ঝক্কি বনাম লক্ষ্মী
রমলা মুখার্জী
মোবাইলের ঝক্কি আর লক্ষ্মীর গল্পটাই আজ বলব।
আমার পতিদেবতার কাছে মোবাইল হল হাজার ঝক্কি। উনি বলেন,"আমার এই মোটা মোটা আঙুলে ঐ টাচ ফোনে আলতো টাচ অসম্ভব, জোরে টেপাটিপিতে ফোনটা ঠিক বিকল করে ফেলব। তাছাড়া ঐসব ছোট ছোট লেখা টাইপ করা বা পড়া আমার কম্মো নয়।" ভয়েতে তো তিনি স্মার্টফোন থেকে শত হস্ত দূরে থাকেন। আদ্যিকালের একটা পুচকে ফোনেই শুধু কথাবার্তাটি কোন মতে সারেন।
এবার বলি আমার কথা। ছোটছেলে বলল,"মা, তুমি এত লেখালেখি করো, স্মার্টফোন কেনো, অনেক সুবিধা পাবে।" ও বাবা, স্মার্টফোন কিনে তো ছেলের ছাত্রী হয়ে গেলাম! অনেক ঝক্কি সামলে স্মার্টফোনের বেশ কিছু ব্যবহার শিখেও নিলাম। ইমেল, হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, ইন্টারনেট এসবের সুবিধা এখন অবিরত নিয়েই চলেছি। ছেলে পরিহাস করে এখন বলে," খাল কেটে কুমীরটা আমিই এনেছি মা, এখন তো আমার থেকেও বেশি তুমি মোবাইলে নিমগ্ন থাক।"
আমি বলি নেটদুনিয়ার আগে একটা বইয়ের জন্য কত দোকান, নয় তো লাইব্রেরি ঘুরতে হত, এখন অবসর জীবনে এই নতুন দিগন্তে মননিবেশ করে বেশ আনন্দ পাই রে, লেখার রসদও পেয়ে যাই। আবার ঘরে বসেই ট্রেনের টিকিট কাটা, ট্রেন কোথায় আছে সেটা জানা, টাকার লেনদেন আরও কত হাজার সুবিধা পাই বল তো? ভাগ্যিস তুই স্মার্টফোনের ব্যবহারটা শিখিয়েছিলিস, তাই তো একটু স্মার্ট হলাম।" তাই আমার কাছে স্মার্টফোন এখন ঝক্কি নয় বরং লক্ষ্মী।
========================
ডঃ রমলা মুখার্জী,
বৈঁচী, বিবেকানন্দপল্লী,
জেলা হুগলী, পিন ৭১২১৩৪
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন