google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re নিবন্ধ ।। প্রসঙ্গ : লেখক কবি ।। প্রদীপ কুমার দে - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

শনিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৪

নিবন্ধ ।। প্রসঙ্গ : লেখক কবি ।। প্রদীপ কুমার দে



প্রসঙ্গ : লেখক কবি

প্রদীপ কুমার দে


অনেকদিন ধরেই ভাবছি এই ব্যাপারে কিছু লিখি। ইদানীং অনেক লেখক কবি তাদের লেখার কাজে নিয়োজিত আছেন। ফেসবুকের কল্যানে তার একটা বড় অংশ জুড়ে বিরাজমান সবাই। এর বাইরেও অনেকেই বৃহত্তর জগতে কাজ করে চলেছেন। ভালো খারাপ এই প্রসঙ্গে যাচ্ছি না। কিন্তু অনেকেই দেখি ফেসবুকে তাদের অভিমত জানিয়ে লেখেন বর্তমানে সাহিত্য বা কাব্যজগৎ বুঝিবা রসাতলে তলিয়ে গেল। কচিকাঁচারা ফেসবুককে তার মত করে ব্যবহার করতেই পারে, অনেকেই তো বিভিন্ন পদ্ধতি প্রয়োগ করে এই ফেসবুককে, তাতে অন্যের কি আসে যায়? আর লেখক কবিরা তাদের মত ভাব( হয়তোবা বা কাঁচা) প্রকাশ করলেই কবিতার দফারাফা হয়ে যায়?

আমি তো বর্তমান নানাবিধ নামী পত্রিকা পড়ে দেখেছি নানান পুরস্কারে ভূষিত নামী গুনীজনের লেখা। মনে হয় না যে বিরাট কিছু পেলাম, অতি সাধারণ সে সব লেখা। সেগুলোর  অধিকাংশই খারাপ নয়, তবে বড় পত্রিকার মানদণ্ডে অতীব নিন্মমানের। সাহিত্য জগতে চিরকালই এমনই ঘটে, মনে পড়ে নামী লেখকের নামেই পত্রিকা ফাটে। 'ফেলো কড়ি মাখো তেল' আবার বর্তমান সমাজে বহুল প্রচলিত এক ফর্মূলা হয়ে যায়নি তো?

শেষে বলি এদের মধ্যে থেকে যারা সত্যি লেখা বা সাহিত্যকে ভালোবাসেন তারা লেগে থাকুন, পড়াশুনো করে বিশ্বের আধু‌নিক সাহিত্যকে ধরার চেষ্টা করুন সাফল্য আসবেই তবে মনে রাখবেন কারা আপনাকে গুরুত্ব দিল বা না দিল তাতে লেখক বা কবিজীবনে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে না। ফুল ফুঁটলে তার গন্ধ বেড়োবেই। কবি জীবনানন্দ দাস, কবি বিনয় মজুমদার প্রমুখদের  জীবনে উৎসাহিত হয়ে তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলি এ লেখা হয়তোবা সকলের জন্য নয় ...
কারণ সকলে এর মান্যতা দেবে না।
আমার খুব ঘনিষ্ঠ কিছু উজ্জীবিত কবি লেখক বন্ধুকে দেখি, যাদের লেখার মান অনেক উঁচুস্তরের কিন্তু উন্মাদনার জোয়ারে গা ভাসিয়ে দিনের পর দিন হাজারো গ্রুপ বা সংস্থার তাৎক্ষণিক উৎসবে দিনের পর দিন নিজেকে জাহির করে নানান ছবি পোস্ট করতেই ব্যস্ত। 

গালভরা হাসি, মুখভরা তৃপ্তির কি বাহার!
ধরে নিলাম কয়েক হাজার গুনগ্রাহী কবিকে চিনে গেল তাও তাদের তথাকথিত তাঁবেদাররাই।
কিন্তু কবি কি পেল?
সাময়িক উত্তেজনা?
তার জন্য এত প্রচার?
কবি কি সর্বজনীন হলো?
বিশ্বজনীন তো দূরের কথা!

অথচ তার লেখায় ছিল বড় সম্ভাবনা। সাহিত্যের আধুনিক জগতে প্রবেশ না করে লেখালেখির কাঁটাছেঁড়া না করেই সহজ পদ্ধতি অবলম্বন করে এত সহজে কি বাজিমাত করা যায়?
ফিরে দেখুন, সারাজীবন সাধনার ফল মৃত্যুর পর প্রচার পেয়েছিলেন যাঁরা, তাদের জীবন। 
জীবন দিয়ে সাধনা চাই, প্রকাশ নয় …
সুগন্ধের বহিঃপ্রকাশ কিন্তু অবশ্যম্ভাবী!
এইসব পোস্ট অনেকেই পছন্দ করে না কিন্তু আমি জানি আমার দেখা আর উপলব্ধ অভিজ্ঞতা অনেককেই একবার ভাবাবে।

দেশের সাহিত্য শিল্পকলা এই বিষয়গুলো শুধুমাত্র ব্যক্তিগত উদ্যোগে চুড়ান্ত রূপরেখা পায় না, বিষয়টিতে সরকারের দৃষ্টিনিক্ষেপ  এবং এক সুষ্ঠ পরিকল্পনার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। যদিও সব ব্যবস্থাই অটুট, অর্থবরাদ্দও আছে। কিন্তু তা কতিপয় গুনীদের (?) ঘিরেই আবদ্ধ।

কিশোর কিশোরী যারা এই বিষয় নিয়ে কাজ করে তাদের জন্য কোন পরিকল্পনা থাকে না। যারা নিজেদের নাম সরকারি খাতায় নথিভুক্ত করতে পারেনি অথচ অক্লান্ত পরিশ্রমে শিল্পের নানান দিকে কাজ করে চলেছেন সে সাহিত্যিক হোক অথবা কবি অথবা শিল্পী অথবা অভিনেতা অথবা পরিচালক, খোঁজ নিলে দেখা যাবে তারা বিনিময়ে কিছুই পায় না। অনেকে খাদ্যানুসন্ধানে এত ব্যস্ত  হয়ে পড়ে যে তাদের শিল্পস্বত্বা অনেক সময় লোপ পেয়ে যায়। বাহ্যিক পরিবেশ তাকে নিয়ে কটুক্তি ও করতে ছাড়ে না, স্বাভাবিকভাবেই সাধারণের মনে এই প্রশ্ন আসবেই। অধিকাংশ শিল্পীই কিন্তু সব মেনেই তার স্বত্বা ত্যাগ করতে বিমুখই থাকে।

শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতি দেশকে এক অন্যমাত্রায় উন্নত করে এটা সবাই জানে। কিন্তু সর্বাপেক্ষা সুস্থ কোন পরিকল্পনা আমদের এই দেশেে বুঝিবা একেবারেই অসম্ভব। 

বহুদিন আগে একজন সাহিত্যিক দুঃখ করে জানিয়েছিলেন তারা এ বিষয়ে অনেক প্রচেষ্টা নিয়েছিলেন, কিন্তু শেষভাগে কার্যতঃ তা বিফলে মাথা কুটে মরে।

-------


PRADIP KUMAR DEY
Birati Housing Estate
LIG - 9
M.B.ROAD. NIMTA
KOLKATA - 700 049


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন