বাংলায় ভবিষ্যৎ
আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। প্রতিবারের মতোই আবৃত্তিকার রিঙ্কি চক্রবর্তীর আবৃত্তির অনুষ্ঠান আছে শহরের একটি সাংস্কৃতিক হলে।
রিঙ্কি স্টেজে উঠে সবাইকে নমস্কার ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের শুভ কামনা জানিয়ে কবি ভবানীপ্রসাদ মজুমদারের একটি কবিতা আবৃত্তি করা শুরু করলো।
"ছেলে আমার খুব সিরিয়াস কথায় কথায় হাসে না,
জানেন দাদা, আমার ছেলের, বাংলাটা ঠিক আসে না।"
আবৃত্তি শেষ হতেই পুরো হলরুম হাততালিতে ফেটে পড়লো। সবাই রিঙ্কির আবৃত্তির প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
রিঙ্কি স্টেজ থেকে নামতেই দেখা হয়ে গেল পুরোনো বান্ধবী চঞ্চলার সাথে। চঞ্চলাও এসেছে আজ আবৃত্তি করতেই। স্কুল লাইফে দুজনে একসাথে অনেক আবৃত্তি করেছে। সেই স্মৃতি রোমন্থন করতে করতেই চঞ্চলা হঠাৎ জিজ্ঞেস করলো,"তোর ছেলে কত বড় হয়েছে রে? ফেসবুকে মাঝেমধ্যে ছবি দেখি।"
"এই তো তিন বছর হলো। খুব দুষ্টু রে!"
"ছেলে তো! হবেই। তা স্কুলে ভর্তি করলি?"
"হ্যাঁ এই তো দুদিন আগেই করলাম।"
"বাহঃ! আমার ছেলের বয়স দুই। ওকেও দিতে হবে পরের বছর। কোন স্কুলে দিলি?"
"এবিসি পাব্লিক স্কুল।"
"এটা কোথায় রে?"
"আরে বাইপাসের পাশে।"
"ওহ হ্যাঁ নতুন খুলেছে শুনেছিলাম। ইংলিশ মিডিয়াম না? কোন বোর্ড?"
"হ্যাঁ ইংলিশ মিডিয়াম। সি.বি.এস.সি বোর্ড।"
"ভালো স্কুলটা?"
"হ্যাঁ ইন্টারন্যাশনাল তো।"
"তাই নাকি? বাহঃ! জানা থাকলো। ভালোই হলো।"
"শ্বশুরমশাই বলেছিলেন বাংলা মিডিয়ামে দিতে। উনি বাংলা লেখক তো তাই আর কি! কিন্তু বাংলা মিডিয়ামে কি এখন আর কোনো ভবিষ্যৎ আছে বল? আমাদের যুগ গেছে!"
"সেই! বাংলা ভাষার তো ঘরেই চর্চা হয়ে যায়। ইংলিশটাই আসল। তারসাথে বিদেশ পাঠাতে হলে বিদেশী ভাষাগুলোও শেখাতে হয়।"
"সেই! তুই কখন উঠবি স্টেজে?"
"এই তো ঝুমা দির পরে।"
"আচ্ছা অল দ্য বেস্ট।"
"থ্যাঙ্ক ইউ রে। ভালো থাকিস। এখন আসি।"
"হ্যাঁ রে আয়।"
======================
নামঃ স্বরূপা রায়
ঠিকানাঃ উত্তর ভারতনগর, ১০, বটুকেশ্বর দত্ত সরণি, পো- রবীন্দ্র সরণি, জেলা- দার্জিলিং, শিলিগুড়ি-৭৩৪০০৬