Featured Post

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ৮৬তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩২ এপ্রিল ২০২৫

ছবি
সম্পাদকীয় এই সংখ্যাটি বাংলা নববর্ষ বিষয়ক সংখ্যা। নৱৰ্ষকেন্দ্রিক বহু তথ্যপূর্ণ লেখা এই সংখ্যাটিকে সমৃদ্ধ করেছে। বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাস, রীতিনীতি, উৎসব, পার্বন, লোকাচার, রূপান্তর বহুবিধ বিষয় প্রকাশিত হয়েছে এই সংখ্যার লেখাগুলিতে। এই সংখ্যার বাছাই কিছু লেখার সঙ্গে আগামীতে আরও কিছু লেখা সংযুক্ত করে বাংলা নববর্ষ বিষয়ক একটি মুদ্রিত সংখ্যা প্রকাশ করার ইচ্ছে রইল।  সকলকে নববর্ষের আন্তরিক শুভকামনা জানাই। উৎসবে আনন্দে থাকুন, হানাহানিতে নয়। ধর্ম-ব্যবসায়ীদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে সহনাগরিকের পাশে থাকুন। মনে রাখুন, ধর্মকে মানুষই সৃষ্টি করেছে। ঈশ্বর আল্লা গড ইত্যাদির জন্মদাতা মানুষই। মানুষকে ভালোবাসুন। মানুষের পাশে থাকুন।  নিরাশাহরণ নস্কর  সম্পাদক, নবপ্রভাত।  সূচিপত্র প্রবন্ধ-নিবন্ধ-স্মৃতিকথা পয়লা বৈশাখ ।। সিদ্ধার্থ সিংহ নববর্ষকেন্দ্রিক মেলা, পার্বন, উত্সব, লোকাচার ।। সবিতা রায় বিশ্বাস নববর্ষ আবাহন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এবং বিভিন্ন দেশে ।। তুষার ভট্টাচার্য নববর্ষের সেকাল ও একাল ।। হিমাদ্রি শেখর দাস নববর্ষের হাল-হকিকৎ ।। শংকর ব্রহ্ম বোশেখি বাঙালি নাকি পোশাকি বাঙালি? ।। দিব্যেন্দু...

মুক্তগদ্য : তরুণ প্রামানিক




   উত্তুরে হিমেল বাতাসে ...



রাত জাগা জানালার কাঁচে ভেজা শিশিরের জলছবি। ঘাসের ডগায় ডগায়  হিরাকুচির স্বচ্ছতা দোলা খায় উত্তুরে ভোরের হিমেল বাতাসে। হলদে ফড়িং উড়ে যায় আনমনে কচি ঘাসের শরীর স্পর্শ করে। সবুজ প্রকৃতি জুড়ে সাদা কুয়াশার অস্পষ্ট দৃশ্যমানতা।রাতভর শিশিরে সর্বাঙ্গ ভিজে অনাঘ্রাতা প্রকৃতির আলসেমি যেন কিছুতেই কাটতে চায় না।

পাতায় পাতায় কুয়াশার ফিসফাস।কুয়াশা জড়ানো শীতের সকালে সূর্য বড় অভিমানী। ঝিম ধরা ধোঁয়াশা  ঘনিয়েছে নদীর বুক জুড়ে। সেই কুয়াশার পরত পেরিয়ে হিলহিলে হাওয়া এসে নদীর অন্য পারের গল্প বলে।কত রকম পাখির ডাকে।দিগন্ত ভিজে ভারী হয়ে থাকে।  

হিমঝরা খুব ভোরে, শুকতারার আলোয় পথ চিনে নিয়ে, বৃদ্ধ গোসাঁই সেই কখন খঞ্জনি বাজিয়ে গেয়ে গেছে গান, নরম সুরে। কলা পাতা থেকে টিনের চালে ক্রমাগত হিম পড়ে টুপ্ টাপ ,টুপ্ টাপ। মায়ের নরম বুকে ওম খোঁজে ছোট্ট শালিক। রসের ডাবরী হাতে খেজুর গাছ থেকে নেমে এসে আগুনের আতপে নিজেকে সেঁকে নেয় আজম মিঞা।     
  
খোসা ছাড়ানো কমলালেবু রঙা মিয়ানো রৌদ্র এসে গড়িয়ে পড়ে গোবরে নিকানো মাটির উঠানে। হিমেল সকালের মিঠে রোদ গায়ে মেখে এক্কা দোক্কা খেলে পথ ভোলা একলা চড়াই। মাটির ভারে ধোঁয়া ওঠা চায়ের চুমুকে গা ঝাড়া  দেয় প্রবল শৈত্য প্রবাহে ন্যুব্জ জনতা।

তারপর খেয়ালী বাতাস এসে  আদিগন্ত সর্ষেক্ষেতে থিরিথিরি কাঁপন জাগায়। দিগন্ত জুড়ে হলুদ রঙের ঢেউ ওঠে। কালো ভ্রমর গুঞ্জন করে ফেরে।
চাষীর উঠানে চালের গুড়িতে আঁকা আলপনারা জেগে ওঠে, নতুন ফসল ঘরে তোলার পালা সাঙ্গ হলে নবান্নে মেতে ওঠে গ্রাম্য জীবন। বিন্নি ধানের খৈ নলেন গুড়ের সোনালী আদরে জড়িয়ে থাকে। মিঠে রোদে পিঠ করে দুলে দুলে সুর করে নামতা পড়ে কচিকাঁচা, অদূরে রোদের আলসেমিতে দুধের বাটি থেকে মুখ সরিয়ে দুই পা ছুড়ে আড়মোড়া ভাঙে ছোট্ট মিনি।উঠানে পড়ে থাকা ধানের কণা খুঁটে খায় অভিমানী মুরগির দল। 

জীবনের সুরে ঝংকার ওঠে, থমকে থাকা জীবন, ধীরে ধীরে ফিরে পায় হারানো ছন্দ।পাতা ঝরিয়ে বেলা এগিয়ে চলে অবেলার প্রান্তে।
 থরথরে দিন ভোর বাতাস বওয়া থেমে গেলে, মড়া বিকেলের আলো আরো খানিক মিইয়ে এলে, জাফরানি রং ছড়িয়ে পড়ে ঘোলাটে আকাশে ছাড়িয়ে গাছেদের পাতার ফাঁকে। শেষ বিকেলের সোনালী রং ডানায় মেখে বাসায় ফেরে গাঙ চিল। হাট থেকে ফেরে হাটুরের দল। মাথায় ভাট ফুল, সুর টেনে গান গাইতে গাইতে, দিনান্তের খাটুনি সেরে, দলবেঁধে বাড়ির পানে এগিয়ে চলে সাঁওতাল রমণীর দল।

সূর্য ডুবে গেলে বরফ কুচি ঠান্ডা বয়ে যায় বৃদ্ধ শিরায় শিরায়। কাশির দমক ওঠে। গৃহস্থের উঠানে জ্বলে ওঠে তেলের প্রদীপ খুব সরু হয়ে। সুর করে বেজে ওঠে মঙ্গল শঙ্খ জবুথবু শীতের কাঁপুনি নিয়ে। এক সমুদ্র নীলচে ঠান্ডা ক্রমে  গ্রাস করে দীর্ঘ কালো রাত্রিকে।  
  
=====০০০=====


Tarun kumar Pramanik
9332881855
9875349800

সূচিপত্র

আরও দেখান

জনপ্রিয় লেখা

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮১তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩১ নভেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৯তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮০তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩১ অক্টোবর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল