Featured Post

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

ছবি
  সূচিপত্র অন্নদাশঙ্কর রায়ের সাহিত্য: সমাজের আয়না ।। বিচিত্র কুমার প্রবন্ধ ।। বই হাতিয়ার ।। শ্যামল হুদাতী কবিতায় সংস্কৃতায়ন (দ্বিতীয় ভাগ ) ।। রণেশ রায় পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত কবিতা ।। লেগে থাকা রোদ্দুরের ঘ্রাণের মতো ।। জয়শ্রী ব্যানার্জি কবিতা ।। ভুল ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। উন্মেষ ।। বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত কবিতা ।। গার্হস্থ্য ।। বিবেকানন্দ নস্কর একগুচ্ছ বিজয়ের কবিতা ।। বিচিত্র কুমার গল্প ।। পোষ্য ভূত ।। সমীর কুমার দত্ত কবিতা ।। আশপাশ ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। মেঘ ।। তীর্থঙ্কর সুমিত অণুগল্প ।। বংশীবদনের সুখদুঃখ ।। দীনেশ সরকার কবিতা ।। গভীর রাত ।। সুনন্দ মন্ডল তিনটি কবিতা ।। সুশান্ত সেন ভালোবাসার বাসা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত অণুগল্প ।। শিক্ষকের সম্মান ।। মিঠুন মুখার্জী কবিতা।। প্রশ্ন ।। জীবন সরখেল কবিতা ।।ক্ষরিত সে পথ ।। রহিত ঘোষাল কবিতা ।। রক্ত দিয়ে কেনা ।। মুহাম্মদ মুকুল মিয়া কবিতা ।। কংক্রিট ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছড়া ।। শীত নেমেছে ।। রঞ্জন কুমার মণ্ডল কবিতা ।। কিছু শব্দ ।। সমীর কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় কবিতা ।। শীতের নগ্নতা ।। রানা জামান কবিতা ।। পথ চলা ।। পাভেল আমান বেদ পু...

সম্পা পালের প্রবন্ধ

প্রাচীন ভারতীয় শিক্ষা


পৃথিবীর যে কোনো দেশের শিক্ষাদর্শন গড়ে ওঠে সে দেশের জনগণের জীবনদর্শনের উপর
ভিত্তি করে । প্রাচীন ভারতীয় শিক্ষাদর্শনও গড়ে উঠেছিল সে যুগের ভারতবাসীর
জীবনদর্শনের উপর ভিত্তি করে । ঋষিকুলের জীবনদর্শনই ছিল এই শিক্ষাদর্শনের মূল
শেকড় । তপোবনকেন্দ্রিক এই শিক্ষা নিয়ে এলো ত‍্যাগের মধ্যে দিয়ে ভোগ ,
যোগসাধনার মধ্যে দিয়ে পরমাত্মার সঙ্গে জীবাত্মার মিলন , উদার মননশীলতা ।
এভাবেই একদিন এই আধ‍্যাত্মবাদ জন্ম দিল বিশ্বজনীনতার ।

গুরুকুলকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল এই শিক্ষা , যা ছিল অরন‍্য নিঃসৃত সভ‍্যতার
দ্বারা অভিষিক্ত । নিবিড় উন্মুক্ত প্রকৃতির কোলেই গড়ে উঠেছিল গুরু শিষ্যের সেই
চিরন্তন শিক্ষা । শিক্ষার্থীকে গু্রুগৃহে থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হতো ।
নির্দিষ্ট সময় শেষে তাকে গৃহে ফিরে যেতে হতো । শিক্ষার্থীর শিক্ষা শুরু হতো
উপনয়ন নামক অনুষ্টানের মধ্যে দিয়ে আর শেষ হতো সমাবর্তন নামক অনুষ্টানের মধ্যে
দিয়ে ।
গুরু বা শিক্ষক ছিলেন একনায়ক বা সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী । তবু গুরু শিষ্যের
সম্পর্ক ছিল মধুর ও অটুট । গুরুর প্রতি শিষ্যের ছিল অকৃত্রিম শ্রদ্ধাভক্তি ।
শিক্ষার্থীর জীবনে শিক্ষকের জায়গা সেদিন ছিল পিতার মতো এবং তাকে আধ‍্যাত্মিক
জীবনের জন্মদাতা হিসেবেই গন‍্য করা হতো । শিক্ষার্থীর ব‍্যক্তিসত্তার
সর্বাঙ্গীন ও সর্বোত্তম বিকাশই ছিল এর চরমতম লক্ষ্য । শিক্ষার্থীকে এখানে বেশ
কিছু দায়িত্ব , কর্তব্য পালনের মধ্যে দিয়ে শিক্ষা নিতে হতো যেমন ভিক্ষাবৃত্তি
, যাগযজ্ঞের আয়োজন , বন থেকে কাঠ , ঔষধি গাছ , ফলমূল সংগ্রহ ,
পশুচারণ ইত্যাদি ।শুধু গুরুর নয় গুরুপত্নীর নির্দেশও তাকে মানতে হতো । শিক্ষা
ছিল অবৈতনিক। সামাজিক কর্তব্য আর সামাজিক দায়বদ্ধতা হিসেবেই সেদিন এই পেশার
উদ্ধব হয়েছিল । রাষ্ট্র বা সমাজ এখানে হস্তক্ষেপ করতো না ।আর শিক্ষার মাধ্যম
ছিল সংস্কৃত।

মৌখিক পদ্ধতিতেই এ যুগের শিক্ষা চলতো । সে কারণে শ্রবণের উপর অধিক গুরুত্ব
আরোপ করা হতো । গুরুর উচ্চারিত বাণী গুরু শিষ্য পরম্পরায় শ্রুত হতো । গুরুর
বাণী শিষ্যরা সমস্বরে আবৃতির মতো করেও পাঠ করতো । শ্রবণের পর আসতো মনন ও
নিদিধ‍্যাস । মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ , গভীর চিন্তার মাধ্যমে মনন এবং একাগ্র চিত্তে
চিরন্তন সত্যের উপলব্ধির জন্য নিদিধ‍্যাস ......এই ছিল সেদিনের শিক্ষার মূল
বিষয় । বিচার বিশ্লেষণ এবং যুক্তি প্রতিষ্ঠার উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হতো ।

সেদিনের পাঠ‍্যক্রম আজকের মতো এতো বৈচিত্র্যময় ছিল না তবে জীবন উপযোগী সব
শিক্ষাই সেখানে দেওয়া হতো । সেখানে একদিকে যেমন নীতিশাস্ত্র, পুরাণ , ইতিহাস
,আয়ুর্বেদ শিক্ষা দেওয়া হতো তেমনি অপর দিকে শারীরবিদ‍্যা , কৃষিবিদ‍্যা ,
পশুবিজ্ঞান , বিভিন্ন পরিমাপের ওজন সম্পর্কেও শিক্ষা দেওয়া হতো ।

এভাবেই প্রাচীন ভারতীয় শিক্ষা এক সুগঠিত ও সুসংহত রুপ লাভ করেছিল । শুধু তাই
নয় নিজ সভ‍্যতা ও সংস্কৃতিকে স্বমহিমায় তুলে ধরেছিল বিশ্বের দরবারে । নিখাদ
সেই সভ‍্যতা , সংস্কৃতির জন্য আজও আমরা গর্বিত ।

যাইহোক প্রাচীন যুগকে অতিক্রম করে আজ আমরা আধুনিক হয়েছি । এই সময়ের ব‍্যবধানে
মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে বহু সময় ও যুগ । মাঝপথে একদিন মধ্যযুগ এলো আমাদের জীবনে
। তুর্কি আক্রমণে জীবন , সমাজ , রাষ্ট্র সবই বিপর্যস্ত হলো । কিছুটা সময়ের
জন‍্য শিক্ষা , সংস্কৃতি স্তব্ধ হয়ে গেল । এই সময়ে কোনো সৃষ্টি হয়নি তা নয় তবে
তা ছিল জীবনের আড়ালে । তবে সেই পর্বটাও জীবনে থেমে থাকেনি । দেখতে দেখতে
আমাদের জীবনে আধুনিক যুগ ও আধুনিক শিক্ষা এলো ।

আধুনিক আবহাওয়া আর আধুনিক মননশীলতায় শিক্ষার রুপ বদলে গেলো । সামাজিক
দায়বদ্ধতা আর সামাজিক কর্তব্যের সেই পেশা এখন বানিজ্যিক । শুধু তাই নয় সঙ্গে
বদলে গেলো শিক্ষক ছাত্রের সেই অটুট ও মধুর সম্পর্কও। শিক্ষায় শিক্ষকের
একনায়কত্বের দিনও অস্তাচলে , শিক্ষা এখন শিশুকেন্দ্রিক । শিশুর চাহিদা ,
আগ্রহের দিকে লক্ষ্য রেখেই বর্তমান শিক্ষা ব‍্যবস্থা এগিয়ে চলেছে ।

তবে প্রাচীন ভারতীয় শিক্ষার অমূল্য বিষয়গুলোকে পরিমার্জন ও পরিবর্ধন করে তাকে
আধুনিক শিক্ষায় অঙ্গীভূত করাটা বোধহয় কোথাও গিয়ে প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে ।
প্রাচীন ভারতীয় শিক্ষার সেই সামাজিক দায়বদ্ধতা , নৈতিক আদর্শ , শ্রমের প্রতি
মর্যাদা দান , শিক্ষক ছাত্রের অটুট সম্পর্ক , শিক্ষায় গনতান্ত্রিক আদর্শ
প্রভৃতি বিষয়গুলোকে নতুনভাবে আধুনিক শিক্ষার সাথে জুড়ে দিয়ে বর্তমান শিক্ষাকে
আমরা আরও সুন্দর ও সুগঠিত রুপ দিতে পারি ।

সম্পা পাল , শিলিগুড়ি ।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮১তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩১ নভেম্বর ২০২৪

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৯তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮০তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩১ অক্টোবর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত