google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re সুনন্দ মন্ডলের নিবন্ধ - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

মঙ্গলবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

সুনন্দ মন্ডলের নিবন্ধ

@শিক্ষক ও শিক্ষক দিবস@



"শিক্ষক হলেন শিক্ষাগুরু
‎ শিক্ষা হলো জাতির মেরুদন্ড।
‎শিক্ষক জ্বালান জ্ঞানের আলো
‎ শিক্ষা ছাড়া সব চেতনা পন্ড।"

একথা ঠিক যে, শিক্ষা আনে চেতনা, জাতির জীবনে আনে সর্বাঙ্গীন উন্নতি।
সেই শিক্ষার একমাত্র ভার শিক্ষকদের উপর ন্যস্ত। কারন শিক্ষককুলই মানুষ গড়ার
কারিগর। তারাই সকল ছাত্রদের নিজস্ব ছাঁচে ফেলে রূপদান করেন। তাই সমগ্র শিক্ষক
জাতিকে বিশেষ সম্মাননা জ্ঞাপন করতে বেছে নেওয়া হয় এই ৫ই সেপ্টেম্বর দিনটিকে।
আমাদের জাতীয় জীবনে কতকগুলি তাৎপর্যপূর্ণ দিন আছে, যা আমাদের অনুপ্রাণীত করে,
সাহসী করে। সেরকমই এই দিনটিও বেশ শ্রদ্ধাবোধ জাগায়।
‎৫ই সেপ্টেম্বর শুধুমাত্র নির্দিষ্ট দিনই নয়! এইদিন জন্মগ্রহণ করেন
অনন্য প্রতিভার অধিকারী জ্ঞানতাপস ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণান। তিনি ১৮৮৮
খ্রিস্টাব্দে তামিলনাড়ুর তিরুত্তানিতে হিন্দু ব্রাহ্মণ পরিবারে বেড়ে ওঠেন।
পেশায় ছিলেন শিক্ষক। কর্মজীবনে বহু সম্মান,পুরস্কার, বিদেশযাত্রার মতো সুযোগ
পেয়েছেন। তিনিই ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি হন। ১৯৬২ সালে এই সর্বজনমান্য
ব্যক্তি ভারতের রাষ্ট্রপতি হন। তিনি 'ভারতরত্ন' উপাধিতেও ভূষিত হন। 'দ্য
ফিলোজফি অফ রবীন্দ্রনাথ টেগোর'(১৯১৮ খ্রী:), 'দ্য রেন অফ রিলিজিয়ান ইন
কনটেম্পোরারী ফিলোজফি'(১৯২০ খ্রী:) ছাড়াও বহু মূল্যবান গ্রন্থের প্রণেতা হলেও
শুধুমাত্র তিনি একজন আদর্শ শিক্ষক। তাঁর জন্মদিন পালনের উদ্যোগ নিলে, তিনিই
জানান এদিন দেশের সকল শিক্ষকদের বিশেষ সম্মাননার দিন হোক। সেদিন থেকেই ৫ই
সেপ্টেম্বর দিনটি 'শিক্ষক দিবস' হিসেবে স্মরণীয়।
‎শিক্ষকরাই অজ্ঞানতার অন্ধকার দূর করে জ্ঞানের আলো জ্বালান। শুধু
পুঁথিগত বিদ্যা নয়, সকল নীতিবোধ, মার্জিত রুচি, মননশীলতা, দৈহিক ও মানসিক
বিকাশে শিক্ষকই একজন আদর্শ ব্যক্তি। ছাত্রদের কাছে তিনিই দেশনায়ক। সমাজ গঠনের
চাবিও। সমাজ সংসারে তাই তাঁদের গুরুত্ব দেওয়া উচিত। তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা
নিবেদন ও মান্যতা প্রদান করা উচিত।
‎নব প্রজন্ম দেশের সম্পদ। তারাই জাতির উন্নতি ঘটাতে সক্ষম। তাদের
উপযুক্ত করে গড়ে তোলার গুরুদায়িত্ব একমাত্র শিক্ষকদের উপরেই বর্তায়। শিক্ষকতা
শুধু জীবিকা নয়, তা প্রধান ও মহান ব্রত। উদারচিত্তে সেই দায়িত্ব ও ব্রত পালন
করতে হবে শিক্ষকদের। তাঁরা নানাভাবে অবহেলিত, সমালোচিত হলেও এই বিশেষ দিনে
তাঁদের কৃতিত্বকে অবশ্যই কুর্নিশ জানাতে ছাত্র সমাজ বদ্ধপরিকর।
‎দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিটি শিক্ষাকেন্দ্রে ৫ই সেপ্টেম্বর দিনটি
অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে পালিত হয়। শিক্ষাকেন্দ্রে যে সকল শিক্ষক বিশেষ কৃতিত্ব
রেখেছেন তাঁদের রাষ্ট্রীয় সম্মানে পুরস্কৃত করা হয়। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক
অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তাঁদের গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়। এইদিন ছাত্রদের মনেও
দায়িত্ব বোধ জাগ্রত হয়।
‎অতীতে এই ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক ছিল গভীর ও মধুর। পিতা-পুত্রের
সামাজিক সম্পর্কও ছিল। দায়িত্ব, কর্তব্য ও মননশীলতা ছিল। কিন্তু সময়ের
পরিবর্তনে বিশ্বসংসারেও পরিবর্তন ঘটেছে। সামাজিক, আর্থিক, পরিবেশে আমূল
পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। ছাত্রদের আচরণেও বহু পরিবর্তন। সমাজের প্রতি কর্তব্যে,
শিক্ষকদের সম্মান জানাতেও তারা ভুলে গেছে। হালকা হয়ে পড়েছে ছাত্র-শিক্ষক
সম্পর্ক। শুধু এর জন্য ছাত্ররাই দায়ী নয়, সে দায়িত্ব একাধারে সমাজ, পরিবেশ,
শিক্ষক ও পিতামাতার। সকলকেই সমান দায়িত্ব নিতে হবে। তাছাড়া দেশের সরকার যেন এ
বিষয়ে ভাবেন এবং শিক্ষার পরিকাঠামো সংস্কারে উদ্যোগী হন। তবেই ছাত্র-শিক্ষকের
সুমধুর সম্পর্কে দেশ ও জাতি সুন্দর ভাবে গড়ে উঠবে।
‎আলোচনার শেষে একথা বলা যায় যে, সাধারণ মানুষকেও শিক্ষার প্রতি
দায়িত্ববান হতে হবে। শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। শিক্ষক দিবসে এটাই
কাম্য। এটাও বলা যায় যে কোনো নির্দিষ্ট দিনই নয়, সব দিনই যেন শিক্ষক দিবসের
বার্তা দেয়। বিদ্যালয়, সমাজ, পরিবেশের যৌথ সৌন্দর্যে শিক্ষকদের স্পর্শে
শিক্ষার্থীদের পূর্ণ বিকাশ সম্ভব।

‎"কৈশোরের কিশলয় পর্ণে পরিণত হয়
‎ যৌবনের শ্যামল গৌরবে।"
‎ --------------------------------

কাঠিয়া, মুরারই, বীরভূম

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন