google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re গল্প ।। হালখাতা ।। মধুরিমা ব্যানার্জী - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

শনিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৪

গল্প ।। হালখাতা ।। মধুরিমা ব্যানার্জী


হালখাতা 

মধুরিমা ব্যানার্জী


জীবন নদীর কঠিন নাও তে ভর করে এগোচ্ছে অজিত। এভাবে আর কতদিন? সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায়। শহরের কাজটা চলে গেছে এই কথাটা বলতেও কষ্ট হয়। অজিত বৌদির শুকনো মুখ দেখে ভাবে কি করে বলে শহর তার সহ্য হয়না কেন? বাউন্ডুলে অজিতের কোনো কাজ ই যে বেশিদিন টেকেনা এই কথা সকলের জানা। এবার অজিত চেষ্টা করেছিল যাতে কাজটা তার টিকে যায়। এবার সে ফাঁকি দেয়নি বৌদি ছাড়া এই কথা আদৌ কেউ বিশ্বাস করবে? সবাই বৌদিকে অপবাদ দেয় তার আস্কারা তেই অজিত এমন হয়। যাক সে সব কথা। মন্দ ভালো দিন মিলিয়ে জীবনের অধ্যায় অজিত শহরে কাজ করতো এক নাম কোম্পানি এর পিয়ন হিসাবে। দাদা সেই যে শহরে গিয়েছিলো আর ফেরেনি বৌদি পথচেয়ে বসে থাকতো। অজিত ভাবতো শহরে গেলেই দাদাকে পাবে অভিজ্ঞতা কম থাকলে যা হয়। কাজ কর্ম আর সময় পেরিয়ে বিজ্ঞ হয়ে অজিত বুঝলো এত বড়ো শহরে দাদাকে খোঁজা খুব কঠিন। দিনগুলো ভালোই কেটে যেত যদি না দাদা তার অফিসে আসতো। দাদা এসেছিলো অজিত এর বস এর চেম্বার টাতে। অজিত পরিষ্কার করছিলো। দাদাকে দেখে ব্যস্ত হয়ে অজিত এগিয়ে যায়। অজিত কে না দেখার ভান করে দাদা। পরে বস এর থেকে জেনেছিলো উনি অনেকবড়ো কোম্পানির মালিকের জামাই সব ভার এখন ওনার অজিত এর পা কেঁপে যায়। পরে অবশ্য খোঁজ নিয়ে জেনেছিলো সব সত্যি সেই থেকে শহরে ঘেন্না অজিতের। সবাই অনেক জিজ্ঞাসা করলেও অজিত কারণ বলেনি। বৌদি জিজ্ঞাসা করেনি যদিও। কাল নববর্ষ বৌদিকে সব কথা বলবে অজিত। মানুষটা মিথ্যে সিঁদুর দিয়ে কদিন ঠকবে আর?? ঠিক কতদিন.. কাল হালখাতা পুরোনো হিসাব মিটে যাক চোখ ভিজে যায় অজিতের। বৌদি মায়ের মতন ভাবে কি তার ভবিষ্যৎ? পরদিন অজিত মুখ খুলে বৌদির কাছে যায় ছাদে আচার খাচ্ছিলো বৌদি। বৌদি আজকাল খুব আচার খায়। আগে পছন্দ করতো না। ভনিতা না করে অজিত সহজ ভাবে কথা বলতে যায় গলা থেকে শব্দ বেরোয় না। বৌদি অজিত কে আচার দিয়ে উদাসী হয়ে যায়। অজিত বলে বৌদি দাদা.... বৌদি বলে ওঠে ঠাকুরপো ওসব পুরোনো হিসাব যে বিয়ে করে ঘর ভুলেছে তাকে নতুন বছরে টেনে লাভ কি? অজিত আঁতকে ওঠে তুমি জানো??? বৌদি বলে শহরে দুটো চারটে বন্ধু আমারো ছিলো কানে এসে গেলো। দুয়ে দুয়ে চার হলো তুমিও চাকরি ছেড়ে এলে। অজিত ঘামছে বৌদি বলছে তোমার শরীরে রক্ত মাংস আছে তোমার দাদার নেই। তাই পুরোনো হিসাব মিটিয়ে হালখাতায় মজেছি। পেটের উপর হাত বুলায় বৌদি অজিত বোঝে বৌদি অন্তসত্ত্বা। বৌদি বলে জীবন তো হালখাতার নাটক বাড়িতে তাই নাটক করি। তখন তোমার দাদার বৌ আমি। আর এই একলা ছাদ টা আমার সবটা একার আর এখন এই হালখাতার... অজিত ফ্যালফ্যাল করে ছাদ দেখে। বৌদিকে আগে এত পরিণত লাগেনি।।
    


মধুরিমা ব্যানার্জী 
ভাটরাপল্লি, পোস্ট নবপল্লি 
থানা বারাসাত জেলা উত্তর ২৪ পরগনা 
পিন ৭০০১২৬

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন