Featured Post

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

ছবি
  "নবপ্রভাত" সাহিত্যপত্রের ৩০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে আমরা নির্বাচিত কয়েকজন কবি-সাহিত্যিক ও পত্রিকা সম্পাদককে স্মারক সম্মাননা জানাতে চাই। শ্রদ্ধেয় কবি-সাহিত্যিক-নাট্যকারদের (এমনকি প্রকাশকদের) প্রতি আবেদন, আপনাদের প্রকাশিত গ্রন্থ আমাদের পাঠান। সঙ্গে দিন লেখক পরিচিতি। একক গ্রন্থ, যৌথ গ্রন্থ, সম্পাদিত সংকলন সবই পাঠাতে পারেন। বইয়ের সঙ্গে দিন লেখকের/সম্পাদকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি।  ২০১৯ থেকে ২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত গ্রন্থ পাঠানো যাবে। মাননীয় সম্পাদকগণ তাঁদের প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠান। সঙ্গে জানান পত্রিকার লড়াই সংগ্রামের ইতিহাস। ২০২৩-২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠানো যাবে। শুধুমাত্র প্রাপ্ত গ্রন্থগুলির মধ্য থেকে আমরা কয়েকজন কবি / ছড়াকার / কথাকার / প্রাবন্ধিক/ নাট্যকার এবং সম্পাদককে সম্মাননা জ্ঞাপন করে ধন্য হব কলকাতার কোনো একটি হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে (অক্টোবর/নভেম্বর ২০২৪)।  আমন্ত্রণ পাবেন সকলেই। প্রাপ্ত সমস্ত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকার পরিচিতি এবং বাছাই কিছু গ্রন্থ ও পত্রিকার আলোচনা ছাপা হবে নবপ্রভাতের স্মারক সংখ্যায়। আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য। ঠিকানাঃ নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদকঃ নব

নিবন্ধ ।। নারী দিবসে নারী স্বাধীনতা ।। সোনালী ব্যানার্জ্জী


 নারী দিবসে নারী স্বাধীনতা 

সোনালী ব্যানার্জ্জী



আজ নারী দিবস। নারীদের স্বাধীনতা নিয়ে কে একজন আবৃতি করছে  রেডিওতে ----, কানে এলো নীলার  । সকাল থেকে সময় নেই এই সব শোনার।

 আজ ঘটা করে ক্লাবে ক্লাবে,মঞ্চে মঞ্চে, পাড়ায়‌ পাড়ায় , প্রভাতী অনুষ্ঠানে, নারী দিবস নিয়ে লম্বা ভাষন দেবে সবাই । কবিতা লেখা হবে নারীদের নিয়ে , বক্তৃতা দেবে শহরে ,গঞ্জে,নারী স্বাধীনতা নিয়ে, অনেক কথা বলবেন নেতা, নেত্রী ও সেলিব্রেটিরা-----------!!
আর রাস্তার ডাস্টবিনে পড়ে থাকবে আধা জ্বলন্ত দেহ! কোথাও বা আধা নগ্ন, লোহার রডে বা ব্লেডের চৌচির করা  রক্তাক্ত শরীর নিয়ে! বাচ্চা শিশুরা পড়ে থাকবে কোনো ডাস্টবিনে নাম পরিচয়হীন ভাবে------!!
নারী স্বাধীনতা------!!!

আনমনে এইসব ভাবতে ভাবতে,
হঠাৎ নীলার সম্বিত ফিরে এলো শ্বশুরের চিৎকারে ------
"বৌমা আমার চা কোথায়?''

"বৌমা আমার বাতের ব্যাথার  তেলটা কোথায়? দিয়ে যাও না!" শাশুড়ি বলে ওঠেন!

"মা আমার টিফিন রেডি? ''
ছেলে বেরিয়ে আসে।
:স্বামীর জোর তলব ,-----" হ্যাঁগো, আমার টাইটা কই? অফিস যেতে দেরি হয়ে যাচ্ছে !'' 

তাদের উওর দিতে না দিতেই মেয়ে বলে----, "মা আমার নাচের ড্রেসটা  একটু আয়রন করে রাখতে পারোনি!'' চোখে মুখে বিরক্তি ! "কি যে করো সারাদিন।''

"আচ্ছা বৌমা!  সবাই কাজে বাইরে থাকে,তুমি সারাদিন করো কি? সব কাজ গুলো একটু গুছিয়ে রাখতে পারো না! সারাদিন এসির মধ্যে বসে ফোন ঘাটবে !'' বলে, শাশুড়ি মুখ বেঁকায়ায়!

একা বৌমা, মা, বউ কোনদিক সামলাবে!
একা হাতে দশভুজা সেজে পড়িমরি করে সবার কাজ করতেই ব্যস্ত। সবার মন রেখে কারো মন সে পায় ​না। 

নিজের কথা নিজের স্বপ্ন, নিজের ভালোলাগা,ভালোবাসা সব বিসর্জন দিয়ে টেনে চলে ক্লান্ত শরীরে  সংসারের ভার।

আর ভাবে,  নারী দিবস আজ আমাদের সমাজে দমবন্ধ করা এক জ্বলন্ত   লাশ  হয়ে পড়ে আছে!

নারী যখন মাতৃত্বের  স্বাদ নিতে ব্যস্ত তখন গোটা পরিবার ভাবে আমার বংশ রক্ষা পাবে তো? ছেলে হয় যেনো বৌমা!
 আমার ঘরে আসবে অমুকের সন্তান!বংশের মুখ উজ্বল করবে, বংশ বাড়াবে।কেনো? কেনো এতো মেয়েদের অসম্মান, পদদলিত ,লেহন ,ঘরে ঘরে ?
মেয়েরাই মেয়েদের শক্রু হয়ে বৌদের প্রতি অন্যায় করে যায় দিনের পর দিন! 
এটা কেনো মনে হয়না---- "একদিন উনিও কারো মেয়ে, কারোর ঘরের বৌ হয়ে এসেছিলেন।


" ঠিকই তো বাপু,সারাদিন বসে বসে করোটি  কি?''
নিলার চিন্তার ছেদ পরে শাশুড়ির কথাতে। মনের অগোচরে চোখের কোনা দিয়ে জল গড়িয়ে পড়লো!
তাড়াতাড়ি সে আঁচলের খুঁট দিয়ে চোখের জল মুছে চারিদিক একবার দেখে নিলো।কেউ দেখছে কিনা।
নিজের অগোচরেও চোখের জল ফেলা মানা।এক্ষুনি হাজারটা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে তাঁকে। 

"আদিক্ষেতা দেখে আর পারি না বাপু! দেখলে গা পিত্তি জ্বলে যায়। ন্যাকা কান্না বন্ধ করো তো বাপু! ইত্যাদি, ইত্যাদি।
তাই  চোখের জল মুছে এক মনে কাজে মনোনিবেশ করে নীলা ।
নারী স্বাধীনতা!
হাসালে---- --- !!
 যেখানে কারোর অনুমতি ছাড়া মুখের আলতো হাসিও মানায় না।সেখানে এতো গাল গল্প। 

নীলা ব্যালকনিতে এসেছে শুকনো জামাকাপড় তুলতে ।
সামনে  সাপের মতো এঁকেবেঁকে সরু রাস্তাটা  যেখানে গিয়ে মিশেছে,  সেখানে একটা মঞ্চের চূড়া দেখা যাচ্ছে। ওখান থেকে মাইকের আওয়াজ ভেসে আসছে ----- নারী স্বাধীনতার গালভরা সব ভাষন,গান,কবিতা।

 নীলার বুকে হাজার সর্প দংশনের মতো যন্ত্রণায় ভরে যাচ্ছে। এইসব কথায়!
 কিন্তু তার হাত পা বাঁধা। 
​নীলা জানে , কারো অনুমতি ছাড়া এক পাও এদিক ওদিক করা মানা। তাই নীলা এই নারী স্বাধীনতার একদম বিরুদ্ধে। জানে তার দৌড়  কতোটা--------
শাশুড়ি কে কিছু প্রতিবাদ করতে গেলেই বউ হয়ে যাবে মুখরা,বাড়ি ছেড়ে বেড়িয়ে গেলে লোকে বলবে ---  বউটা খারাপ, দেখোগা  কারোর হাত ধরে বেড়িয়ে গেলো কিনা---- !!
তাঁর পেছনে বদনামের অনেক পালক লাগবে।
যেদিকে যাবে সব সময় মেয়েদেরই বদনাম। সে মুখরা, ব্যাভিচারীণী !মা,বাবা কিছু শেখায়নি ,অনেক উপাধিতে ভূষিত  হতে হবে। তাই নীলা নিজের পরিধির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে।  যতটুকু কথা না বললেই নয় তার বেশি কথা প্রয়োজন ছাড়া বলেই না। আর  ভাবে,
 সত্যি কবে আসবে সেই দিন!  যেদিন নতুন প্রভাতে,  নতুন সূর্যের আলোয় ফুটে উঠবে  সমাজের প্রতিটা ঘরে ঘরে মেয়েদের সম্মান,ভালোবাসা, স্নেহ, মমতা। সত্যি করে------ , ছেলেদের সাথে সাথে বৌদের ও টেবিলে খাবার সাজিয়ে বলবে, "এসো বৌমা, সারাদিন খেটে খেটে মুখটা শুকিয়ে গেছে! এসো তো এক সাথে বসে আগে খেয়ে নাও ,তারপর কাজ করবে!''
 স্বামী  বলবে-----, "হলো তোমার? সারাদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছো!সরো  আমি বাসনটা মেজে দিচ্ছি।  একসাথে দুজনে মিলে কাজ করবো!''
চোখের জল মুছিয়ে হাত ধরে খাটে বসিয়ে বলবে------,"ছি, ছি,হাতের কি অবস্থা করেছো!''
  হাতে ক্রিম মাখাতে মাখাতে মায়ায় ভোরে যাবে তার চোখ দুটো।

শাশুড়ি বৌমাকে  খাইয়ে দেবে নিজের হাতে নিজের মেয়ের মতো।
নারী নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করবে।ভুলে যেতে পারবে মায়ের স্নেহ, ভালোবাসা। সেইদিন নারী যোগ্য সম্মান পাবে!
মুখে নয় যেদিন সত্যি করে স্বামীর সাথে ছেলের সাথে মেয়েরা   পায়ে পা মিলিয়ে চলার অনুমতি পাবে ।ঘরে ঘরে সমাদৃতা হবে নারীদের সম্মান,ভালোবাসা, স্নেহ, মমতা।  যে নারী ছাড়া বংশ অচল,ছেলে না চেয়ে  মন্দিরে মন্দিরে পৃজো দেবে আমার ঘরে মেয়ে সন্তান হোক। ।
আজ কোনো অংশেই মেয়েরা পিছিয়ে নেই।কিন্তু তাও মেয়েরা আজও অবহেলিত,লুণ্ঠিত, ধর্ষিত ।মা দূর্গার মতো নারীরাও সব  ঘরে ঘরে পূজিত হবে,সমাদৃতা হবে!!
সেদিন ভাববো সত্যি নবজাগরণের উন্মেষ ঘটেছে।নারীরা নিজেদের যোগ্য সম্মান পাচ্ছে।  সেইদিন ঘরে ঘরে,সমাজে নারী স্বাধীনতার দেওয়ালি শুরু হবে------- 
"নারী দিবসের দিন  বলতে পারবো জোর গলায় আজ নারী দিবস------!!
 
××××××××××××××
  ​সমাপ্ত 
×××××××××××

সোনালী ব্যানার্জ্জী
ধানবাদ, ঝাড়খন্ড,

মন্তব্যসমূহ

নবপ্রভাত সম্মাননা ২০২৪

নবপ্রভাত সম্মাননা ২০২৪

জনপ্রিয় লেখা

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৬৭তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৪তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩১ এপ্রিল ২০২৪

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৬৬তম সংখ্যা ।। ভাদ্র ১৪৩০ আগস্ট ২০২৩