শীত এলেই
শরৎ সমীকরণের ছাতিম গন্ধ কবেই বলেছিল শীত আসন্ন।
হেমন্তের হিমেল হাওয়া ও সতর্ক করে বলেছিল, হামাগুড়ি দিতে দিতে শীত বুড়ি আসছে।
এই শহর থেকে গ্রাম ব্যস্ত শীত বুড়ির মোকাবেলায়।।
বৃক্ষরা ও যেন ভয়ে সমস্ত পত্রপল্লব অর্পন করেছে শীত বুড়ির পদতলে।।
বেলাও খুব তাড়াতাড়ি ফুরিয়ে যায়।
নব আনন্দে জেগে ওঠে হরেক রকম পাখির দল।
লাগেজ ঘুচিয়ে বেরিয়ে পড়ে কুটুম বাড়ির উদ্দেশ্যে।।
আর জাগবে নাই বা কেন?
শিশির ভেজা স্নিগ্ধ হাওয়ায় দূরের মাঠে সরষে ফুলের দোল খাওয়া, অথবা পাশের কোন মল্লিকা বনে একফালি সোনারোদ উড়ে এসে জুড়ে বসা, ঘাসের ডগায় লেগে থাকা শিশিরকণা, কিংবা ধানের মাঠে হিম হাওয়ার ঢেউ খেলা দেখতে হলে জাগতেই হবে শীত দুপুরে।।
শীত সকালে কম্বলের উষ্ণ পরশ কিংবা মিষ্টি রোদ গায়ে মেখে প্রেমিক মন জাল বুনে সুন্দর আগামীর।।
শীত এলেই পরিযায়ী পাখির মত ছুটে যেতে ইচ্ছে করে প্রিয় গায়ে, প্রিয় নদীর কুলে।
দেখতে ইচ্ছে করে সুপুরি গাছের পাতায় পাতায় খেলা করা একঝাঁক সবুজ টিয়ে।
পেতে ইচ্ছে করে মায়ের আঁচল, বাবা'র আদর, ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপ।।
শীতের দীর্ঘ রাতে শিশির কিংবা পাতা ঝরার টুকটাক শব্দ, লক্ষী পেঁচার বিরহী কান্না, দূরের কোন শ্মশানে সব শেষ হয়ে যাওয়ার পর পড়ে থাকা ছাই টুকু কিংবা পাশের কোন কবর খানার নিস্তব্ধ অন্ধকার মনে করিয়ে দেয় কিছু স্বপ্নের অকাল মৃত্যু আর কিছু হারিয়ে যাওয়া ভাল লাগার কথা।।
================================
সোমা মজুমদার আসাম হাইলাকান্দি।।