google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re নিবন্ধ ।। আমার নববর্ষ ।। সুবীর ঘোষ - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

শনিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৪

নিবন্ধ ।। আমার নববর্ষ ।। সুবীর ঘোষ



আমার নববর্ষ

 সুবীর ঘোষ

 

 

 

নববর্ষ বাঙালির নিজস্ব অনুষ্ঠান। এটি মূলত একটি সামাজিক অনুষ্ঠান। যদিও বাড়িতে বা দোকানে সমৃদ্ধি কামনায় সিদ্ধিদাতা গণেশ ও লক্ষ্মীর পুজো হয়ে থাকে। যখন ছোটো ছিলাম নববর্ষের সন্ধেতে চেনা দোকানে দোকানে ঘুরে আসতাম বড়দের সঙ্গে। বড়রা হালখাতা সংক্রান্ত ব্যাপারগুলি সারতেন, আমাদের আগ্রহ থাকত ঠান্ডা সরবতের গ্লাসে বা লাড্ডু মিঠাই ভরা প্লেটের দিকে। চৈত্র সেলে কাপড়জামা কেনা বাঙালির খুব পুরোনো অভ্যেস। আমরা চৈত্র সেলে কেনা জামা পরে নববর্ষের সন্ধেতে ঘুরতে যেতামওই সময়টা জুড়ে আমাদের আমোদ আহ্লাদের সীমা ছিল না। চড়ক গাজনের মেলা সবই তো গায়ে গায়ে। বাংলা ক্যালেন্ডারের দিকেও আমাদের নজর থাকত। পাতা জোড়া দেব দেবীর ছবি আর তার নীচে তারিখের জায়গাগুলো থেকে আমরা প্রথমেই খুঁজে বের করতাম সে বছর দুর্গাপুজো কবে বা ভাইফোঁটা কখন পড়েছে।

 

যখন একটু বড় হলাম আর লেখালেখি করতাম তখন  হালখাতার মিষ্টি খেতে যেতে লজ্জা করত। তখন নজর ঘুরে গেল নববর্ষে প্রকাশিত পত্র পত্রিকার দিকে। বহুল প্রচারিত দেশ পত্রিকায় এ সময় সাহিত্য-সংখ্যা বেরোত এবং তার রচনাগুলি হত অত্যন্ত সমৃদ্ধ। কলেজজীবনে সাহিত্যসংখ্যার লেখাগুলি আমাদের সাহিত্যপ্রেমী বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে খুব আলোচিত হত। নববর্ষ উপলক্ষ্যে আমরা কলেজ স্ট্রিট থেকে ছাড়ে বই কিনতাম।

 

আমি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম। প্রতি বছর আমাদের গ্রীষ্মের ছুটি নির্দিষ্ট সময়ে হত --- ১ মে থেকে ৩০ জুন, ঠিক দু'মাসরবীন্দ্রজয়ন্তী এই ছুটির ভিতর পড়ে যেত বলে আমরা রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন করতাম নববর্ষের দিনেই।

 

যখন পেশাগত জীবনে প্রবেশ করলাম তখন আমাদের সংস্থার আবাসনগুলিতে দেখতাম নববর্ষ মানেই জমিয়ে খাওয়াদাওয়া। কারোর বাড়িতে পোলাও মাংস তো কারোর বাড়িতে গলদা চিংড়ি চিতল পাবদা ইত্যাদি ২-৩ রকমের মাছের পদ। কাঁচা আমের চাটনি তো আছেই।

 

একটা সময় একটি স্থানীয় খবরের কাগজ আমাকে বিশেষ অনুষ্ঠানের ওপর লিখতে বলত। যেমন নববর্ষ বা দুর্গাপুজো বা দীপাবলি। একবার আমি "নববর্ষের নিজস্বতা"  নাম দিয়ে একটি প্রতিবেদন লিখেছিলাম। আমার মনে হয় পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিরা  নববর্ষের অনুষ্ঠানকে তাদের নিজস্ব অনুষ্ঠানে পরিণত করতে পারেননি, যেমন পেরেছেন বাংলাদেশের বাঙালিরা। প্রতিটি জাতি বা প্রদেশের মানুষদের তাদের এক একটি নিজস্ব উৎসব থাকা প্রয়োজন।

 

নববর্ষের নতুন সূর্য ওঠার  আগের সন্ধেবেলায় একবার একটি কবিতা লিখেছিলাম তার কয়েকটা লাইন এখানে উদ্ধৃত করে এ লেখা শেষ করি

বছরের শেষ সূর্য

চলে যাচ্ছে কালের গভীরে ।

ভিড়ের ভিতর থেকে

কাল আবার খুঁজে নেব

তোমার নিঃশ্বাস ।

 

_______________________

 

 


সুবীর ঘোষ 

৩০১ আশ্রয়  অ্যাপার্টমেন্ট 

গ্রুপ হাউসিং , বিধাননগর 

দুর্গাপুর –৭১৩২১২ 


 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন