Featured Post

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

ছবি
  সূচিপত্র নিবন্ধ ।। মরিয়ম মির্জাখানি: এক অনন্য গণিতসূর্য ।। ... নিবন্ধ ।। নারী দিবসে যা ভাবা উচিত ।। বিশ্বনাথ পাল প্রবন্ধ ।। প্রাচীনকাল থেকে নারীরা অবহেলিত, বঞ্চিত,... নিবন্ধ ।। আমার চোখে আদর্শ নারী ।। জয়শ্রী বন্দ্... ফিচার।। এই মুহূর্তে বাংলা সাহিত্যে নারীদের লেখালেখ... আফ্রিকার লোককথা ।। করোটিকে বিয়ে করা অবাধ্য মেয়েটি ... ছোটগল্প ।। মানবী ।। ভুবনেশ্বর মন্ডল নিবন্ধ ।। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অন্যতম নারী মু... নিবন্ধ ।। প্রিয় মহিলা সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী ।। ... গল্প ।। উই ওয়ান্ট জাস্টিস ।। রবীন বসু প্রবন্ধ ।। নিপীড়িতা ।। শ্যামল হুদাতী ফিচার ।। রমণী রতন ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত প্রবন্ধ ।। নারী সমাজ : তখন-এখন ।। তপন মাইতি নিবন্ধ ।। বহমান কালের ধারায় নারী ।। দীপক পাল গল্প ।। আমার দুর্গা ।। অঞ্জনা গোড়িয়া (সাউ) গল্প ।। যোগ্য জবাব ।। সমীর কুমার দত্ত ছোটগল্প ।। আমি দুর্গাকে দেখেছি।। চন্দন দাশগুপ্ত গল্প ।। সম্পর্ক ।। গৌতম সমাজদার কবিতা।। নারী মানে ।। গোবিন্দ মোদক কবিতা।। নারী ।। সমর আচার্য্য ছড়া ।। নারী অসামান্যা ।। সৌমিত্র মজুমদার কবিতা ।। নারী দিবসে ।। বিবেকানন্দ নস্কর কবিতা ।। না...

গল্প // নন্দিনী পাল







 

শিরোনাম-অভিমান

                

শ্মশানে বাবার শরীরটা ছুঁয়ে বসে আছে শৈবাল। আর কিছুক্ষন পরে মানুষটা মুছে যাবে পৃথিবী থেকে। যে শরীরটাকে এতদিন বাবা বলে জেনে এসেছে সেই শরীরের সাথে তার সমস্ত রাগ, মান, অভিমান সবকিছু হারিয়ে যাবে চিরতরে। গঙ্গার জল বয়ে যাচ্ছে তিরতির করে। বৈকালিক শীতল হাওয়া স্পর্শ করতে পারে না চোখের নীচে জমে থাকা অশ্রুর শুকনো দাগ। চারপাশে সকলের ব্যস্ততা।কানাঘুষোয় ভেসে আসছে কথা। সবার অনুসন্ধিৎসু মন সাদা কাপড়ে মোড়া শরীরটাকে জরিপ করছে। তন্নতন্ন করে খুঁজে চলেছে কারন। শৈবাল কেও বিঁধে যাচ্ছে কৌতুহলী তীর। শৈবাল গুম হয়ে বসে আছে।তার ভিতরটা কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে একটাই প্রশ্ন-কেন বাবা কেন, এত বড় একটা পদক্ষেপ নিয়ে কেন আমাকে অপরাধী করে গেলে। অদূরে আর একটা মৃত শরীর ছুঁয়ে বসে আছে কারো সন্তান। চোখে তার অশ্রুধারা।শৈবালের মনে হয় কাঁদার জন্য অধিকার অর্জন করতে হয়। সেই অধিকার বাবা তার থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে চিরতরে। কাল সকাল থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত নিজেকে বোঝাতে চেষ্টা করেছে। কিন্তু সকলের প্রশ্নের জবাব দিতে না পেরে নিজেই ক্ষতবিক্ষত হয়েছে।
গতমাসে শৈবালের চাকরিটা গেল। লকডাউনে অনেকে হারাচ্ছিল চাকরি। শৈবাল তাই টেনশনে থাকত। চাকরি খুইয়ে সংসার চালাবে কিভাবে ভেবে পাচ্ছিল না। তার মধ্যে বাবার চিকিৎসার খরচ। ওষুধ আর অন্য সব মিলিয়ে একটা মোটা অঙ্ক। ধার দেনা করে চালিয়ে নেবে ভেবেছিল। স্ত্রীকে বলেছিল নতুন চাকরি না পাওয়া অবধি একটু সমঝে চলতে। অহেতুক খরচা যেন না হয়। বাবা সেদিন এসে বলেছিল চশমা যেন কিভাবে ভেঙে ফেলেছে। শৈবালের মেজাজ এমনিতেই খারাপ ছিল, তাই বেশ চিৎকার করে বলেছিল-রোজ রোজ চশমা ভাঙলে খরচা জোগাবার ক্ষমতা নেই। একে তো রোগ বাঁধিয়ে বসেছ, তোমার জন্য আমাকে এবার ভিক্ষে করতে হবে।
-আমার জন্য তুই ভিক্ষে করবি ,সে আমি মেনে নিতে পারব না টুকু।
তারপর কথা কাটাকাটি চেঁচামেচি, শৈবাল রাগ করে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গেছিল। স্ত্রী মিনতি ছেলেমেয়েরা যে যার কাজে ব্যস্ত। না খেয়ে দোর দিয়েছিল বাবা। শৈবাল ভেবেছিল মাথা ঠান্ডা হলে বাবা সবকিছু ভুলে যাবে। কিন্তু বাবা যে এরকম একটা সিদ্ধান্ত নেবে সে ভাবতেও পারেনি।
থানা পুলিশ পোষ্ট মর্টেম।কাজের খোঁজ করে বাড়িতে ফিরেছিল,পুলিশ তখন নিয়ে যাচ্ছিল বাবাকে। সাদা কাপড়ে মোড়া শরীরটাকে ছুঁতে চেয়েছিল। বাবার পা দুটো স্পর্শ করে ক্ষমা চাইতে চেয়েছিল।
গলার কাছে কান্না দলা পাকিয়ে আছে। মনে হচ্ছে ওই সন্তানের মত সেও বাবার বুকে মাথা রেখে একটু কেঁদে হাল্কা হয়। ছোটবেলায় বায়না করলে বাবা বকুনি দিত। অভিমান করে মুখ লুকিয়ে মায়ের আঁচলের ছায়ায় কাঁদত। কিন্তু বাবা যখন আদর করে কাছে ডেকে গায়ে হাত বোলাত, সেই স্নেহের স্পর্শে সে ভুলে যেত সব অভিমান। সত্যি সেও তো যায়নি বাবার কাছে। বাবা যখন না খেয়ে দোর দিয়েছে সেও তো নিজের ভালবাসা মাখা হাত দিয়ে বাবাকে স্পর্শ করে খেতে ডাকেনি। তাহলে বাবা একাজ করত না। সাদা কাপড়ে ঢাকা বাবাকে ছুঁতে পারে না শৈবাল। বাবা যেন তাদের মাঝে অভিমানের সাদা হিমশীতল পর্দা তুলে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছে চিরতরে।
আকাশে উড়ছে কালো ধোঁয়া। নশ্বর দেহের মান, অভিমান চিতার আগুনে ছাই হয়ে গেছে। নীল আকাশে মিশে যাবার আগে সেই ধোঁয়া হাতে স্পর্শ করে মাথায় ঠেকায় শৈবাল। মনে মনে বলে মাথায় হাত রেখে বাবা বল তুমি ক্ষমা করেছ আমায়।
Mrs. Nandini Pal
CEERI Colony, PILANI -333 031.
Rajasthan (INDIA).
Ph:9460515378
Email: nandinipal1975@rediffmail.com

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮১তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩১ নভেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৯তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮০তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩১ অক্টোবর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল