প্রসঙ্গ: প্রতিবাদ ও আন্দোলন
রতন বসাক
একটা ছোট্ট পিঁপড়ে থেকে বিশাল বড় একটা হাতি কিংবা গরিব নিরক্ষর মানুষ থেকে জ্ঞানী ও অগাধ ধনসম্পত্তির অধিকারী মানুষ প্রত্যেককেই স্বাধীন থাকতে চায়। কোন সময়ই পরাধীন হয়ে অন্যের ইশারায় চলতে চায় না। স্বৈরাচারী শাসনও কোন সময় মানুষ পছন্দ করেন না। স্বাধীন অর্থাৎ স্বাধীনতার মূল্য অনেক অনেক বেশি। কম খেয়েও প্রাণী বাঁচতে পারে কিন্তু স্বাধীনতা ছাড়া কোন সময় সুখ ও শান্তিতে বাঁচতে পারে না। এমনকি গাছ লতাপাতা প্রত্যেকেই স্বাধীনভাবে বেড়ে উঠতে চায়।
একজন মানুষ যে স্থানে কিংবা যে দেশে বসবাস করে, সেখানে সে নিজের ইচ্ছা মতো কথা বলা ও চলাফেরা যাতে করতে পারে সেটাই চায়। কী খাবে, কী পরবে কিংবা কীভাবে তাঁর জীবন অতিবাহিত করবে, তার জন্য সে অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হতে চায় না। দেশের সর্বক্ষেত্রে সবাই যাতে, সমান ভাবে সুযোগ পায় সেটাও চায়। নিজের ইচ্ছায় যখন সে কারো দ্বারা বাধা পায় অর্থাৎ পরাধীন হয়ে পড়ে। তখন সে মুক্ত হয়ে স্বাধীন হতে চায় আর সে একদিন বিদ্রোহ ঘোষণা করে আন্দোলন শুরু করে দেয়।
পরাধীন মানুষের সংখ্যা যখন ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ও স্বৈরাচারী শাসকের অত্যাচার যখন বাড়ে। ঠিক তখন প্রতিবাদ ও স্বাধীন হবার আন্দোলনও বিশাল বড় হয়ে যায়। দেশের প্রচলিত আইন অমান্য করতে বাধ্য হয়। আন্দোলনের তীব্রতা ধীরে ধীরে ধ্বংসাত্মক রূপে পরিণত হয়। পরাধীন মানুষের বিশাল বড় সংখ্যা দেশের ধন-সম্পত্তি ধীরে ধীরে নষ্ট করতে থাকে। এমনকি এতে অনেক মানুষের মৃত্যু পর্যন্তও হয়ে থাকে। যতক্ষণ না দেশের অত্যাচারী সরকারকে সে পতনের মুখ দেখায়, ততক্ষণ সে আন্দোলন স্বাধীন হবার জন্য করতে থাকে।
যখন আন্দোলনের তীব্রতা অনেক অনেক বেড়ে ভয়ঙ্কর রূপ নেয়। তখন দেশের সেই অত্যাচারী নেতারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। এরপর সেই দেশ চালানোর জন্য নতুন সরকারের গঠন করা হয় এবং দেশের সেই পরাধীন মানুষেরা যাতে স্বাধীনভাবে নিজের ইচ্ছেমতো সবকিছু করতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হয়। মানুষ স্বাধীনতা পেয়ে খুশির আনন্দে ভেসে যায়। সেই প্রতিবাদ ও আন্দোলনের মাত্রা ধীরে ধীরে কমে গিয়ে দেশে নতুন রূপে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়।
তবে কোন কিছুর প্রতিবাদ কিংবা আন্দোলন কোন সময় ধ্বংসাত্মক হওয়া উচিত নয়। দেশের ধনসম্পত্তি নষ্ট করা ও আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া আন্দোলনের নামে এটা ঠিক নয়। দেশের সংখ্যালঘু মানুষরা যাতে অত্যাচারিত না হয় সেটাও দেখা উচিত। যা কিছু করা হয় সবকিছুই কিন্তু মানুষের জন্য। আর সেই মানুষের যদি মৃত্যু হয় বিনা কারণে, তাহলে সেটা একদমই উচিত নয়। যে প্রতিবাদী করা হোক না কেন, আন্দোলন করতে গিয়ে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে তার সমাধান করা উচিত। হিংসা কিংবা ধ্বংসের মাধ্যমে কোন সমাধান পাওয়া যায় না কোন সময়।
দেশকে মুক্ত অর্থাৎ স্বাধীন করতে গিয়ে কিছু মানুষের প্রাণ যায়। যদিও এটা কাম্য নয়, তবুও যাঁরা শহীদ হয় দেশ রক্ষার্থে ও সর্বসাধারণের সুবিধার্থে। তাঁদের শ্রদ্ধা ও সম্মান সব সময় করা উচিত। আর তাঁদের বলিদান আমাদের সারাজীবন মনে রাখা উচিত। এবং যাতে আমাদের এই স্বাধীন দেশ মুক্ত ও শত্রুর কবলে না পড়ে যায়। তার দিকে আমাদের প্রত্যেকটি স্বাধীন মানুষের লক্ষ্য রাখা উচিত। দেশের ভালোর জন্য ও শান্তি রক্ষার জন্য প্রত্যেককেই সচেষ্ট থাকা উচিত।
===============
Ratan Basak,
No. 2, Bankimnagar,
P. O. - Authpur,
Dist. North 24 Parganas,
West Bengal - 743128
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন