুর বিরাজমান। রবিঠাকুর মনে করিয়ে দেয় আমার শৈশব আমার কৈশোর আমার যৌবন। এখন আমি মধ্যগগনে। তবু রবি ঠাকুর আমার অন্তরের অন্তস্তল থেকে কখনো মনে করিয়ে দেয়, আমার অতীত আমার কর্ম আমার ভালোবাসা।
সেই সবার প্রিয় রবিঠাকুরের প্রতি আমার চিরন্তন শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
গল্পে, উপন্যাসে, গদ্যে,পদ্যে ছন্দে নাটকে,অভিনয়ে, গানে কোথায় না অবদান রেখে গেছেন রবিঠাকুর।
রবীন্দ্রনাথের জীবন নিয়ে আলোচনা বা বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা আমার নেই। উনি সবার কাছে সবার মতো। সবাই নিজের মতো করে রবীন্দ্রনাথকে আপন বন্ধু করে নিয়েছে।
এটুকু জানি রবীন্দ্রনাথ ছাড়া একপা ও চলতে পারব না।
সেই ছোট থেকে স্কুলের প্রার্থনায় "জনগনমন অধি নায়ক জয় হে" এখনো সমান ভাবে জনপ্রিয় ভারতের জাতীয় সংগীত।
গীতাঞ্জলি লিখে নোবেল পুরস্কার পাওয়া যেমন বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিয়েছে ভারতের নাম। তেমন ই "নাইট" উপাধি ত্যাগ করে বুঝিয়ে দিয়েছেন, কত খানি দেশপ্রেমিক তিনি।
কিন্তু তিনি সত্যিই খুব দুখী। নিজের সন্তানদের মৃত্যুতে খুব কষ্ট পেয়েছিলেন।
বোলপুর শান্তিনিকেতনে নিজের মনের মত শিক্ষাব্যবস্থা চালুকরে ছিলেন। বর্তমানে শান্তিনিকেতন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় নামে বিশ্বের দরবারে সাড়া ফেলে দিয়েছেন।
২৫ সে বৈশাখ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের জন্মদিন।
এই শুভ দিন টা আমাদের সবার কাছে খুব আনন্দের।
প্রতিবছর বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন করা হয়ে থাকে। পরপর দুবছর করোনার আতঙ্ক রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন ঠিক মতো হয় নি।
তবু এই বিশেষ দিন আমরা কেউ ভুলব না। ঘরের ভেতর থেকে একান্ত আপন মনে রবি ঠাকুরকে জানাই আমার শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। তুমি এমনি করেই সবার মনে চিরকাল উজ্জ্বল হয়ে থেকো।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কে প্রণাম ও শ্রদ্ধা জানিয়ে এই দিন টাকে চির স্মরণীয় করে রাখলাম।
------------------------------------
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন