।। সঙ্গীত পরিচালক সত্যজিৎ রায় ।।
।। মিঠুন মুখার্জী ।।
বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী সত্যজিৎ রায় আমাদের কাছে এক বিস্ময়কর পুরুষ। চলচ্চিত্রের প্রয়োজনে চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত সবকিছুর সঙ্গেই তাঁর গভীর যোগ ছিল। চলচ্চিত্র পরিচালনা থেকে শুরু করে সাহিত্যসৃষ্টি, চিত্রনাট্য লেখা, ছবি আঁকা, সংগীত সৃষ্টি ও পরিচালনার মতো বহু কাজ করেছেন তিনি। ক্যামেরা ধরা থেকে শুরু করে সংগীতের সুর দেওয়ার মতো কাজও করেছেন তিনি। চলচ্চিত্র তৈরি করতে যা যা প্রয়োজন হয় তার বেশিরভাগ বিষয় সম্পর্কে তাঁর জ্ঞান ছিল সমুদ্রের ন্যায় গভীর, আকাশের ন্যায় ব্যাপ্ত।
সত্যজিৎ রায় বাংলা চলচ্চিত্রে রবিসম। রবি যেমন তার কিরণে সমগ্র পৃথিবীকে আলোকিত করে, তেমনি সত্যজিতের আগমনে বাংলা চলচ্চিত্র আরো আলোকিত ও সমৃদ্ধশালী হয়েছিল। এক কথায় তিনি ছিলেন বাঙালির শিল্প সংস্কৃতি বোধের মানদণ্ড। চলচ্চিত্র পরিচালনার পাশাপাশি তিনি সব চাইতে যে বিষয়গুলোর উপর বেশি সময় দিয়েছেন তার মধ্যে অন্যতম হলো সংগীত সৃষ্টি,সুরদেওয়া ও সঙ্গীত পরিচালনা করা। ছবিতে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ব্যবহার করার ক্ষেত্রে তিনি যে অভিনব ঘরানার প্রচলন ঘটায় তা ভারতীয় চিত্র পরিচালনার জগতে এক প্রকার আলোড়ন ফেলে দেয়। চলচ্চিত্রের বিষয় বুঝে প্রয়োজন অনুযায়ী তিনি গান লিখতেন ও সুর দিতেন। ফলে চলচ্চিত্রে সেই গানের গুরুত্বটা আরো বেড়ে যেতো। তিনি তাঁর প্রথম দিককার কয়েকটা সিনেমা ছাড়া বেশির ভাগ চলচ্চিত্রে ও তথ্যচিত্রে সঙ্গীত পরিচালনার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। সত্যজিৎ রায় ঊনত্রিশটি কাহিনী চিত্রের মধ্যে তেইশটির সংগীত পরিচালনা করেছিলেন। 'পথের পাঁচালী', 'অপরাজিত', 'অপুর সংসার', 'জলসাঘর', 'দেবী' ও 'পরশ পাথর' সিনেমা ছাড়া সবকটি কাহিনীচিত্রে তিনিই সংগীত পরিচালনা করেছেন। তাছাড়া বেশ কিছু সিনেমার প্রয়োজনে তিনি সঙ্গীত সৃষ্টি ও সুর দেওয়ার কাজও করেছেন। 'রবীন্দ্রনাথ' তথ্যচিত্র বাদে চারটি তথ্যচিত্রে ও দুটি দূরদর্শন চিত্রের সংগীত পরিচালনাও করেছেন তিনি। তাঁর চলচ্চিত্রের গান বাঙালির হৃদয়কে জয় করে নিয়েছে। অতিরিক্ত যন্ত্রের ঝনঝনা তিনি পছন্দ করতেন না। পরিস্থিতির সঙ্গে যায় এমন চিন্তা থেকেই তিনি গানে বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করতেন। তাঁর চলচ্চিত্রের গানগুলি দর্শকের এতই হৃদয় ছুঁয়ে গেছে--- যা কোনদিন ভোলার নয়।
সঙ্গীত পরিচালনার পাশাপাশি তিনি সংগীত রচনা ও সুর দেওয়ার কাজও করেছেন। সত্যজিৎ রায়ের লেখা গান সব মিলিয়ে ৩৫ টি। অপ্রকাশিত কিছু থাকলে তা আমার জানা নেই। 'গুপী গাইন বাঘা বাইন' সিনেমার জন্য নয়টি, 'হীরক রাজার দেশে' সিনেমার জন্য বারোটি ও 'গুপি বাঘা ফিরে এলো' চলচ্চিত্রের জন্য এগারটি গান লিখেছেন তিনি। এছাড়া তাঁর লেখা সংগীতের মধ্যে দুটি লুকিয়ে রয়েছে 'দেবী' চলচ্চিত্রে। 'মা মা বলে আর ডাকবো না' এবং 'এবার তোরে চিনেছি মা' --- অবিকল রামপ্রসাদী শ্যামা সংগীত-এর আদলে সৃষ্টি করা। শুনে সহজে বিশ্বাস করা যায় না যে এগুলি রামপ্রসাদের লেখা নয়। এছাড়া 'চিড়িয়াখানা' চলচ্চিত্রে আরো একটি সংগীত আছে তাঁর লেখা--- 'ভালোবাসার তুমি কি জানো?' ১৯৫০-এর দশকের বাংলা ছায়াছবির গানের আদলে বানানো।
'পথের পাঁচালী', 'অপরাজিত', 'অপুর সংসার', 'পরশপাথর' 'দেবী', ও 'জলসাঘর' সিনেমার সংগীত পরিচালনার দায়িত্ব তিনি বন্ধুবর পন্ডিত রবি শংকর, আলী আকবর খান ও বিলায়েত খাঁ সাহেবের উপর দিয়েছিলেন। এই তিনজনকে সংগীত পরিচালক হিসেবে নির্বাচন তাঁর সংগীত মানসিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তাঁদের নির্বাচন করলেও সঙ্গীত পরিচালনার ক্ষেত্রে তিনি তাঁর অসাধারণ বোদ্ধার দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে সহযোগিতা করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তী সিনেমাগুলিতে তিনি সংগীত পরিচালনা করে তাঁর বহুমুখী প্রতিভার পরিচয় দিয়েছিলেন। যে দিকেই তিনি এগিয়েছেন, সেখানেই তিনি সফল। এককথায় সত্যজিৎ রায় জিনিয়াস।
সঙ্গীত পরিচালকের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে যেমন সংগীত রচনা, সুর দেওয়ার কাজ করেছেন, তেমনি সে গানগুলি গাওয়ানোর জন্য অনেক খুঁজে খুঁজে অনুপ ঘোষাল, সাহেব চট্টোপাধ্যায়, রবি ঘোষ, বেগম আখতার ও রেবা মুহুরীর মতো সংগীতশিল্পীকে ব্যবহার করেছেন। সম্ভাবনাময় মানুষ দেখেই তিনি চিনতে পারতেন। এ তাঁর অসাধারণ মানুষ চেনার ক্ষমতা।
'পথের পাঁচালী' সিনেমার সংগীত পরিচালনার দায়িত্ব পন্ডিত রবিশংকরের উপর দিয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু ইন্দিরা ঠাকুরের মুখে "হরি দিন তো গেল, সন্ধ্যা হলো, পার করো আমারে"-- খালি গলায় বৃদ্ধার কন্ঠে এই গান ব্যবহার এবং ইন্দিরা ঠাকুরণের মৃত্যু পর্যন্ত সেই সুরকে যন্ত্রসংগীতে ব্যবহার করা--- এতো সত্যজিতের সৃষ্টি ও আবিষ্কার। হরিহর বাড়ি ফিরে দুর্গার কথা জিজ্ঞাসা করলে শাড়ি দাঁতে কামড়ে সর্বজয়ার সেই বুকফাটা কান্নার শব্দ আমরা শুনতে পাই না। কান্নাকে ছাপিয়ে সানাইয়ের শব্দ বেজে ওঠে। কন্যাকে হারানোর যন্ত্রণার অনুভূতি সানাইয়ের শব্দে বিশেষ মাত্রা নেয়।এ সব সত্যজিৎ রায়ের সাংগীতিক বোধের পরিচায়ক।
১৯৬১ সালে 'তিন কন্যা' সিনেমার মধ্য দিয়ে তিনি প্রথম সংগীত পরিচালনার দায়িত্ব নেন। এরপর আর কারকে দিয়ে তিনি চলচ্চিত্রে সঙ্গীত পরিচালনা করান নি। তিনি বুঝেছিলেন শুধু নামি সঙ্গীত পরিচালক নিলেই হয় না, তাকে ঠিকমতো ব্যবহার করতে জানতে হয়। এই চেতনা তাঁর মতো আন্তর্জাতিক মানের সংগীত পরিচালককের ছিল। 'সমাপ্তি' চলচ্চিত্রে নববধূর সাজে বাসর ছেড়ে রাতের অন্ধকারে মৃন্ময়ী ছুটে আসে। তার যে আবহসংগীত তা তিনি পাশ্চাত্য আঙ্গিকে সৃষ্টি করেছিলেন। 'কাঞ্চনজঙ্ঘা'য় সংগীতের ব্যবহার খুব কম করে প্রকৃতির শব্দ, জন্তু-জানোয়ারের পায়ের শব্দ, গলায় বাঁধা ঘন্টার শব্দ, মিলিটারি ব্যান্ডের ধ্বনি লক্ষ করা যায়। এগুলোই সংগীতের জায়গা দখল করে নিয়েছে। 'চারুলতা' চলচ্চিত্রের বিভিন্ন অন্তর্দ্বন্দ্বে, উচ্ছ্বাসে, একাকিত্বে সত্যজিৎ যে সংগীতের সেন্স কাজে লাগিয়েছেন তা এককথায় তুলনাহীন। 'চারুলতা'র টাইটেল মিউজিকও অসাধারণ।
সত্যজিৎ রায় বাস্তব পরিস্থিতি বুঝে তাঁর চলচ্চিত্রে সংগীত ব্যবহার করেছেন। 'প্রতিদ্বন্দ্বী', 'সীমাবদ্ধ', 'জন অরণ্য', 'অরণ্যের দিনরাত্রি', 'সদগতি', 'পিকু' প্রভৃতি ছবিতে প্রয়োজন অতিরিক্ত সঙ্গীত তিনি ব্যবহার করেননি। 'অরণ্যের দিনরাত্রি' সিনেমায় পাহাড়ী সান্যাল-এর লিপে ব্যবহার করেছেন অতুলপ্রসাদী সংগীত 'কে ডাকে আমারে'। নিজের লেখা গান 'ভালোবাসার তুমি কি জানো?' 'চিড়িয়াখানা' সিনেমায় ব্যবহার করেছেন।
'গুপিগাইন বাঘাবাইন', 'হীরক রাজার দেশে', 'গুপী বাঘা ফিরে এলো' ছবিগুলির প্রতিটি গান, গানের সিকোয়েন্স প্রমাণ করে তিনি সংগীত মুখর ব্যক্তিত্ব। 'পায়ে পড়ি বাঘ মামা', 'মহারাজা তোমারে সেলাম', 'ও মন্ত্রী মশাই' ও 'ওরে বাবা দেখো চেয়ে' গানগুলিতে যথাক্রমে কর্নাটকী স্টাইল, লোকসঙ্গীতের ছাপ ও পাশ্চাত্য সংগীতের ছোঁয়া লক্ষ করা যায়। 'গণশত্রু', 'শাখা-প্রশাখা', 'আগন্তুক' সিনেমাতে ব্যবহার করেছেন লোকসুর, রবীন্দ্র সংগীত ও পশ্চাত্য সুর।
বেগম আখতারকে দিয়ে 'জলসাঘর'-এর 'ভোর এ ভোর এ আখিয়া' ও 'জয় বাবা ফেলুনাথ' সিনেমায় রেবা মুহুরীকে দিয়ে 'মাহি লাগি লাগানা গুরু' রাগাশ্রয়ী ও রাগাঙ্গিকের গান দুটি গাইয়েছিলেন। আবার নিজস্ব লেখা দুটি শ্যামাসংগীত ব্যবহার করেছেন 'দেবী' সিনেমার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে। আসলে সত্যজিৎ রায় সংগীতের পরিমণ্ডলে বড় হয়েছিলেন। তাঁদের বাড়িতে বড় বড় সংগীতজ্ঞদের নিয়ে সংগীতের আসর বসতো। তাই ছোট থেকেই সঙ্গীতের প্রতি অনুরাগী ছিলেন তিনি।
