মাতৃভাষার সংকট
কে দেব দাস
ভাষা, ভাষা, ভাষা;
তোমার ভাষা আমার ভাষা; তোমার আমার মায়ের ভাষা, আ মরি মাতৃভাষা।
মাতৃভাষার অধিকার ছিনিয়ে আনলো যে জাতি ওরে, সে যে বাঙালি।
" চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির, জ্ঞান যেথা মুক্ত "
এই মন্ত্রে দীক্ষিত যে জাতি-সে জাতি শির নোয়াতে জানে না।
তাইতো, রফিক,বরকত,সালাম রা রক্তের বিনিময়ে ছিনিয়ে এনেছিল মাতৃভাষার অধিকার।
"আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি "
আবার শিলচরে ১৯৬১ এ-যে এগারো জন বাংলা ভাষার জন্য শহীদ হয়েছিল, তাঁদের রক্ত ও ভুলিনি আমরা।
মানভূমের বাংলাভাষার আন্দোলন ও স্মরনীয় মাতৃভাষার অধিকার অর্জনের জন্য।
"মাতৃভাষা প্রত্যেক জাতির জন্মসিদ্ধ অধিকার"
সারা বিশ্বের সমস্ত জাতি, উপজাতি কে মাতৃভাষার অধিকার এনে দিয়েছে যে জাতি-সে জাতি বাঙালি।
সেই জাতিকে করিস তোরা হেলা ফেলা-বাংলা লেখায় হানিস তোরা কালি।
তোরা কেমন মানুষ বল! মনুষ্যত্বের দাবিদার; না কি বর্বর, হিংস্র প্রজাতি?
সব ভাষাকেই কর রে তোরা সমান সন্মান, তবেই হবে মাতৃভাষার উথ্বান।
বাংলা লেখায় কেন তোদের গাত্রদাহ ;
জারি করিস ফতোয়া :-
" অসমত বাংলা ভাষা ন চলিব, ন চলিব " !
মাতৃভাষার অধিকার তোদেরকে দিল কে?
সে যে বাঙালি, আবার কে!
শোনরে ঐ- বীর লাচিত সেনা, অন্যের ভাষাকে করবি যত সন্মান।
বিনিময়ে তোর মাতৃভাষাকে করবি তত গৌরব দান।
মাতৃভাষা বিশ্ব মানব জাতির অধিকার-
বাংলা ভাষা ন চলিব অসমত ?
ওরে, উদ্ভ্রান্ত পাগল তোরা,বিশ্বজুড়ে দেখ রে চেয়ে- চিত্তশুদ্ধি কর রে তোরা!
ওরে মূঢ়, ধমকে-চমকে, শংকিত পরাণ রে।
শংকিত পরাণে কাউকে অন্যের মাতৃভাষা শেখানো যায় না।
বল প্রয়োগে সাময়িক অন্যের মাতৃভাষা শিখতে বাধ্য করা যায়।
কিন্তু তার অন্তঃসার থাকবে শূন্য!
বুজবি যত তাড়াতাড়ি, হবে তোদের পূণ্য।
যে ভাষার মাধুর্য যত সুমধুর,সহজ সরল, যার গুনবত্তা যত বেশি।
লোক স্ব উৎসাহে তাকে গ্ৰহণ করে ভাষা শেখার আগ্ৰহে।
বল প্রয়োগের চেষ্টা করিস বৃথা।
ওরে মূঢ়,
ধমকে-চমকে বা বল প্রয়োগে ভাষা শেখানো যায় না।
এই সত্যটি বুঝলে ভালো, নয়তো ভাষার নামে ভাষা যাবে রসাতলে।
___________________
কে দেব দাস
পি৫২ গ্ৰীনভিউ, গড়িয়া
কলকাতা ৮৪
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন