পুরুষ এবং নারীর দ্বন্দ্ব কেন ?
আশিস ভট্টাচার্য্য
নারী ও পুরুষের সমকক্ষ মানুষ কেবল উভয়ের দৈহিক গঠন আলাদা। নারী ও সুযোগ এবং সাধনার সমন্বয়ে সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্টের চূড়ায় পা রেখেছে, দুর্গম ইংলিশ চ্যানেল সাঁতরে পার হয়েছে।
বিভিন্ন রাষ্ট্রের রাষ্ট্র প্রধানের দায়িত্ব সামলে ছে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছে লিখেছে অসংখ্য বই , বিচারকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে সুতরাং নারীকে বিন্দু তম খাটো করে দেখার বা দেখানোর অবকাশ নেই। নারী এবং পুরুষ উভয়ের সম্মেলিত শ্রমেই পৃথিবী সুন্দর, সবুজ, চির আকাঙ্ক্ষিত হয়ে উঠেছে।
তাহলে দ্বন্দ্ব কোথায়? নারীর সহজাত প্রবণতা সে বিন্দুমাত্র সুযোগ পেলেই পুরুষের সমালোচনা, নিন্দামন্দ করবে। নারী সদা সর্বদা অবহেলিতা, বঞ্চিতা, উপেক্ষিতা, অত্যাচারিতা সেই কথাগুলো বলবে, প্রচার করবে। সে অপর নারীর কাছে আলোচনার সুযোগ পেলে, সে মঞ্চে বলার সুযোগ পেলে পুরুষ কত ধরনের অত্যাচার নির্যাতন করে তার বিস্তৃত ব্যাখ্যা করবে। তাদের বক্তব্য শুনলে অথবা লেখাপড়লে মনে হবে পুরুষের একমাত্র কাজ মহিলাদের ওপর নির্যাতন করা, তাদের বঞ্চিতা, অবহেলিতা করা।
বিষয়টা কি সত্যিই তাই? পুরুষ যদি কেবল নারী নির্যাতনে ব্যস্ত থাকত তাহলে এত সাহিত্য, নাটক, চলচ্চিত্র, চিত্রকলার সৃষ্টি হতো না। এত বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার হতো না। এত বিচিত্র রং আবিষ্কার হতো না- নারীকে সুন্দরী করে গড়ে তোলার অনেক রং , অনেক প্রসাধন আবিষ্কৃত হতনা। কেবল নারীর মনোরঞ্জনে কত সুগন্ধি, কত বিলাস দ্রব্য, কত বিচিত্র পোশাকের সমাহার। পুরুষ যদি প্রতিবন্ধতা তৈরি করত তাহলে নারী কি এভারেস্টে পা রাখতে পারতো? মহাকাশে যেতে পারত? খেলার মাঠের সানিয়া মির্জা, স্টেফি গ্রাফ , মেরি কম দের দাপট থাকতো?
বিশ্বের কোন কোন দেশে সমস্যা আছে বৈকি? তালিবানি হুমকির মুখে নারী গৃহবন্দী। কিন্তু সে আলোচনা মৌচাকে ঢিল মারার সমান তাই সে আলোচনা করছি না।
নারী ইদানিং অনেক পথ অতিক্রম করেছে। স্কুল, কলেজ ,বিশ্ববিদ্যালয় ,ব্যাংক, থানা, সরকারি দপ্তর, আদালত সর্বোচ্চ মহিলাদের জয়যাত্রা অব্যাহত। পুরুষের সহযোগিতা ছাড়া এই সাফল্য অসম্ভব।
নারী নিজেই বিবাহের জন্য অতি উৎসুক আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিদিন লিখছে নারীর ৩৬৫ দিন ২৪ ঘন্টার চাকরি, তার বেতন নেই, ছুটি নেই, ইত্যাদি ইত্যাদি। এগুলি যথেষ্ট শিশুসুলভ, কারণ ইদানিং নারী স্বেচ্ছায় (এমন কি পিতা, মাতার অমতে) বিবাহ করে, পুরুষ তাকে ভয় দেখিয়ে বা সন্ত্রাস করে বিবাহে বাধ্য করে না। কিছু অতিশিক্ষিতা নারী হয়তো নারী পুরুষের মধ্যে দুর্ভেদ্য চীনের প্রাচীর তুলতে চাইছেন। কিন্তু জৈবিক প্রবৃত্তির কারণে নারীরা তাতে সামিল হবেন না বলা যায়।
নারী এবং পুরুষ কেউ কারোর শত্রু নয় ,প্রতিপক্ষ নয়, প্রতিদ্বন্দ্বী নয়। বরং সাথী, সহকর্মী, সহযোদ্ধা এবং একান্ত বিশ্বাসের পাত্র। কেন বেকার পুরুষের দায়িত্ব রোজগেরে নারীর হাতে দেবেন না এটাই প্রশ্ন। পুরুষ বিদ্বেষ ছেড়ে , পুরুষের প্রকৃত সাথী হয়ে উঠলে নারী পৃথিবীকে আরও সুন্দর সবুজ গড়ে তুলতে পারবেন।
====================
আশিস ভট্টাচার্য্য
রামকানাই গোস্বামী রোড, শান্তিপুর, নদীয়া - ৭৪১৪০৪
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন