"তোদের রক্তে আমার স্নান"
গৌতম মির্ধা
আমি হতে চাই না আর অমুক-তমুকশ্রী কিম্বা সুশ্রী,ক্ষতি নেই তাতে যদি আমি হই তোমাদের চোখে
জীবজগতের সবচাইতে খারাপ চূড়ান্ত বিশ্রী,
তবু আমি বাঁচতে চাই। হ্যাঁ, শুধু বাঁচতে,
আমি নিজের হাতে সুনিশ্চিত করতে চাই আমার
নিরাপত্তা,স্বাধীনতা নিয়ে আমার বাঁচার অধিকার
তাই তুলে নিতে চাই নিজের হাতে এক অত্যাধুনিক স্বয়ংক্রিয় এক ডাবল ব্যারেল রিভলবার ।
একটি আগ্নেয় অস্ত্র যা দিতে পারে তা আর দিতে পারবে না অন্য কেউ,
না এই দেশ, না কোন রাজ্য অথবা ঘুনে ধরা পঙ্গু এ গোটা সমাজ ।
বেহায়ার দল তোরা নাটকের ছলে পূজার অর্ঘ্য সাজিয়েছিস,বসিয়েছিস আমাকে ওই ঠাকুর দালানে,
তারপর ঈশ্বর বানিয়ে আমার সামনে রেখেছিস গঙ্গাজল তুলসী আর ফল মিষ্টির ডালা
মা - মা বলে গলায় ঝুলিয়েছিস ফুল জবা বেলপাতার একশো একটি মালা,
আমায় ভোলাতে, তুষ্ট করতে মুখে আউড়েছিস দাঁত ভাঙা অজস্র সব মন্ত্র
ওসব আমি আর বিশ্বাস করিনা, আসলে ও সবই ছিল সাজানো ডাহা মিথ্যে শুধুই ষড়যন্ত্র,
তোদের মতলবে ছিল চূড়ান্ত অসভ্যতা আর ওই নৈবেদ্যটুকু সাজানো ছিল অভিনয়,লোক দেখানো ভান
আমার উপর বর্বরতা নামিয়ে আনার আগে গোছানো এক চিত্রনাট্যের আয়োজন ,
তারপর গোটা দুনিয়া দেখেছে আমার এ দেহমনে চালিয়েছিস তোরা কত অকথ্য, হিংস্র অত্যাচার
যুগ যুগ ধরে এভাবে আমাকে ছিন্নভিন্ন করেছিস চালিয়েছিস অবর্ণনীয় সন্ত্রাস,
ওরে নরখাদকের দল, তাতেও কেন যে মিটল না তোদের মনের আশ !
শেষ পর্যন্ত আমাকে খুন হতে হয় একবার নয়, দুই বার নয় বারবার
আমি বিশ্বাস করিনা মন্ত্রী সান্ত্রী পুলিস প্রশাসন, আর সমাজের ওই কুম্ভীরাশ্রু বর্ষন,
আমি বিশ্বাস করিনা মোমবাতি মিছিল আর কোন প্রতিবাদ সভা,
দিনের শেষে সবকিছু তো বৃথা থেকে যায়, হয়ে রয় সব চির কালাবোবা।
বলতে পারিস কে দিয়েছে তোদের আমার প্রান কাড়ার এতবড় অধিকার?
আমি কত আর সইব এ বর্বরতা অত্যাচার আর মৃত্যুর অপমান?
ওরে নরপশুর দল আমি আর এক বিন্দুও সহ্য করব না, ছাড়ব না তোদের আর
তোরা কি ভেবেছিস আমার চোখের জল আর মৃত্যুর সাথে শেষ হয়ে গেছে আমার সকল শক্তি,
তোদের উচিৎ শিক্ষা দেবার সকল ক্ষমতাটুকু ?
না, শুনে রাখ ওরে পাপিষ্ট শয়তান !
এবার আমি দেখতে চাই তোরা আর কত বাড়তে পারিস, আরও বার
আমার হাতে সুযোগ এসেছে, এবার শুধু বদলা নেওয়ার পালা
তোদের ধ্বংসে মেটাবো আমার এতকালের পুঞ্জীভূত মনের সকল জ্বালা,
আমি বেঁচে থেকেই তোদের সবক শেখাবো, সর্বশক্তিতে তুলে নেব হাতে এক আধুনিক মারনাস্ত্র
এক ডাবল ব্যারেল রিভলবার,
তাই দিয়ে হায়নার লোলুপ চোখদুটো আমি তুলে নেব
গুঁড়িয়ে দেবো তোদের মাথা, সব করে দেবো ছারখার
আমার সাথে আর নেই কারো দরকার
আমি নিজের হাতেই সুনিশ্চিত করব আমার স্বাধীনতা,
মূল্যবান এ জীবন,
তোদের পাপের শিক্ষা দিতে আমি প্রস্তুত, আমি নিজেই হব তোদের ত্রাস, তোদের রক্তে করবো আমার স্নান।
আমার গর্ভের পুত্রসন্তানও যদি কোনদিন কোথাও অসভ্যতা করে, করে নারীর অপমান ,
আমি তাকেও ছাড়ব না, ছিনিয়ে নেব অবলীলায় এক লহমায়, তারও সাধের প্রাণ ।
===========
গৌতম মির্ধা
দেবারতি অ্যাপার্টমেন্ট
রবীন্দ্র পল্লী, কেষ্টপুর, কলকাতা - 700101
বি দ্রঃ গত ৯ই আগস্ট, ২০২৪ শুক্রবার কলকাতা মহানগরীর এক নামকরা সরকারি হাসপাতালে দিবারাত্র সজাগ থেকে সাধারন মানুষের মূল্যবান জীবন বাঁচিয়ে চলা এক বাঘিনী, প্রহরী চিকিৎসকের নৃশংস ভাবে প্রানটা চলে গেল কিছু নির্মম বর্বর নরখাদকদের হাতে। এসবের প্রতিবাদের কোন ভাষা অভিধানে নেই, নেই আমাদের মুখ লুকোনোর কোন জায়গা। সারা বিশ্বের কাছে হেট হয়ে গেল শুধু এ শহর নয় গোটা মানব সভ্যতার মাথা। ওই বাঘিনী চিকিৎসকের উদ্দেশ্যে অন্তরের অন্তঃস্থল সকল শ্রদ্ধা সন্মান জানিয়ে আমার এই লেখা ।
উনি যেখানেই থাকুন ভাল থাকুন।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন