google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re পৌরাণিক ভারত কথা ।। দীপক পাল - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

সোমবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৪

পৌরাণিক ভারত কথা ।। দীপক পাল


পৌরাণিক ভারত কথা 

(পর্ব ১)

দীপক পাল 

 

 রাম, লক্ষ্মণ, ভরত, শত্রুঘ্ন, এদের প্রত্যেকেরই দুটি করে পুত্র ছিল । মহাকোশল রাজ্য এই ৮ জনের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয় l লবের রাজ্য উত্তর কোশল, রাজধানী শ্রাবস্তী । কোশল বা দক্ষিণ কোশল হলো কুশের রাজ্য, রাজধানী কুশবতী  বা কুশস্থলী । ভরতের জ্যেষ্ঠ পুত্র তক্ষ, তক্ষশীলায় গেলেন । কনিষ্ঠ পুত্র পুষ্কর গেলেন পুষ্পাবর্ত বা পুষ্করাবতীতে। লক্ষণের জ্যেষ্ঠ পুত্র সূরসেন যান বিদিশায়। ও কনিষ্ঠ পুত্র সুবাহু

মধুরায় রাজধানী স্থাপন করলেন ।


              শ্রাবস্তী অযোধ্যার উত্তর পশ্চিমে, কুশবতী  নগরী ছিল বিন্ধাচলের  পাদদেশে। বিষ্ণু পুরাণে পাওয়া যায় যে যুবানেশ্বর পুত্র শ্রাবস্ত শ্রাবস্তী নামে পুরী নির্মাণ করেছিলেন। আর আনরতের পুত্র রেবত বাস করেন

কুশস্থালী পুরীতে। শরযাতী  পিতামহ ছিলেন তার। পূন্যজন নামে রক্ষাসরা এই নগর ধ্বংস করে। পরবর্তীকালে কুশাস্থালীর নাম হয়েছিল দ্বারাকাপুরী। রেবতের পৌত্রী রেবতীর সঙ্গে বিবাহ হয়েছিল কৃষ্ণের বড় ভাই বলরামের। রামায়ণে কুশস্থলীর  নাম নেই, আছে  কুশাবতী। এই শহর মধ্যভরতের চান্দা নাগপুর বা অন্ধ্রের  অমরাবতী। অনেকে বলেন কুশ অযোধ্যাতেই রাজত্ব করেছেন। ভরতের দুই পুত্র তক্ষ ও পুষ্কর দেশটিকে দুই ভাগে ভাগ করে নিয়েছিলেন। ভরতের মাতুল কেকয়েরাজ যুধাজিৎ রামচন্দ্রকে গন্ধর্ব  দেশ জয় করার কথা  বলেছিলেন। সিন্ধুর দুই তীরে অবস্থিত গন্ধর্ব দেশ গান্ধার বা কান্দাহার পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। রামচন্দ্র ভরতকে পাঠিয়ে এই রাজ্য জয় করেছিলেন আর ভরতের দুই পুত্র এই রাজ্যটিকে ভাগ করে নেন। তক্ষ তক্ষশীলায় ও পুষ্কর পুষ্করাবর্তে রাজ্য স্থাপন করেছিলেন। তক্ষশীলা এখন পাঞ্জাবে আর পুস্কারাবর্ত বা পলাশপুর বা পেশোয়ার  কিনা সেটা গবেষণার বিষয়।

              লক্ষ্মণের পুত্র অঙ্গদের রাজ্য হয়েছিল কারুপদ দেশ, রাজধানী স্থাপন করেছিলেন তিনি অঙ্গদীয়ায।

চন্দ্রকেতু মল্ল দেশের রাজা হয়েছিলেন, রাজধানীর নাম চন্দ্রকান্ত বা চন্দদ্যুতি। শত্রুঘ্নর পুত্র সূরসেনের রাজধানী বিদিশা। তার অপর পুত্র সুবহুর রাজধানী মধুরা বর্তমানের মথুরা না মাধুরা সেটা জানবার উপায় নেই। দাক্ষিণাত্য ও দ্রাবিড় দেশও দশরথের সাম্রাজ্যের অন্তর্গত ছিল। সিন্ধু, সৌরাষ্ট্র, অঙ্গ, বঙ্গ, মৎস ও মগধ রাজ্য ও কোশল এর অধীনে ছিল অথবা মিত্রতা ছিল। অশ্বমেধ যজ্ঞ করে রাজা দশরথ ও রামচন্দ্র সমগ্র ভারতে তাদের আধিপত্য বিস্তার করেছিলেন।




                                                         (   ২  )


       

                                         । কৃষ্ণের উত্তর পুরুষদের রাজত্ব ।



              কৃষ্ণ ও রুক্মিনীর পুত্র ছিল প্রদ্যুম্ন। তার পুত্র ছিল অনিরুদ্ধ। অনিরুদ্ধ অসুর রাজ বানের কন্যা ঊষাকে হরণ করে বিবাহ করেছিলেন। এই অনিরুদ্ধ এর বড় ছেলের নাম সানু ও ছোট ছেলের নাম ছিল বজ্র।

এর ছেলের নাম প্রতিরথ ও সুচারু হলো নাতি। অর্থাৎ বজ্র ছিলেন শ্রীকৃষ্ণের প্রপৌত্র। কিন্তু ইতিহাসবিদ কর্নেল টড তার রাজস্থান বইতে বলেছেন যে দ্বারকায় যখন যদু বংশ ধ্বংস হয় তখন কৃষ্ণের পুত্র বজ্র ছিলন মথুরায়।

মথুরা থেকে বেরিয়ে দ্বারকার পথে এই যদু বংশ ধ্বংসের খবর পেয়েই বজ্রের মৃত্যু হয়। তার এক ছেলে নব মথুরা ফিরে গিয়ে রাজা হয়ে বসলেন ও আর এক ছেলে ক্ষীর দ্বারকায় চলে গেলেন। নব মথুরায় রাজত্ব করতে পারলেন না। তিনি এসে রাজ্য স্থাপন করলেন মরুস্থালীতে (জয়সাল্মীর) । তারই পুত্র পৃত্থিবাহু পেয়েছিলেন কৃষ্ণের রাজছত্র। তাই এই রাজছত্র ভট্টি রাজপুতদের অতি গৌরবের বস্তু। এটি আছে সম্ভবত জয়সালমিরে মহারাওলের প্যালেসে।

               

             টডের ইতিহাসে পাওয়া যায় পৃত্থিবাহুর পরে চতুর্থ পুরুষ হলেন গজ। গজ খোরাসানের রাজাকে দুবার পরাজিত করেছিলেন। এই সময় তার দূত এসে খবর দিল যে খোরাসানের রাজা রোমের রাজার সঙ্গে এক জোট হয়ে আক্রমণ করতে আসছে। হে যদুপতি, এখন তুমি নিজের রাজ্য সামলাও। কিন্তু খোরাসানের রাজা অজীর্ণ রোগে পথে মারা গেলেন আর সিকান্দার শাহ একা যুদ্ধ করে হেরে গেলেন। আর যদুপতি গজ বসলেন গজনীর সিংহাসনে। কাশ্মীর রাজাকে পরাস্ত করে বিবাহ করলেন রাজকন্যাকে। তাদের পুত্র শালিবাহন।

              শালিবাহনের বয়স যখন মাত্র ১২ তখন খোরাসানের যবনেরা আবার এসে তার রাজ্য আক্রমণ

করলো। রাজা গজ শালিবাহনকে পূর্ব দেশে হিন্দু রাজ্যে পাঠিয়ে দিলেন। গজনীর ভার এক কাকার হাতে দিয়ে

নিজে গেলেন যুদ্ধ করতে। যুদ্ধে তার মৃত্যু হলো। শত্রুপক্ষের আরও এক মাস সময় লেগেছিল গাজিনী অধিকার করতে। সেই যুদ্ধে ৯ হাজার যাদব সেনার মৃত্যু হয়েছিল। 


              শালিবাহনের বড় নাতির নাম ভট্টি আর ভূপতি মেজ নাতি। শালিবাহনেরা মারুস্থালীতে রাজত্ব করতে লাগলেন। ভট্টির বংশধরেরা এখানে যদু ভট্টি নামে পরিচিত। ওদিকে ভূপতির পুত্র চাকিত আবার গজনীতে

আধিপত্য বিস্তার করেন। কিন্তু কিছুদিন পরে যাবনেরা গজনীর দখল নেয়। কিন্তু রাজ্যের লোভে তিনি ধর্ম ত্যাগ করতে বাধ্য হন।

 

====================

(পুরাণ থেকে সংগৃহীত )




—----------

Dipak Kumar Paul,

DTC Southern Heights,

Block-8, Flat- 1B,

Diamond Harbour Road, 

Kolkata - 700104.








              


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন