বাঘে ছুঁলে আঠারো ঘা!
মনোরঞ্জন ঘোষাল
বাঘে ছুঁলে আঠারো ঘা। কথাটা মনে ছিল না। তাই হল ভুল!
কদিন আগে আমার গোটা তিন মুরগি একটা মোরগকে নিয়ে মহা আনন্দে বাগানে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। ওদের আনন্দ দেখে আমি নিশ্চিন্ত হয়ে ঘরে বসে দু কলম লিখছি, হঠাৎ দেখি ওর কজন চেঁচাচ্ছে! সে চেঁচানোর ধরন আমি জানি। বুঝলাম কিছুতে তাড়া না হয় পাকড়াও করেছে।
কুকুর খাটাস গোসাপ এ সব শত্রুরা যে নোলা পেতে বসে আছে তা আন্দাজ করিনি।
দৌড়ে ওদের কাছে গিয়ে দেখি, আমার হলদি নেই। বড় সাধের মুরগি, সবে দুটো ডিম পেড়েছে। আশেপাশে একটু খুঁজতে দেখি পালকের ছড়াছড়ি। বুঝলাম সেখান থেকেই পাকড়াও করেছে। আর যে পথে তাকে হরণ করে নিয়ে গেছে, সে সীতার মত কিছুটা ছাড়া ছাড়া একটি করে পালক ছড়িয়ে নির্দেশনা দিয়ে গেছে।
আমি এগিয়ে চললাম সেই পথে। সোজা গিয়ে ঢুকে পড়লাম জঙ্গলে। এদিক ওদিক খুঁজতে শুনতে পেলাম একটা ঝটপট আওয়াজ। দৌড়ে সেখানে গিয়ে দেখি, হলদিকে ঘায়েল করে সে ব্যাটা পালিয়েছে।
তাকে ধরে আনলাম। তখন সে বেশ চড়কো আছে, ডানার পাশে শুধু একটা জায়গাতে দাঁত বসিয়েছে। বলি থাক তাহলে, আর ভাগিয়ে লাভ নেই, একটু সেবা করলে বেঁচে যাবে। তাই ওষুধ লাগিয়ে খাইয়ে ব্যাণ্ডেজ বেঁধে দিলাম। দেখি দিনটুকু দিব্যি আছে। একটু দুর্বল, তা অমন হয়, নার্ভের রোগ, আবার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরেছে।
তাই আলাদা করে যত্নে ওকে একাকে একটা ঘরে ঢুকিয়ে দিলাম। দেখি সকালে ও আর বের হল না। উঁকি দিয়ে দেখি সে শুয়ে পাথর হয়ে গেছে।
মনে পড়েনি যে, খাটাস বাবাজী ঐ বেড়াল জাতির একজন। তাই বাঘ বা বেড়াল কিংবা খাটাস এরা যেই ছুঁকনা কেন, ষোল আঠারো কুড়ি যা হোক একটা ঘা পড়বেই। তার থেকে রক্ষা করা ভাগ্যের জোর। সে যে আমার নেই তা আমি জানি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন