গুচ্ছকবিতা ।। সুশান্ত সেন
চুপ
জানি চুপ করে থাকা উচিত নয়
চুপ করে থাকলে অন্যরা উৎসাহিত ।
তবু চুপ করে থাকি
ফুলের মত ফলের মত
কৃষ্ণচূড়ার ডালের মত
নদীর মত ডোবার মত
ঝোরার মত
এবং
চুপ করে থাকতে থাকতে
ক্রমে বোবা হয়ে যাই।
তখন ঝড় এসে ছুড়ে ফেলে দেয়
গাছ তলায়।
হা হা হি হি করে করা সব হেসে ওঠে।
বাঙালির যীশু
বাংলা মায়ের বুকের ওপরে অনেক প্রেরণা এসে
মিলে মিশে সব এক হয়ে যায় সবাই কে ভালবেসে,
সৃষ্টিকর্তা বড় উদাসীন সবাই তাহার কাছে
প্রার্থনা করে চেয়ে নিতে চায় যার যা পাওনা আছে ।
মনের ভেতর মঙ্গলদীপ সতত জ্বালাও যদি
সকাল ধর্ম প্রেমেতে মেশাবে বহতা হবে যে নদী।
বাঙালির যীশু তাই বেধে দিল যত মত তত পথ
মিলন গঙ্গা মর্তে আনলো অমর সে ভগীরথ।
বাঙালির বুকে সদা জাগ্রত ভারত মহিমা খানি
প্রভাত আলোর ঝলকানি নিয়ে স্বর্গ আনবে টানি।
ক্ষমা
নিশ্চয়তা নেই তাই গোপনে গোপনে
যত কাণ্ডই হোক কাঠমান্ডুতে আর ফেরা যাবে না,
ক্ষমা ত চাইতেই হবে
এই পূবের আলো লাগা বাতাসের কাছে
তাকে ত আঘাতে আঘাতে
কালিমালিপ্ত করে ফেলেছি।
ক্ষমা ত চাইতেই হবে
এই আলো ঠিকরে ওঠা হিমবাহের কাছে
তাকে ত গলিয়ে গলিয়ে
ক্ষুদ্রতর করে চলেছি।
ক্ষমা ত চাইতেই হবে
উত্তর মেরুর হিম বাতাসে ভেঙে ভেঙে যাওয়া শৈল শিখরের কাছে,
নীল তিমিদেরও কাছে,
তাদের ত বরফ কাটা জাহাজ চালিয়ে চালিয়ে ছিন্ন ভিন্ন করে
হারপুনে গেঁথে গেঁথে
নির্বংশ করে আনলাম।
ক্ষমা চাইতেই হবে
তোমার কাছে প্রকৃতি কোন এক দিন।
নিশ্চয়তা
অভিসার
নিশ্চয়তা নেই তাই জীবনটা বেশ ঝকমারি
হাজার হাজার দাবি আর তার চাপ সাঁড়াশির
এই প্রশ্ন ধেয়ে আসা
এবং তা উত্তর সাপেক্ষ।
তাই সেকি চলে যায় মোহনা পেরিয়ে
দূর দেশে
দূর দেশে একক জীবন।
স্বরযন্ত্র
স্বরযন্ত্র না থাকলে ত কথা বলা যেত না
তাই গরিলার মুখের হাড়ের
একটু অদল বদল করে নিয়ান্ডারথালদের গলায় কথা ফোটানো হলো।
সেই থেকে কত ভাষা যে তৈরি হতে থাকল
তার আর হিসেব থাকলো না।
মানুষের জুড়ি নেই
কত বকবক সে করতে পারে !
এই যেমন এখন চলছে
ছাই পাশ লেখা
লাইনের পর লাইন।
অতীত
যেমন যাবে না বেলেঘাটার সেই ঠিকানায়।
যত বৃষ্টিই পড়ুক
ওরা বৃষ্টিতে আর ভিজবে না।
যত চেষ্টাই হোক
কেউ আর মধ্যরাত্রে বলে উঠবে না -
অবনী বাড়ি আছো !
অবনী রা আর যে যার বাড়িতে থাকে না।
===================
সুশান্ত সেন
৩২বি , শরৎ বসু রোড
কলিকাতা ৭০০০২০
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন