Featured Post

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

ছবি
  "নবপ্রভাত" সাহিত্যপত্রের ৩০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে আমরা নির্বাচিত কয়েকজন কবি-সাহিত্যিক ও পত্রিকা সম্পাদককে স্মারক সম্মাননা জানাতে চাই। শ্রদ্ধেয় কবি-সাহিত্যিক-নাট্যকারদের (এমনকি প্রকাশকদের) প্রতি আবেদন, আপনাদের প্রকাশিত গ্রন্থ আমাদের পাঠান। সঙ্গে দিন লেখক পরিচিতি। একক গ্রন্থ, যৌথ গ্রন্থ, সম্পাদিত সংকলন সবই পাঠাতে পারেন। বইয়ের সঙ্গে দিন লেখকের/সম্পাদকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি।  ২০১৯ থেকে ২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত গ্রন্থ পাঠানো যাবে। মাননীয় সম্পাদকগণ তাঁদের প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠান। সঙ্গে জানান পত্রিকার লড়াই সংগ্রামের ইতিহাস। ২০২৩-২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠানো যাবে। শুধুমাত্র প্রাপ্ত গ্রন্থগুলির মধ্য থেকে আমরা কয়েকজন কবি / ছড়াকার / কথাকার / প্রাবন্ধিক/ নাট্যকার এবং সম্পাদককে সম্মাননা জ্ঞাপন করে ধন্য হব কলকাতার কোনো একটি হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে (অক্টোবর/নভেম্বর ২০২৪)।  আমন্ত্রণ পাবেন সকলেই। প্রাপ্ত সমস্ত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকার পরিচিতি এবং বাছাই কিছু গ্রন্থ ও পত্রিকার আলোচনা ছাপা হবে নবপ্রভাতের স্মারক সংখ্যায়। আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য। ঠিকানাঃ নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদকঃ নব

মুক্তগদ্য ।। অন্য ভালোবাসা ।। মহুয়া রায়

অন্য ভালোবাসা 

 মহুয়া রায়


রাতের অন্ধকার ভেঙ্গে আকাশ ভরা পূর্ণিমার চাঁদের আলো খানিক নিভিয়ে এসেছে, পূর্ণিমার চাঁদ আজ, আকাশের অন্ধকারের সহিত খানিক আলাপ জুড়েছে, সে জানান দিচ্ছে পূর্ণিমার পক্ষ সমাপ্তির পথে ক্ষণিক অমাবস্যা শুরু।
তুমি আমি দুজনেই দাঁড়িয়ে সেই সুউচ্চ পাহাড়সম এক অট্টালিকার বারান্দায়। দুজনেই আজ চাঁদের দিকে তাকিয়ে। কি অদ্ভুতভাবেই যেন আর চাঁদকে ভীষণ আপন মনে হচ্ছে ঠিক সে রকমই মনে হচ্ছে আপন বস্তুটি আর কয়েকটা দিন পর আমার চোখের সামনে হতে দূরে চলে যাবে। কোথাও যদি মনে হচ্ছিল এই চাঁদ আর তুমি দুই যে আমার আপন আর তুই যে আমায় ছেড়ে দূরে সরে গিয়ে আমার কাছে অমাবস্যার রাত নামিয়ে দেবে। সেদিন বারান্দায় দাঁড়িয়ে চাঁদ দেখতে দেখতে হঠাৎ তোমায় জড়িয়ে ধরলাম। তোমার হৃদয়ে আমার আমার মস্তক শায়িত হতেই আমার নয়ন হইতে অশ্রুধারা নির্গত হলো। প্রথমটা ভাবলাম তোমার হৃদয়ের মস্তক রেখে শান্তি অনুভব হয় তাই হয়তো এই অশ্রুধারা নেমে আসলে তোমায় ফাঁকি দিয়ে দেবে। কিন্তু কই ? হে সখা আমার অশ্রুধারা তোমায় ফাঁকি দিতে পারল কই? বেশ কিছুক্ষণ তোমার বুকে আমার মাথায় শায়িত করে দাঁড়িয়ে ছিলাম চাঁদের আলো নিচে। বেশ কিছুক্ষণ চুপ ছিলাম দুজনে। দুজনেই যেন দুজনের নিস্তব্ধতা অনুভব করছিলাম। শুনতে চাইছিলাম নিঃশব্দের জোর, সে হয়তো অনুভব করেছিলাম মনের হৃদয়ের কম্পন। তোমার হৃদয় কম্পিত হচ্ছিল প্রলয় সম্মুখ উত্তাল সমুদ্রের তরঙ্গের নেয়। আর আমার হৃদয় কম্পিত হচ্ছিল এক ভয়াবহ দুর্যোগ সম ভূকম্পনের ন্যায়। সে নিস্তব্ধ সন্ধ্যায় সেই নিস্তব্ধ বারান্দায় শুধু একটিমাত্র শব্দই সেই নিস্তব্ধতাকে ভঙ্গ করেছিল। দুজনের নিস্তব্ধতা শেষ হওয়া মাত্রই কখন যে তোমার বক্ষে আর তোমার দুই বাহু মধ্যে নিজেকে আটক করেছিলাম বুঝতেই পারিনি। তুমি বোঝার চেষ্টা করছিলে আমার অশ্রুধারা নির্গত হওয়ার কারণ। আর আমার নিঃশব্দের শব্দ ও তোমায় নিজ বাহুতে সজোরে আলিঙ্গন করে অশ্রুধারা নির্গত হওয়ার কারণ তোমাকে ছেড়ে থাকার ভয় অথবা বলতে পারো তোমাকে ছেড়ে থাকতে পারবো না সেই যন্ত্রণার তীব্র ভয়। তবে তুমিও সেদিন সজোরে নিজ বাহুতে নিজ বক্ষে আলিঙ্গন করে আমায় ধরে রেখেছিল। তোমার আলিঙ্গন আমার শব্দহীন করে রাখতে পারল না। অবশেষে বলেই দিলাম,"তুমি যেও না সখা! একা লাগে আমার" । তুমিও সেদিন বাঁধ দিয়ে তোমার অশ্রুধারা আটকে রেখে আমায় বলেছিলে "প্রিয়তমা তোমায় ছেড়ে তো কোথাও যায়নি। যেতেও যে পারবোনা, তোমার মতন করে কেই বা ভালবাসবে বলতো, কার কাছে এরকম মন ভরা ভালোবাসা আর হৃদয় ভরা আদর পাব? কি হইবা আছে যারা আলিঙ্গনে শান্তি অনুভব হবে, যার গলার স্বর ভালবাসার জানান দেবে যার স্পর্শ প্রতি মুহূর্তে আপন অনুভব করাবে? কিন্তু প্রিয়তমা তুমি যদি এইভাবে অশ্রুধারা নির্গত কর , মরিয়াও যে শান্তি পাবো না। সেখানে তো আমি নিজ গৃহে একটিবার মায়ের সহিত আদর পাওয়ার উপলক্ষে যাচ্ছি।" কম্পিত স্বরে উত্তর দিয়ে বলেছিলাম, "জানি সখা। কিন্তু কি করি বল? তোমায় ছাড়া যে আমার একটা দিনও চলে না। আগে ভাব তাম তোমার থেকে দূরে থাকাই ভালো যদি ভালোবেসে ফেলি পাছে হৃদয় ভাঙ্গে, তবে সখা আজ যে ভালোবাসার গভীরতা এতই সাময়িক দূরত্ব যে সইতে পারি না। মনের মধ্যে যে উথাল পাথাল চলিতেছে তা কি করে বর্ণনা করি, শুধুই মনে হচ্ছে আর কটা দিন পরেই যে আমি তোমায় দেখতে পাবো না। আকাশের অমাবস্যাও যেন আমার সাথে মিলে যাচ্ছে। আকাশের সাথে আমিও একলা হব। চাঁদের অভাব বড়ই অনুভব হবে। জানো তো সখা তোমার কাছে তো শুধু চারটে দিন মাত্র, আর এই চারটে দিন আমার কাছেই চার সহস্র বৎসরের ন্যায় অনুভব হবে। আপনি সান্তনা প্রদান করি তোমার সহিত প্রত্যহ দেখা না হলেও তুমি আমার নিকট অবস্থান করো। আমি চাইলেই শুধু তোমার নিকট উপস্থিত হতে পারি। কিন্তু সখা তুমি আমায় ছেড়ে অতি দূরে তোমার বাড়িতে গেলে আমি যে তাহা করতে পারবো না। দেখা করবার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও যে ছুটে তোমার নিকট উপস্থিত হতে পারবো না। এই যন্ত্রণায় যে আমায় প্রতিনিহত আঘাত করে চলেছে। এই চারদিন আমি রাধিকার মত আমার কালাচাদের অপেক্ষায় অবিরত থাকবো। তোমার হৃদয় আর তোমার বাহুতে নিজেকে সমর্পিত করে সে শান্তি অনুভব হয় এই চারটে দিনে পাইব না। ভোরের প্রস্ফুটিত ফুলের কুঁড়ির মতন শান্ত স্নিগ্ধ কোমল সৌরভের মতো তোমার গায়ের নম্র গন্ধ ,কমল স্পর্শ, শান্ত উষ্ণতা, এই সব কিছু থেকেই যে বিরত থাকবো। তোমায় যে ভীষণ ভালোবাসি সখা"। তুমিও সেদিন উত্তরে বলেছিলে "সবই যে আমার জ্ঞাত, প্রিয়া। উতলা না হয়ে মন কে স্থির করো, তোমাকে যে এই ভাবে দেখতে বড় দুঃখ অনুভব হয়। প্রিয়তমা আমিও যে তোমাকে দেখার জন্য উদ্বেগ হয়ে থাকি। কিন্তু ওদিকে যে মায়ের গায়ের গন্ধ, মায়ের স্নিগ্ধ স্বর একটিবার উপভোগ করার জন্য আমার হৃদয় বড়ই উতলা। মা ছেলের মিলনের পর যে আমার হৃদয়ও শান্তি লাভ করবে। প্রিয়া, আমার হৃদয় যে তোমাকেই খুঁজবে, চোখ দুটি যে তোমার দিকেই আটকে থাকবে, তোমার সখা তোমারই থাকবে, কথা দিলাম প্রিয়া, রোজ তোমার খোঁজ নেবো। তোমার মতন করে যে তোমায় আমি ভালোবাসা দিতেই পারিনা, যতই ভালোবাসি বোধ করি তোমার ভালোবাসার   জোরের কাছে তাহা নিতান্তই নিছক অনুভব হয়।  প্রিয়া কথা দাও, এই চারদিন তোমার চোখ হতে আমার অবর্তমানে এক বন্ধু জলকণা নির্গত হবে না। আমি যে তাহা সহিতে পারবো না।" আমি বলেছিলাম "কথা দিলাম, তোমার বুকে মাথা রেখেই আমি আমার অশ্রুধারা নির্গত করি হাল্কা অনুভব করবো। আর তুমি আমার অশ্রুধারা রোধ করে আমাকে তোমার বক্ষে আলিঙ্গন করে রাখবে।" তুমি শুধু তোমার চোখ দুটি কে শান্ত করে একখানি গভীর,উষ্ণ,মিষ্টি,কোমল,স্নিধ,চুম্বনের অঙ্কন করলে আমার মধ্য ললাটে। আমার অশ্রুধারা থমকে গেলো একনিমেশে। আমার গোটা পৃথিবী যেনো শান্ত হলো এক সুগভীর সুদীর্ঘ সুপ্ত ঝড়ের পরে। 
 
            
                           …………………. 
 
 
 Mahua Roy
 Dumdum, Kolkata -74

মন্তব্যসমূহ

নবপ্রভাত সম্মাননা ২০২৪

নবপ্রভাত সম্মাননা ২০২৪

জনপ্রিয় লেখা

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৬৭তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৪তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩১ এপ্রিল ২০২৪

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৬৬তম সংখ্যা ।। ভাদ্র ১৪৩০ আগস্ট ২০২৩