সত্যজিৎ রায় চলচ্চিত্রের প্রয়োজনে বিশ্বের অনেক দেশেই গেছেন। সেখানকার সংগীতের বিভিন্ন খুঁটিনাটি অভিজ্ঞতা তিনি তার চলচ্চিত্রের সঙ্গীত গুলিতে তুলে ধরেছেন। তবে ভারতীয় সংগীত ও সুজলা সুফলা মাতৃভূমির বিষয়কেই তিনি তাঁর চলচ্চিত্রে ও চলচ্চিত্রের গানে বেশি তুলে ধরেছেন। এ জন্য তিনি ভারতীয় চলচ্চিত্রে ও সঙ্গীতে 'মহারাজা'।
বাংলা সাহিত্যে যেমন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বাংলা চলচ্চিত্রে ঠিক তেমনি সত্যজিৎ রায়। দুজনই বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। বাঙালির হৃদয়ে দুজনই উজ্জ্বল জ্যোতিষ্কের ন্যায় বিরাজমান। যদিও রবীন্দ্রনাথের সান্নিধ্য সত্যজিৎ রায় খুব কম পেয়েছিলেন, তবুও তিনি যে তাঁর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন--- সে কথা বলাই যায়। রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য ও সংগীত সত্যজিৎকে খুবই আকৃষ্ট করেছিল। সে কারণে তাঁর কিছু কিছু সিনেমায় রবীন্দ্রসঙ্গীতের প্রয়োগ লক্ষ করা যায়। নিজে খুব ভালো পিয়ানো বাজাতে পারতেন। সেখানে তাঁর সৃষ্ট গানের সুরারোপ ও রবীন্দ্র সংগীত থেকে শুরু করে বিভিন্ন গান গাইতেন তিনি।
এখনকার সময়ে সংগীত পরিচালনা ও সত্যজিৎ রায়ের সময়ে সঙ্গীত পরিচালনার মধ্যে একটা বিস্তর পার্থক্য আছে। যন্ত্রের ও প্রযুক্তির মাধ্যমে কত বেসুরা শিল্পীকেও বর্তমানে সুযোগ করে দেওয়া হয়। তাছাড়া সংগীত পরিচালনা ও সৃষ্টির মধ্যে কত রকম ভুলভ্রান্তি থাকে। যা সত্যজিৎ রায়ের সময় তেমন লক্ষ করা যায় না। তাঁরা সংগীত নিয়ে একপ্রকার গবেষণা করেছিলেন। একটা গান কিভাবে মানুষের কাছে অর্থপূর্ণতা ও গ্রহণযোগ্যতা পাবে---সেদিকে নজর দিয়ে চলচ্চিত্রে সঙ্গীত ব্যবহার করতেন তাঁরা। আর এখন প্রতিদিনই অসংখ্য গানের জন্ম হচ্ছে।
নিজের পরিচালিত চলচ্চিত্রে সঙ্গীত পরিচালনা করা ছাড়াও সত্যজিৎ রায় অন্যের চলচ্চিত্রেও সংগীত পরিচালনা করেছেন। তাঁর মতো বোদ্ধা্র দৃষ্টিভঙ্গি কে না তার সৃষ্টিতে ব্যবহার করতে চান? নিত্যানন্দ দত্তের 'বাক্স বদল', জেমস আইভরির 'শেক্সপিয়ারওয়ালা' ও সন্দীপ রায়ের 'ফটিকচাঁদ' তার মধ্যে অন্যতম।
সত্যজিৎ রায় তাঁর সঙ্গীত পরিচালনায় সবচেয়ে বেশি গান গাইয়েছেন সংগীতশিল্পী অনুপ ঘোষালকে দিয়ে। তাঁর মনে হয়েছিল তিনি যে টাইপ চলচ্চিত্র তৈরি করেন তাতে অনুপ ঘোষালের গলা খুবই ভালো লাগবে শ্রোতা-দর্শক বন্ধুদের। 'এক যে ছিল রাজা', 'ওরে বাঘা রে', 'ভূতের রাজা দিল বর', 'মহারাজা তোমারে সেলাম', 'আর বিলম্ব নয়', 'মোরা দুজন রাজার জামাই', 'আহা কি আনন্দ' প্রভৃতি গানগুলি রবি ঘোষকে সঙ্গে নিয়ে অসাধারণ গেয়েছেন অনুপ ঘোষাল। এই সকল গান আজও বাঙালির খুব প্রিয়। বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী অমর পালকে দিয়ে সত্যজিৎ রায় গাইয়েছিলেন 'কতই রঙ্গ দেখি দুনিয়ায়' গানটি। তাঁর সকল গানই কালজয়ী হয়েছিল। বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী অনুপ ঘোষাল সঙ্গীতজ্ঞ সত্যজিৎ রায় সম্পর্কে বলেছেন---- "চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায় ঠিক যতটা বড় মাপের মানুষ, সঙ্গীত পরিচালক সত্যজিৎ রায় তারচেয়ে খুব একটা কম নয়। সত্যি কথা বলতে তখন সেভাবে মিউজিক অ্যারেঞ্জার ব্যাপারটা এতটা ছিল না। মিউজিক ডিরেক্টরই সিনেমায় পুরো মিউজিকটা করতেন। সত্যজিৎ রায়কে দেখেছি কতটা নিপুণভাবে 'গুপী গাইন বাঘা বাইন', 'হীরক রাজার দেশে', 'গুপী বাঘা ফিরে এলো'-- এই সব ছবিতে কি দারুণভাবে সম্পূর্ণ মিউজিকটাই নিজে করতেন। আসলে যে কোন বিষয়তেই ছিল ওনার অকুণ্ঠ অনুসন্ধিৎসা আর অবাধ বিচার।" ('সত্যজিতের ডায়েরি', 'আজকের শ্রী' পত্রিকা, পৃ-১৭,মে-জুন সংখ্যা, ২০১৫)
সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্রের সাথে সাথে গানগুলিও দেশে-বিদেশে বিশেষ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। আজ এত বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেছে তবু তাঁর সংগীত পরিচালনা, সঙ্গীত রচনা ও সুর দেওয়া গানগুলির কদর একটুও কমেনি। আজও প্রতিটি বাঙালির মুখে মুখে তাঁর গানগুলি গীত হয়। বাঙালি আজও তাঁর এই কালজয়ী সৃষ্টিকে এতোটুকু ভোলেনি। আসলে স্রষ্টা চলে যায়, কিন্তু তাঁর সৃষ্টি অমর হয়ে থেকে যায়। আর কিছু কিছু সৃষ্টি তো যুগের গণ্ডিকেও বাঁধা মানে না। সত্যজিৎ রায়ের মিউজিক এমনই এক কালজয়ী সৃষ্টি। তাই তাঁর প্রতি গভীর সম্মান জানাতে তাঁর গানের লাইন ধার করে বলতে হয়, "মহারাজা তোমারে সেলাম।"
তথ্যসূত্র ।।
১) সত্যজিৎ রায় : তথ্যপঞ্জি , দেবাশিস মুখোপাধ্যায়, সৃষ্টি প্রকাশন ।
২) সত্যজিৎ ১০০ , দেশ পত্রিকা , সম্পাদক : সুমন সেনগুপ্ত, ২ মে ২০২১ ।
৩) সত্যজিতের ডায়রি , আজকের শ্রী পত্রিকা , মে-জুন সংখ্যা ২০১৫ ।
৪) সত্যজিৎ ১০০ , উজ্জ্বল চক্রবর্তী, সিমিকা পাবলিশার্স।
===============
মিঠুন মুখার্জী
C/O-- গোবিন্দ মুখার্জী
গ্ৰাম : নবজীবন পল্লী
পোস্ট+থানা -- গোবরডাঙা
জেলা -- উত্তর ২৪ পরগণা
পিন-- 743252
মোবাইল: 9614555989
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন