শরৎ
সাদা মেঘের লুকোচুরি
কাশ ফুলেরা দোলে,
নদীর বাঁকে শাপলা-শালুক
কে যেন ভাই তোলে?
সুদূরে ওই নৌকা বাঁধা
মুগ্ধ করে ভাটির গান,
মন ছুটে যায় ঐখানেতেই
হৃদয় করে আনছান।
ব-দ্বীপেরই বিশাল মাঠে
সবুজ ধান খিলখিলিয়ে হাসে,
দু'চোখেতে স্বপ্ন আমার
আনন্দেতে ভাসে।
রূপ মাধুরীর রঙমাখিয়ে
প্রকৃতি সাজে বধূর বেশে,
শরৎ এসে উঁকি দেয়
ষড় ঋতুর বাংলাদেশে।
রূপশ্রী
জোছনা রাতে চাঁদের ছায়াতলে
আমি বিছানা পেতেছি বাড়ির ছাদেতে,
শুধু তোমাকে খুঁজি এমন মধুর ক্ষণে
যদি ভালোবেসে পাশে পাই সেই আশাতে।
ওই আকাশে বুকে দেখা যায় শতশত তারা
জ্বলে আর নিভে কত ঝলকে ঝলকে,
ঝিঁঝি পোকা গান ধরে দূরে বিরহের সুরে
ঝোপঝাড়ে জোনাকিরা কথা বলে পলকে পলকে।
রঙধনুর দেশে চাঁদপরী আর মেঘ কুমারেরা
আনন্দে আর উল্লাসে খেলে লুকোচুরি,
কী যেন মায়াবী অপলক চাহনীতে
এখন থেকে ওখানে চাঁদপরী যায় যেন উড়ি।
যেভাবে তুমি তাকাও চাতক পাখির মতো
আমার দিকে চেয়ে চেয়ে,
প্রেমের পরসা সাজিয়ে ভিডিও কলে
নাম জানা কোন এক মায়াবী মেয়ে।
কত কপোত কপোতীরা বাসর সাজায়
এমন মধুর ক্ষণে মনে মনে গোপনে,
তুমি একবার মাথা রেখো আমার বুকে
রূপশ্রী এমন মধুর ক্ষণে।
স্বপ্নভঙ্গ
কল্পনাতে পাই যে তোকে
বাস্তবতে পাই না,
তোকে নিয়ে স্বপ্ন দেখি
সত্যি কেন হয় না।
স্বপ্নে তোকে জড়িয়ে ধরি
আঘাত খেয়ে দু'জন মরি,
হঠাত্ করে চমকে উঠি
তুই যে শুধু ঘুমের পরী।
ঘুমের মাঝে পাই যে তোকে
প্রেমের মাঝে পাই না,
তুই কেমন করে হবি তবে
আমার প্রিয় ময়না।
চোখ বুজিলেই দেখি তোকে
তুই কেন বুঝিস না,
তোকে কত ভালোবাসি
তুই কাছে আসিস না।
এ হৃদয় মাঝে থাকিস তুই
বলতে যেন পারি না,
একলা একলা শুমরে করি
শয়তে আর পারি না।
ছলনা
তুমি উড়ে এসে জুড়ে বসে ছিলে পাখি আমার পাশে
আমিও তোমাকে আপন ভেবেছিলাম ভালোবেসে,
সুখের একটা স্বপ্ন দেখেছিলাম ছোট্ট একটা ঘর বাঁধার
এক সাথে থাকার এক সাথে বাঁচার।
কিন্তু তুমি আবার উড়াল দিলে নীল আকাশে
কচি ডানা মেলে অন্য দেশে।
শুনেছি তোমরা ছোট ছোট ঘর বাঁধ বড় বড় ডালে
কিছুদিন মজা নেও আনন্দ খোঁজ রৌদ্র বৃষ্টির জলে,
প্রজাপতির মতো ফুরফুর করে উড়ে
রথের মেলায় ঘুরে ঘুরে।
আরআমি তোমার প্রেমে দেবদাস হয়ে পথেপথে ঘুরি ওরে
মন বুঝে না রে মন বুঝে না রে।
নষ্টানারী
কোন মৃত্তিকায় তৈরী তুমি
এতো দম্ভ তোমার কিসে,
দুই দিনের এই রুপের বড়াই
করছো ক্ষণিক হেসে।
বৈশ্বিক উষ্ণতার শরীর তোমার
ছড়াও নগ্ন রুপের বিস্ফোরণ,
জাত ধর্মের মাথা খেয়ে
সুশীলসমাজ করছে তোমায় বরণ।
তোমার মগ্ন হাতের মিষ্টি ছোঁয়ায়
জোছনা রাত্রিতে উঠে ফগুনের চাঁদ,
তোমার মুখশ্রীর একঝলক হাসিতে
আছে যেন অমৃত সুরার স্বাদ।
রুপালী ইলিশের মতো তোমার যৌবন
সোনালী রৌদ্রেতে চিকিমিকি করে,
তরুণ শ্রেণী প্রেমের পসরা সাজিয়ে
ভ্রোমর বেশে জ্বলেপুড়ে মরে।
তুমি আঁধার রাতের রক্ষসী রানী
দিনের বেলায় রুপসী ময়ূরী,
তোমাকে চিনিছি হে নারী
তুমি এই পৃথিবীতে শত রহস্যময়ী।
ও আমার পাখি
ভালোবেসে কাছে থেকে
তোমাকে যতবার ডাকি
বারবার দূরে যাও
ও আমার পাখি।।
কী ছিলো অপরাধ
ভালোবেসে তোমায়
কাছে এসে বারবার
কাঁদিয়ে য়াও আমায়।।
ভালোবাসা নয়কো
জানি কোন অপরাধ
তবু কেন বিনা দোষে
দিলে আমায় বিষের আঘাত।।
ভালোবেসে কাছে থেকে
তোমাকে যতবার ডাকি
বারবার দূরে যাও
ও আমার পাখি।।
মাধুরী
তোমার মুখটি দেখেছি আমি
এক জোছনা মুখোরীত উজ্জ্বল নোভাতে,
তুমি হাতে হাত রেখেছিলে স্বপ্নে
হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে গেল চমকে প্রভাতে।
পাখির কলকালরির মতো তোমার কণ্ঠধ্বনি
শুধু এসে দু'কানে পড়ে,
আমি উঠিউঠি ভেবেও উঠতে পারি না
দু'চোখে শুধু দুষ্টুকল্পনা ঘোরে ফিরে।
অবশেষে তুমি একাকী পালিয়ে গেলে
দিনের আলোয় লজ্জা পেয়ে,
তোমার দীঘলকালো চুলগুলো পড়ছিলো
আমার চোখে মুখের পর চেয়ে চেয়ে ।
ও যেনো ছিলো এক নীলকণ্ঠ পাখি
খিলখিল করে হেসে চলে গেল মাধুরী,
মুখ তার চাঁদের মতো শিল্পীর আঁকা ছবি
ইচ্ছে করে ভলোবাসার সুতোয় ধরি।
======০০০======
বিচিত্র কুমার
দুপচাঁচিয়া,বগুড়া,বাংলাদেশ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন