google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re ছোটগল্প ।। উজ্জীবিত উজ্জয়িনী ।। প্রদীপ দে - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

শুক্রবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১

ছোটগল্প ।। উজ্জীবিত উজ্জয়িনী ।। প্রদীপ দে



শিপ্রা নদীর ধারে গিয়ে উজ্জয়িনী নগরীকে চিনতে আমার খানিকটা ভুল হয়েছিল। বিখ্যাত মহাকাল মন্দির ছুঁয়ে নদীর ধারে গিয়ে বসে আছি। কত কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। এককালের ভারতের রাজধানী মানে দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত মৌযের রাজধানী যা বিখ্যাত প্রাচীর বলয়ে সুপ্রসিদ্ধ।  এক সময়ে মধ্যপ্রদেশের এই রাজধানি শহরে জ্যোতিষশাস্ত্র নিয়ে কত গবেষণাই না হয়েছে।  বলা যায় জ্যোতিষশাস্ত্রের পীঠস্থান এটা। সেই নগরী  আজ বুঝিবা তার পুরানো ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলেছে।বর্তমানে শুধুমাত্র এক মিউনিসিপাল সিটি হিসেবেই তার পরিমার্জন।   ভাবছি আর যেন ডুবে যাচ্ছি অতলে। যার কোন কূলকিনারা নেই। অথৈ জলে অবগাহন করছি …

--  আপনি কি বাঙালি?

চমকে উঠলাম। চমকে ওঠারই কথা! এক্কেবারে খাঁটি বাংলা ভাষা তাও এক নারী কন্ঠে।
আদ্যোপান্ত গেরুয়া শাড়িতে মুড়িয়ে ঘোঙটা দিয়ে আমার সম্মুখে দন্ডায়মান এক নারী মূর্তি। আমি চোখ মেলে তার লালচে মুখমন্ডলের শোভা অবলোকন করে বড়ই মুগ্ধ হলাম। শান্ত শীতল অথচ তেজস্বী এক জ্যোতির্ময়ী শক্তি আমায় প্রশ্ন করেছেন।

--  হ্যাঁ  আমি বাঙালি। আর আপনি?

--  না আমি মারাঠি। কিন্তু বাঙলা ভাষা আমি ভালো জানি। কারন আমার শ্বশুরবাড়ি ছিল বাংলাদেশে। পরে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা হন আমার স্বামীর পরিবার। আমি ভারত ঘুরে বাংলাদেশ আবার বাংলাদেশ থেকে ফেরত হয়ে পশ্চিমবঙ্গে। ফলে বাংলা আমার বড় প্রিয় ভাষা।

-- তা হলে আপনি এখন পশ্চিমবঙ্গেই থাকেন।  মানে কোথায়?

--  না না আমি আর ওখানে থাকি না।আমার স্বামী গত হওয়ার পর থেকে আমি এই উজ্জনবাসী।
মহিলা হেসে ফেলেলেন। কথাগুলো বলে হয়তো আমি বেশি আশা করে ফেলেছিলাম ওনার বর্তমান পরিস্থিতি সম্বন্ধে।

উনি বুঝে ফেলেছেন আমার অবস্থানটা তাই সহজ করে দিলেন, -- না না লজ্জার কিছু নেই। এটাই স্বাভাবিক।

আমার দিকে খানিক চেয়ে রইলেন উনি, -- 
--  আপনাকে এত বিমর্ষ লাগছে কেন?

--  না সেরকম কিছু না … 

--  এড়িয়ে কোন লাভ নেই আপনার কপাল কিন্তু অন্য কথা বলছে। আমি কিন্তু পুরোটাই দেখতে পারছি।

--  আশ্চর্য?

--  আপনি বাড়ি ফিরে যান।  সব ফিরিয়ে পাবেন। অযথা সময় অপব্যয় করবেন না। সব সময়ে ধৈর্য ধরে অপেক্ষায় থাকবেন অযাচিত মনকে কষ্ট দেবেন না -- এই আমার উপদেশ।

মোহাবিষ্ট হয়ে পড়েছিলাম আমি। চোখ খুলে মহিলাটিকে আর দেখতে পাইনি, দেখেছিলাম শিপ্রা নদীকে।

দুর থেকেই মহাকাল মন্দিরের উদ্দেশ্যে প্রনাম জানিয়েছিলাম, যাওয়ার সময় পাইনি। তড়িঘড়ি বাড়ির উদ্দেশ্যে পাড়ি দিয়েছিলাম।

বাড়িতে ফিরেই দেখেছিলাম রত্নাকে। ও ফিরে এসেছে আর আমার জন্যই অপেক্ষা করছিল। আমি আঙুল চালিয়ে চুলগুলো কপালের উপর থেকে তুলে দিলাম।
 
--------------------------



প্রদীপ কুমার দে
বিরাটী আবাসন
এল আই জি -৯
এম বি রোড
নিমতা
কোলকাতা -৭০০০৪৯



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন