google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re গল্প ।। কুঞ্জনাথবাবুর নববর্ষ যাপন ।। ইন্দ্রনীল মন্ডল - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫

গল্প ।। কুঞ্জনাথবাবুর নববর্ষ যাপন ।। ইন্দ্রনীল মন্ডল

কুঞ্জনাথবাবুর নববর্ষ যাপন

ইন্দ্রনীল মন্ডল


        প্রৌঢ় কুঞ্জনাথবাবুর বাড়িতে আজ ভোর থেকেই সাজ সাজ রব। অন্যদিনের তুলনায় বেশ খানিক আগেই তিনি আজ শয্যা ত্যাগ করেছেন। বালকিগঞ্জের এক বর্ধিষ্ণু পরিবারের কর্তা হলেন এই কুঞ্জনাথ সাহা। তার গৃহের চারপাশ আজ আমের পল্লব, রঙিন শোলার কদমা, রংবেরঙের কাগজের নকশায় সেজে উঠেছে। সাজিয়েছে তারই পনেরো বছরের নাতনি এষা। সেই সাজে সাহায্য করেছে দশমবর্ষীয় নাতি ঐশীক। বাড়িতে ঢোকার মুখে বাগানের শুরুতে মাধবীলতায় মুড়ে থাকা যে তোরণটা রয়েছে তার চারপাশে ঝুলিয়ে দিয়েছে অনেকগুলো রঙিন তিনকোনা কাগজ। দক্ষিণা মলয় বাতাসে সেগুলো পৎপৎ করে উড়ছে। বাড়ির ইষ্টদেবতার ঘরের সামনেও নাতনি এঁকে দিয়েছে ভারী সুন্দর আলপনা। অনেক ভোর ভোর উঠে এইসব কাজ সেরে রেখেছে নাতনি এষা। 
       আজ কুঞ্জনাথবাবুর মন আনন্দে পরিপূর্ণ। আজ যে ১লা বৈশাখ, বাঙালির নববর্ষের দিন। নতুন ধানসহ মা লক্ষ্মীকে বরণ করার দিন, তার সঙ্গে সিদ্ধিদাতা গণেশ ঠাকুর তো আছেনই। অন্যান্য বাঙালির মত কুঞ্জনাথবাবুও মনে করেন যে, আজকে, বাংলা বছরের প্রথম দিন যদি ভালোভাবে, আনন্দময় পরিবেশে, শান্তিতে নির্বাহিত হয় তাহলে সারা বছর বাকি দিনগুলোও সেই ভাবেই নির্বাহিত হবে। তাই এদিনকে উৎসবে,আনন্দে বরণ করে নেয় বাঙালী। এটা বাঙালীর একটি সর্বজনীন লোকউৎসব। অতীতের সব ভুলত্রুটি ও ব্যর্থতার গ্লানি ভুলে নতুন করে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় উদযাপিত হয় নববর্ষ। ইষ্টদেবতাকে প্রণাম করে কুঞ্জনাথবাবু তার ঘরে গিয়ে বসলেন। নাতনি এষা যোগ দিতে গেছে নববর্ষের প্রভাতফেরীর অনুষ্ঠানে। অন্যান্য বছরের মতো এ বছরেও বালকিগঞ্জের প্রভাতফেরীর অনুষ্ঠানে সে গান গাইবে।
      দু-চারদিন আগে পর্যন্তও আকাশ বাতাসে ধ্বনিত হচ্ছিল গাজনের সুর। চৈত্রের দাবদাহে মানুষ খানিকটা চঞ্চল, অস্থির হয়ে পড়ছিল। পাড়ায় পাড়ায় সন্ন্যাস নিয়ে মাধুকরী করতে দেখা গিয়েছিল বেশ কয়েকজনকে। তাদের মুখে "বাবা তারকনাথের চরণে সেবা লাগে, মহাদেএএএএব" —- এই ধ্বনি শুনতে পেলেই কুঞ্জনাথবাবুর স্ত্রী, তার কর্ম সহচরি মালতিকে বলতেন- "যা তো, সন্ন্যাসীদের চাল ডাল আলু ইত্যাদি হব্যিষি দিয়ে আয়। কাঠফাটা রোদে সারাদিন কত কষ্ট করে ওদের ঐতিহ্যকে বজায় রাখতে। এটুকু ওদের প্রাপ্য,এতে গৃহস্থের কল্যাণই হয়। যা, তাড়াতাড়ি দিয়ে আয়।" চৈত্রের শেষ সংক্রান্তিতে গতকাল তিনিও সারাদিন 'নীলের' উপোস করে ছিলেন তার সংসারের,সন্তান, নাতি-নাতনির মঙ্গল কামনায়। কুঞ্জনাথবাবু গতকাল নাতি আর নাতনি, ওদেরকে নিয়ে চড়কের পুজো দেখাতে গেছিলেন। কীভাবে গাজন সন্ন্যাসীরা চড়ক গাছকে কেন্দ্র করে অনেক ওপরে উঠে চারদিকে ঘোরে আর প্রসাদ হিসাবে ঝোলা থেকে ফল ছুঁড়ে ছুঁড়ে ফেলে, উঁচু থেকে ঘুরতে ঘুরতে ঝাঁপ মারে তাই দেখাবার জন্য নাতি নাতনিকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন। আগের বছরেও ওরা দেখেছে কিন্তু এ বছরে আবার নতুন করে দেখতে চায়। নাতি ঐশীক দাদুকে জিজ্ঞাসা করেছিল– "আচ্ছা দাদু, ওরা এইভাবে কার পুজো করে?" কুঞ্জনাথবাবু জানান "এই উৎসবে শিব, নীল, মনসা, ধর্মঠাকুরের পুজো হয়। দেবতার প্রতি অবিচল ভক্তি ও নিষ্ঠা প্রদর্শনের জন্য গাজন সন্ন্যাসীরা ধারালো বঁটি, গাছের কাঁটার উপর ঝাঁপ দিয়ে 'ঝাপান খেলা' দেখায়। কিংবা অনেক সময় আবার পা'দুটো ওপরে, মাথা নিচের দিকে রেখে ঝুলে থাকে।" গঞ্জের শেষপ্রান্তে যে বুড়োশিবের মন্দিরটা আছে, তার পাশের মাঠে 'চড়কের মেলা' বসে। সেটাই আবার পরে 'বৈশাখী মেলা' হয়ে যায়। গতকাল নাতির বায়নায় মেলা থেকে নাতিকে সুন্দর দুটো খেলনা কিনে দিয়েছেন। নাতনি এষা কিনেছে কয়েকটা আধুনিক ডিজাইনের মাথার চুলে লাগাবার ক্লিপ।
        বৌমা শ্রীময়ীর হাতে করে দেওয়া সকালের চা-বিস্কুট খেয়েই নতুন পাঞ্জাবিটা গায়ে দিয়ে কুঞ্জনাথবাবু বাজারে যাবেন বলে তৈরি হয়ে নিলেন। পয়লা বৈশাখ বাঙ্গালীর জীবনে আনন্দ, উৎসবের দিন। এই দিন নতুন জামা কাপড় পরাটাই রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বৌমাও তাই বাড়ির সকলের জন্য 'চৈত্র সেল' থেকে চটকদার,ভালো অথচ বেশ সস্তায় নতুন জামা-কাপড় কিনে এনেছে। সেইরকম একটা নতুন পাঞ্জাবি গায়ে কুঞ্জুনাথবাবু বাড়ির সর্বক্ষণের ফাই-ফারমাস খাটার লোক নকুলকে সঙ্গে নিয়ে বাজারের দিকে চললেন। নকুলের গায়েও নতুন জামা। ছেলে আগেই ভোর ভোর চলে গেছে গঞ্জের শেষে বুড়োশিবের মন্দির লাগোয় যে কালীমন্দির আছে, সেখানে পুজো দিয়ে নতুন হালখাতা উদযাপনের জন্য। ওখান থেকে সরাসরি ছেলে চলে আসবে গঞ্জের বাজারে,যেখানে তাদের পারিবারিক ব্যবসা 'কাটা কাপড়'-এর দোকান আছে। পুরোহিত মশাইকে আগে থেকেই সব বলে রাখা আছে। দোকানের কর্মচারীরাও জোগার-যন্ত্র করে রাখবে। বাজার সেরে তিনিও যোগদান করবেন দোকানের হালখাতার অনুষ্ঠানে। বিকেলে বিভিন্ন খদ্দের ও অতিথিবর্গদের জন্য আছে খাওয়া-দাওয়া, নতুন বছরের ক্যালেন্ডার ও উপহার বিতরণ, নতুন খাতায় আবার নতুন করে আগামী বছরের জন্য হিসেব-নিকাশ শুরু করা, এইসব বিভিন্ন পর্ব।
       আজ বাড়িতেও বেশ জমিয়ে খাওয়া দাওয়া হবে। মেয়ে জামাইও আসবে। পাড়ার দুই-একজন প্রতিবেশী ও বন্ধু-বান্ধবকেও আজকে বাড়িতে নিমন্ত্রণ করেছেন। বাজারটা আজকে একটু ভারীই হবে।বাজারে হারানকে মাছের অর্ডার দেওয়াই ছিল। হারানের কাছ থেকে আড়াই কেজি ওজনের একটা গোটা চিতল মাছ কিনে নিলেন। তার গিন্নি চিতল মাছের 'মুইঠা' খুব ভালো রান্না করে। আর ছেলে-মেয়েরা, তিনি নিজেও চিতল মাছের পেটির তৈরি পদ খেতে খুবই ভালোবাসেন। বাজার আসার আগে গিন্নি বলে দিয়েছে– "বাজার থেকে পারলে বড় দেখে গলদা চিংড়ি এনো। আর ইলিশ মাছ তো বলেই রেখেছো, দেখে নিয়ে আসবে। বৌমা গলদা চিংড়ির 'মালাইকারি' খুবই ভালো রান্না করে। 'ইলিশ পাতুরি'ও ওই করবে। বাকিটা আমি দেখে নেব।" ফরমায়েশ মত কিনলেন দু-কেজি বেশ বড় বড় গলদা চিংড়ি, আর সোয়া-কেজি ওজনের দুটো ইলিশ। কালুমিয়াকে মাংসের কথা বলাই ছিল। সেখান থেকে কচি পাঁঠার মাংস কিনে নকুলকে দিয়ে বাড়ির দিকে সব রহনা করিয়ে তিনি নিজে চলে এলেন বাজারে, তাদের দোকানে। সেখানে ততক্ষণে পুজো শুরু হয়েছে। দোকানটা খুব সুন্দর করে সাজিয়েছে ছেলে। তার পরামর্শ মতন একটা বড় সামিয়ানা খাটানো হয়েছে দোকানের সামনের প্রশস্ত জায়গাটাতে। বিকেলে সেখানে অতিথিরা এসে বসবে, খাওয়া দাওয়া করবে, আমোদ আহ্লাদে মেতে উঠবে। আশপাশের আরও অন্যান্য দোকানেও দেখা যাচ্ছে হালখাতা অনুষ্ঠানের ছবি। শঙ্খধ্বনি, কাঁসর-ঘন্টার আওয়াজ, উলু-ধ্বনির শব্দে জায়গাটা পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। চারদিকে ধুপ-ধুনোর গন্ধে বেশ একটা সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে বাজারের এই এলাকাটাতে। লোকের হট্টগোল, হাসির শব্দ এই সব মিলে বাংলা বছরের প্রথম শুভ দিনটা বেশ জমে উঠেছে। এইসব অনুষ্ঠান শেষে জীতেন মোদকের দোকান থেকে মিষ্টি নিয়ে ক্লান্ত, গলদঘর্ম হয়ে তিনি আর ছেলে বাড়ি এসে পৌঁছলেন। এখনো তাদের জলখাবার খাওয়া হয়নি। বেলা অনেকটাই হয়ে গেছে, ঘড়ির কাঁটা সাড়ে দশটা ছাড়িয়েছে।
        বিশ্রাম নেওয়ার জন্য হাত-পা ধুয়ে কুঞ্জনাথবাবু এসে বসলেন তার ঘরের আরাম কেদারাটাতে। কিছু বাদেই মালতি এসে জলখাবার রেখে গেল। আজকের জলখাবারের থালায় রয়েছে বড় বড় ফুলকো লুচি, তার পছন্দের শুকনো শুকনো, ঝাল-ঝাল আলুর দম আর সুজির পায়েস। খেতে খেতে তার মন চলে যায় অতীতে। তখন নববর্ষ পালিত হতো একটু অন্যরকম ভাবে। এত ব্যাপক, জাঁকজমকপূর্ণ ছিল না। এই বালকিগঞ্জ তখন সদ্য গড়ে উঠছে। নতুন নতুন ইমারতে ভরে যাচ্ছে আশপাশের ফাঁকা জায়গাগুলো।
বৈশাখীর মেলা তখনো হত। সে মেলায় তেমন কিছু পাওয়া যেত না। মাটির জিনিস পত্র, খেলনা, বাঁশি, প্লাস্টিকের নানান জিনিসপত্র, এইসব থাকতো মেলায়। আর খাবারের জন্য থাকতো লালচে-বাদামি জিলিপি। কি স্বাদ! সেই জিলিপির,এখনো যেন মুখে লেগে আছে। 
        আগে পয়লা বৈশাখের এই দিনে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে 'হালখাতা' খোলা হতো। সে দিন প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় দেনা-পাওনার হিসাব আনুষ্ঠানিকভাবে হালনাগাদ করা হতো। অর্থাৎ আগের বছরের হিসাবের পাট চুকিয়ে নতুন করে হিসাবের খাতা শুরু করা হতো। হালখাতার দিনে দোকানিরা ক্রেতাদের মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়ন করে থাকতো। এত বছর পরে আজও কিন্তু এই প্রথাটা আরো বেশি জাঁকজমক ভাবে প্রচলিত রয়েছে, বিশেষ করে গ্রাম-গঞ্জের দোকানদাররা ক্রেতাদের এখনও পয়লা বৈশাখে মিষ্টি, নোনতা, ঠান্ডা পানীয়, আইসক্রিম ইত্যাদি দিয়ে আপ্যায়ন করে। তার সঙ্গে অনেকেই আবার বিভিন্ন রকমারি, রংবেরঙের আলো দিয়ে দোকানটাকে বা ব্যবসার ক্ষেত্রেটাকে সাজিয়ে তোলে। তার ছেলেও গত কয়েক বছর ধরে এই ভাবেই তাদের দোকানটাকে সাজাচ্ছে। নববর্ষের উদযাপন এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি উৎসবমুখর এবং ব্যাপক।
          এসব ভাবতে ভাবতেই খাওয়া প্রায় যখন শেষের পথে তখন নাতি ঐশীক দাদুর চারপাশে নতুন খেলনা নিয়ে খেলতে লাগলো। হঠাৎই জিজ্ঞেস করল – "দাদু আজকের দিনেই কেন পয়লা বৈশাখ মানানো হয়? দাদুর স্মৃতিতে যতটুকু মনে ছিল সেটাই তিনি নাতিকে বোঝানোর চেষ্টা করলেন। বললেন যে – "মোগল সম্রাট আকবর, সুষ্ঠুভাবে খাজনা আদায়ের লক্ষ্যে এক নতুন পঞ্জিকার প্রচলন করেন। এই পঞ্জিকাটার সনই বাংলা সন হিসেবে পরিচিত।" এসব শুনে ঐশীক বলল – "দাদু আরেকটু পরিষ্কার করে বলো। এসব কথা তো আমাদের ইতিহাস বইয়ে লেখা নেই।" কুঞ্জনাথ তখন আরো বলেন – "হিন্দুদের সৌর সন, মানে সূর্যের উপরে নির্ভর করে দিন তারিখ এবং আরবি হিজরি সন অর্থাৎ চাঁদের গতির ওপরে নির্ভর করে গণনা, এই দুয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে সম্পূর্ণ নতুন এই বাংলা সনের পঞ্জিকা তৈরি করেন। প্রথমে এই বাংলা সনের নামকরণ করা হয়েছিল 'ফসলি সন'। পরে কালের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এই 'ফসলি সন'ই 'বঙ্গাব্দ' বা 'বাংলা সন' হিসেবে পরিচিতি পেতে শুরু করে। পরে সম্রাট আকবর তার সভাজ্যোতিষীর পরামর্শে হিজরি ৯৬৩ সনকে বাংলা ৯৬৩ সন ধরে বাংলা সন গণনার নির্দেশ দেন।" একটু থেমে তিনি আবার বলতে থাকেন – "যদিও সম্রাট আকবরের সময় থেকে 'পয়লা বৈশাখ' উদযাপন শুরু হয়। তবে আকবরী আমল বা তার পরবর্তী সময়ে 'পয়লা বৈশাখ' উদযাপন এখনকার মতো ছিল না। তখনকার 'পয়লা বৈশাখ' পালন হত অন্যভাবে। যেমন, বছর শুরুর আগের দিনে, অর্থাৎ চৈত্র মাসের শেষ দিনের মধ্যেই সকল প্রজা বা ছোটখাটো মনসবদার, জমিদারকে সবরকমের খাজনা বা শুল্ক পরিশোধ করতে হতো। আর পরের দিন, অর্থাৎ 'পয়লা বৈশাখে' ভূমির মালিকরা, অর্থাৎ রাজা, বড় বড় জমিদাররা তাদের নিজেদের অঞ্চলের প্রজা ও অন্যান্য ব্যক্তিদের মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়ন করতো। খাজনা পরিশোধ করা উপলক্ষে বিভিন্ন উৎসবেরও আয়োজন করা হতো। তবে বাংলা নববর্ষের সূচনা হয়েছে বাঙালি কৃষকের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে কেন্দ্র করে। বাংলা নববর্ষের মূল উৎসই হলো কৃষক ও কৃষি।" জানো দাদুভাই, "আমার যখন তোমার মত বয়স ছিল, তখন কিন্তু এতসব আয়োজন হতো না। তবে মেলা বসতো।আর থাকত পুতুলনাচ, যাত্রাপালা এইসব। সে এক দারুন মজার জিনিস। সেসব তোমরা এখন আর দেখতে পাবে না। এখন তোমরা শহরতলীর বড় বড় সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখো। তখন এসব প্রায় এখানে ছিলই না। ওই মেলা কবে আসবে সেই নিয়ে উৎসুক হয়ে থাকতাম। আর পুতুলনাচ, যাত্রাপালা দেখে খুব আনন্দ পেতাম, মজা করতাম।"
            এসবের মধ্যেই বেলা অনেকটা গড়িয়ে গেছে। তিনি তার ঘরের টিভিটা একটু চালিয়ে বসলেন। এই সময়টা প্রত্যেক বছর টিভির বিভিন্ন চ্যানেলে নানা রকমের 'বৈশাখী আড্ডা'র আসর হয়ে থাকে। তারই একটা দেখতে থাকলেন। সেখানে খুব সুন্দর ভাবে একজন বিশিষ্ট ব্যক্তি গল্পের ছলে বাংলা নববর্ষের সেকাল ও একাল নিয়ে বলে যাচ্ছিলেন। তারই ফাঁকে ফাঁকে গান কবিতা ইত্যাদিও পরিবেশিত হচ্ছিল। কানে এলো—
"আজ নিখিলের আনন্দধারায় ধুইয়ে দাও,

মনের কোণের সব দীনতা মলিনতা ধুইয়ে দাও।

আমার পরান-বীণায় ঘুমিয়ে আছে অমৃতগান—---






 

1 টি মন্তব্য:

  1. আমার লেখাটি এইভাবে ডিজিটাল মাধ্যমে আপনাদের প্রকাশনার মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হওয়ায় আমি অত্যন্ত আনন্দিত ও আপ্লুত। এর জন্য আপনাদের জানাই অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

    উত্তরমুছুন