বহুদিন পর তিথিকে দেখে অনাথ বাবু খুশি হলেন৷ কাছাকাছি আসতেই একগাল হেসে বললেন, …...কেমন আছ তিথি?
তিথি চমকে ওঠে... কেমন আর থাকবো স্যার? আপনিই তো আমার সর্বনাশ করে দিয়েছেন !
অনাথবাবু অবাক হয়ে প্রশ্ন করেন,... আমি!?
হ্যাঁ, আপনি ৷ প্রথম যেদিন আমাকে গীতবিতান উপহার দিয়েছিলেন সেই দিন !
অনাথবাবু স্মরণ করেন আজ থেকে ষোল বছর আগে মফস্বলের সেই কলেজের কথা ৷ তিনি তখন সদ্য অধ্যাপকের চাকরী পাওয়া এক যুবক৷ তার চারপাশে ভিড় করে থাকা এক ঝাঁক তরুণ তরুণী ! সাহিত্যের অমোঘ টানে স্যারের সঙ্গে তাদের নিবিড় সম্পর্ক ৷ সেই সূত্রে তিথিকে পাওয়া ৷ আর তাকে গীতবিতান উপহার দেওয়া ৷ অনাথ বাবুর স্মৃতি রোমন্থনের মাঝখানে তিথি বলে ওঠে,
…... সেই গীতবিতান ফিরত দিতে এসেছি স্যার ৷ বারো বছর আগে ধুসর হয়ে যাওয়া এক গীতবিতান তিথি ব্যাগ থেকে বার করে অনাথবাবুকে দিতে যায় ৷ তার বাড়ানো হাতটা সযত্নে ধরে অনাথবাবু বলে ওঠেন,
…..আচ্ছা তিথি, তোমার সর্বনাশের সংশোধন কি করা যায়না ?
…. এ সংশোধন করতে গিয়ে আপনার বাড়িতে আরো একজনের সর্বনাশ করবেন কেন স্যার? সর্বনাশ সংশোধন সর্বনাশকে আরো বাড়িয়ে তোলে ! আপনি কি তা জানেন না?
তার প্রিয় তিথির কাছ থেকে এমন কৈফিয়ৎ সুলভ প্রশ্নে অনাথবাবু হেসে ফেলেন,... গীতবিতান আমার কাছে গীতার মতো, আমার কাছে ধর্মের মতো ! যাকে আমি আমার ধর্ম সমর্পন করেছি তাকে আমি কিভাবে ভুলি বলো ?
…. তিথি অবাক হয়ে অনাথ বাবুর মুখের দিকে তাকিয়ে বিস্ময়ে বলে ওঠে… স্যার!
…. চলো তিথি অনেকটা সময় পার হয়ে গেছে, বেলাশেষের সূর্য পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়েছে ৷ এখুনি গৃহে না ফিরলে আঁধার নেমে আসবে !
... তিথি অনাথবাবুর হাতটা শক্ত করে ধরে ৷ তারপর কলেজ ক্যাম্পাসের নির্জনে ঝরে পড়া কৃষ্ণচুড়া মাড়িয়ে, বসন্তের শেষ কটা দিন একসাথে থাকার শপথ নিয়ে এগিয়ে চলে ৷
--------------০০-------------
নাম-মোয়াল্লেম নাইয়া
গ্রাম+পোষ্ট- ইমামদ্দীপুর
থানা-ঢোলাহাট
জেলা-দক্ষিণ২৪ পরগনা
পিন-৭৪৩৩৯৯
ফোন নং-৯৯৩৩১৯৫৭৫২
-------০০------
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন