রশ্মিতা দাস
ভেলায় ভাসে ক্ষীণ কটি হাড়,
জ্বলন্ত প্রেমশিখা,
মত্ত ক্ষ্যাপা আগুন আঁচে
বেহুলা একরোখা।
বাইছে যে দাঁড় আপন মনে
উল্টো স্রোতে যুঝে,
মর্ত্যধামে দামাল হিয়া
স্বর্গ যে নেয় খুঁজে...
যমের পিছে সাবিত্রী ধায়
প্রশান্ত-প্রেম বক্ষ,
দৃপ্ত শীতল,চিত্ত অটল
বজ্রকঠিন লক্ষ্য...
নৃত্যে সুরে ভুলিয়ে তাঁরে
ছলের ছদ্মবেশে,
কলিজা মেধা হয়ে একাকার
স্বামীকে ফেরায় শেষে...
অগ্নিদহন!তুচ্ছ মরণ
ভরা সভার মাঝে,
শরীর শুদ্ধি পরীক্ষাতে
রামের আঁখি খুঁজে
হন্যে সীতা,রক্ত জমাট
হৃদের অন্তরালে,
অন্ধ ধরায় কাঙাল সীতা
জীবনগাঁথা ভুলে...
পবিত্রতার চরণ ধুয়ে
ধুয়ে হাতের কর,
দুধের শিশুর প্রলাপ খোঁজেন
ব্রম্মা বিষ্ণু মহেশ্বর!
কাম কে করে মাতৃদুগ্ধ
অগ্নিদৃপ্তা নারী।
অনুসূয়ার দুপায়ে দেবী
ঝরান অশ্রুবারি...
বাঁশীর সুরে আগুন হৃদে
পুড়েই খুঁজে শ্বাস,
আত্মাহুতিই প্রাণের পরশ
বৃষ্টি আর আকাশ...
রাধার জ্বলন,দহন জুড়ে
অপার কৃষ্ণনাম,
প্রেমের সুরে অশ্রু জুড়ে
হৃদয় স্বর্গধাম...
তপোবনের বটছায়ায়
হৃদের আরশী জ্বলে,
মগ্ন তাতে শয়ন,স্বপন
তৃষ্ণা ক্ষুধা ভুলে...
জীবন জুড়ে প্রেমের সুরে
দৃপ্ত প্রতীক্ষায়,
শকুন্তলার ব্যাথার জোয়ার
আঁধির স্রোতে বয়...
প্রেম কি দূর ওই আকাশপারের
মত্ত বাউলগান!
নাকি নীরব মেঘের কোলাজ!
কাজলা অভিমান!
শ্মশান ভূমির চিতায় নিথর
হয় নস্বর দেহ,
হৃদয় বিণার স্বরলিপি
হয় না কভু দাহ...
অমর সে যে নারীর হৃদয়
নারীর সোহাগ কথা,
ভূমির পরে স্বর্গ রচে,
রচে জীবনগাঁথা...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন