দুটি কবিতা ।। মঞ্জু বন্দ্যোপাধ্যায় রায়
এক পৃথিবী বৃষ্টি
কবিদের বৃষ্টি যেন দুধ সাদা ঘাগড়া পড়া নর্তকী
জড়ির সুতোয় সেলাই করা জোৎস্নার ভাঁজে ভাঁজে আলোয় বোনা ঝর্না।
প্রথম প্রেমিক জানিয়েছিল বৃষ্টি মানে বর্ষা নয়।
প্রেমিকের ঠোঁটের বৃষ্টিতে প্রতিনিয়ত ভিজে যাচ্ছে বুক ।
দ্বিতীয় প্রেমিক বলেছিল শীতবৃষ্টির না থাকা ছাতা হুহু শীত প্রিয় খিচুড়ি।
আর দুপুরে নেমে আসা আঁধারে পাশাপাশি দুটো জোনাকি।
তৃতীয় প্রেমিক বলেছিল
এনে দেবো আস্ত একটা চেরাপুঞ্জি , মেঘের বুকে মুখ লুকানো ভেজা ভালোবাসা।
হুড়মুড়িয়ে মেঘ উড়িয়ে গর্জে ওঠা নদীর জলের ঢেউ।
চতুর্থ প্রেমিক সে রাজি ছিল শ্রাবণের বারিধারা হতে হয়তো বা ইলিশে গুড়ি , কিংবা ধানক্ষেতের কচিপাতায় হেঁসে লুটোপুটি।
পঞ্চম প্রেমিক বাসস্ট্যান্ডে একটা ছাতার তলায় জড়াজড়ি পা ডুবিয়ে হেঁটে যাওযা।
কাপড় ধোয়া রং লেগে যাওয়া বাঁ বুকের সাদা শার্টে সুখচরের মেদুরতা।
ষষ্ঠ এবং হাজার প্রেমিকের একটা চিরকুটে ছিল এক পৃথিবী ভালোবাসা জমা রাখলাম মেঘের কাছে ।
তুই এই বর্ষায় বৃষ্টি হয়ে আয় আমি ভিজিয়ে নেবো ভুলিয়ে দেবো সব হাহাকার।
আষাঢ়ের সুচিপত্র
একটু একটু করে সমস্ত ব্যথা ভুলে এগিয়ে গিয়ে
চোখে পড়ে ক্ষেত ভরা সর্ষেফুল।
যতদূর চোখ যায় আকাশ নেমে আসে হলুদ ফুলে। একটা একতারা বেজে চলে মেঠো পথে।
সবুজের হাতছানি ভুলে কর্পোরেট বাউল শীতঘরে দ্যাখে চোখে সর্ষে ফুল
সুচিপত্রে জমা হয় দেশবিদেশের ঠিকানা।
আজ যখন আষাঢ় একটা চেরাপুঞ্জি এনে আমার সামনে দাঁড় করিয়ে দেয়
আমি তখন তার চোখের পলকে বৃষ্টি এঁকে দিই।
==========================
মঞ্জু বন্দ্যোপাধ্যায় রায়
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন