বিসর্জন
ফাল্গুনী দে
সেরে উঠছে পৃথিবী। করোনার পর স্কুল কলেজ এখন নিয়মিত। রাত পোহালেই বসন্ত পঞ্চমী। মেয়েরা রাত জেগে এঁকেছে আলপনা। ছেলেরা প্রতিমা আর প্যান্ডেল সাজিয়েছে যত্নে। জঙ্গল থেকে ছিঁড়ে এনেছে আমের মুকুল, ফুল বেলপাতা। অন্ধকার রাস্তায় ছেলেরা টর্চের আলো দেখিয়ে মেয়েদের এগিয়ে দিয়েছে বাড়ির দরজা পর্যন্ত।
আজ সরস্বতী পুজো। ভোর থেকেই মাইকে বাজছে লতা মঙ্গেশকরের গান। পাঞ্জাবী আর শাড়িতে ছাত্রছাত্রীরা অঞ্জলিতে ব্যস্ত। হেডস্যার স্কুলে খিঁচুড়ির আয়োজন তদারক করতে ব্যস্ত -- "দেখিস বাবারা সবাই যেন ভোগ খেয়ে সুনাম করে। মাষ্টারমশাই দিদিমণিরা হলঘরে বেঞ্চে, অভিভাবকরা প্যান্ডেলে, আর তোরা সব বারান্দায় সারসার বসে পড়। অতি উৎসাহী ছেলের দল -- "হ্যাঁ স্যার, কোন চিন্তা করবেন না" বলে আশ্বস্ত করেছে। মৃণাল এককোনে বসে আছে। তার মন ভালো নেই।
পূজো শেষ। রাত শেষে ঘুমোতে যাবে মৃণাল কিন্তু এখনও বাবার ফোন এলো না। সুদূর মুম্বাইয়ের ব্রিজক্যান্ডি হাসপাতালে তার ডাক্তার বাবার দিকে এখন গোটা দেশ তাকিয়ে। সুরসম্রাজ্ঞী লতাজি অসুস্থ। ভোর রাতে বাবার হোয়াটসঅ্যাপ আসে -- "খবর ভালো নেই।"
আজ মায়ের বিদায় বেলা। ঢাকের কাঠি আর জনতার মিছিল অপেক্ষা করছে স্কুলের বাইরে। মৃণাল উঠে দাঁড়িয়ে লতাজির একটি ছবি সরস্বতীর মুখের উপর বসিয়ে দিলে হুবহু মানিয়ে গেলো।
====০০০=====
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন