স্বাধীন ভারতবর্ষ ও তার ভবিষ্যত
অভিজিৎ দত্ত
ভারতবর্ষের স্বাধীন হওয়া ৭৭ বছর হয়ে গেল। এর মধ্যেই স্বাধীনতার ৭৫ বছর অমৃত মহোৎসব খুব ঘটা করে কেন্দ্রীয় সরকার পালন করলো। সামনে আসছে স্বাধীনতার ১০০ বছর (২০৪৭)।ভুলে গেলে চলবে না ভারতবর্ষের এই স্বাধীনতা বহু কষ্টার্জিত। বহু স্বাধীনতাসংগ্রামী ও বিপ্লবীদের আত্মত্যাগের ও প্রাণদানের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হয়েছে।ভুলে গেলে চলবে না ভারতবর্ষের অতীত ইতিহাস ও তার গৌরব গাথার কথা।ভারতবর্ষের প্রাকৃতিক সম্পদ বা মানব সম্পদ অতুলনীয়।দরকার তার উপযুক্ত ব্যবহার। প্রত্যেক দেশবাসীগণকে সর্বপ্রথমে দরকার নিজেকে উপযুক্তভাবে গড়ে তোলা ও দেশের ও দশের হিত নিয়ে ভাবা।দরকার দেশপ্রেম , জাতীয়তাবাদের ও দেশের জন্য আত্মত্যাগী ব্যক্তির। খুবই দুঃখের কথা আমাদের দেশ আজ ভোগবাদে ও অপসংস্কৃতিতে এমনভাবে মগ্ন, দেশের কথা কজনই বা ভাবে?ভারতবর্ষে আজ দুর্নীতি যেভাবে মাথাচাড়া দিয়েছে, শিক্ষিত বেকারদের সংখ্যা যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে দেশের ভবিষ্যত খুবই অন্ধকার। এত সুন্দর দেশ আমাদের ভারতবর্ষ। অথচ ন্যায়, সততা ও সদিচ্ছার অভাবে আমাদের দেশ আজ অন্ধকারে ডুবতে বসেছে।এর থেকে উদ্ধারের উপায় কী?ভারতবর্ষে সবচেয়ে বেশী দরকার উপযুক্ত মানুষ তৈরী করার।ঘুরিয়ে বললে ভালো মানুষের চাষ করতে হবে।কেননা যে কোন ব্যবস্থা তখনই ভালো হবে যখন মানুষ ভালো হবে।ভালো মানুষ তৈরী করার ও ফর্মুলা আছে।এরজন্য শিক্ষাব্যবস্হাকে ঢেলে সাজাতে হবে।দরকার উপযুক্ত শিক্ষানীতি, স্বাস্থ্যনীতি, ক্রীড়ানীতি। দরকার দেশকে ভালোবাসার। দেশের উন্নয়নের জন্য সদিচ্ছার ও দেশকে ভালো করতে সকলকে উঠে পড়ে লাগবার। নিজের দেশ ও সংস্কৃতিকে ভালো করে জানবার ও বুঝবার। দেশে সুস্থ সংস্কৃতির প্রসারে সকলকে উদ্যোগী হবার।
স্কুল জীবন থেকেই মহাপুরুষ ও স্বাধীনতাসংগ্রামীদের জীবনী অবশ্য পাঠ্য করবার। সকলের সদিচ্ছার উপরেই আমাদের দেশের উন্নতি নির্ভর করছে। নতুবা দেশ আবার অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে।পাশাপাশি নিট নিয়ে যেভাবে দুর্নীতি ধরা পড়ছে বা বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার দুর্নীতি হচ্ছে তাতে ভবিষ্যত ভারতবর্ষের কী হবে তা নিয়ে একটা আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।একারণেই বিপ্লবী ও যোগী শ্রী অরবিন্দ বলেছিলেন ভারতবর্ষের স্বাধীনতার চেয়েও বড় আমাদের প্রকৃত মানুষ হওয়ার। মহাপুরুষদের কথা আমরা কী মানি?না হলে দেশের অবস্হাএত খারাপ হচ্ছে কেন?তবুও সব শেষ হয়ে যায় নি।এখনও আশার আলো রয়েছে।এরজন্য প্রথমেই সর্বজনীন শিক্ষার প্রসার ও শিক্ষার গুণগত মানের উপর জোর দিতে হবে।বিদ্যালয়ে মূল্যবোধের শিক্ষার উপর জোর দিতে হবে।পাশ-ফেল ও শাসন আবার ফিরিয়ে আনতে হবে।বিজ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষা ও যুগপোযোগী নতুন, নতুন পাঠ্যক্রমের উপর জোর দিতে হবে।সরকারকে জাতীয় আয়ের একটা বড় অংশ শিক্ষার জন্য বরাদ্দ করতে হবে।আসলে সরকার যদি শিক্ষার ব্যাপারে আন্তরিক হয় তাহলেই সোনার ভারত গড়া সম্ভব অনথ্যায় সবই বিফলে যাবে।
==============
অভিজিৎ দত্ত (শিক্ষক ও লেখক)
জিয়াগঞ্জ, মুর্শিদাবাদ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন